সকাল হলেই বাড়ছে ভাড়া রেলের

আপডেট: ২০১৬-০২-২০ ০০:১৩:৩৫


Jamuna_Express৩ বছরের মাথায় শনিবার থেকে আবারো বাড়ছে রেলের ভাড়া। রুটভেদে ভাড়া বাড়ছে ৭-৯ শতাংশ পর্যন্ত। পাশাপাশি বাড়ছে ট্রেনে ভ্রমণের ন্যূনতম ভাড়াও। বিষয়টি নিশ্চিত করে রেলসচিব ফিরোজ সালাহউদ্দিন জানিয়েছে, ২০ ফেব্রুয়ারি থেকেই নতুন ভাড়া কার্যকর হচ্ছে। যাত্রীদের সুবিধার্থে বিভিন্ন স্টেশনে নতুন ভাড়ার তালিকাও টানিয়ে দেয়া হয়েছে। গড়ে সাড়ে ৭ শতাংশ। কোথাও আবার বাড়ছে না। কোথাও আবার কম বাড়ছে বলে তিনি জানান। সর্ব শেষ ২০১২ সালের অক্টোবর মাসে বাড়নো হয়েছিল রেলের ভাড়া।

সূত্র জানায়, বর্ধিত ভাড়ার হার অনুযায়ী ঢাকা-সিলেট রুটে শোভন শ্রেণির ভাড়া হবে ২৬৫ টাকা, শোভন চেয়ার ৩২০, এসি চেয়ার ৬১০, এসি সিটে ৭৩৬ ও এসি বার্থে ১ হাজার ৯৯ টাকা। বর্তমানে এ ভাড়া নেয়া হচ্ছে শোভন ২৯৫ টাকা এসি চেয়ার ৫৬৪ টাকা।

এছাড়া ঢাকা-চট্টগ্রাম রুটে শোভন শ্রেণির ভাড়া ২৬৫ থেকে বেড়ে হবে ২৮৫ টাকা। শোভন চেয়ারে ভাড়া ৩২০ টাকার স্থলে হবে ৩৪৫ টাকা, এসি চেয়ার ৬১০ টাকার স্থলে ৬৫৬ টাকা, এসি সিট ৭৩১ টাকার স্থলে ৭৮৮ ও এসি বার্থে ১ হাজার ৯৩ টাকার স্থলে ১ হাজার ১৮৯ টাকা।

ঢাকা-খুলনা রুটে শোভন শ্রেণির ভাড়া ৩৯০ থেকে বেড়ে হবে ৪২০ টাকা, শোভন চেয়ার ৪৬৫ থেকে ৫০৫, এসি চেয়ার ৮৯১ থেকে ৯৬১, এসি সিট ১ হাজার ৭০ থেকে ১ হাজার ১৫৬ ও এসি বার্থের ভাড়া ১ হাজার ৫৯৯ থেকে বেড়ে হচ্ছে ১ হাজার ৭৩১ টাকা।

ঢাকা-রাজশাহী রুটে উল্লিখিত শ্রেণিগুলোর ভাড়া হবে যথাক্রমে ২৮৫, ৩৪০, ৬৫৬, ৭৮২ ও ১ হাজার ৬৮ টাকা। ভাড়া বাড়ছে সাড়ে ৭ থেকে ৯ শতাংশ। ময়মনসিংহ, লাকসাম, সোনাইমুড়ি (নোয়াখালি)সহ অন্যান্য রুটেও প্রায় একই হারে বাড়ছে রেলের ভাড়া। এছাড়া রেলওয়ের প্রতিটি শ্রেণির ন্যূনতম ভাড়া ৫-১০ টাকা হারে বাড়ানো হচ্ছে। পণ্য ও কনটেইনার পরিবহনে ভাড়ার বাড়ছে ৭-৯ শতাংশ হারে।

সূত্র জানায়, ২০১২-১৩ অর্থবছরের তুলনায় ২০১৩-১৪ অর্থবছরে জ্বালানি বাবদ ১৭ কোটি ৫৩ লাখ ও মেরামত বাবদ ২৭ কোটি ৫৫ লাখ টাকা ব্যয় বেড়েছে। তবে বেতন-ভাতা খাতে ব্যয় ৫৭ কোটি ৪৬ লাখ টাকা কমেছে। এ হিসাবে ২০১৩-১৪ অর্থবছরে ব্যয় কমেছে ১২ কোটি ৩৪ লাখ টাকা। অথচ বেতন-ভাতা বাদ দিয়ে ৪৫ কোটি টাকা ব্যয় বৃদ্ধির অনুপাতে ৭ দশমিক ২৩ শতাংশ ভাড়া বাড়ানো হয়েছে।

সূত্র জানায়, ২০১২ সালের অক্টোবরে নতুন ভাড়া কার্যকরের আগে ট্রেনের কিলোমিটারপ্রতি ভাড়া ছিল ২৪ পয়সা, যা বেড়ে হয় ৩৬ পয়সা। নতুন ভাড়া কার্যকর হলে তা বেড়ে হবে ৩৯ পয়সা। জ্বালানি ও রক্ষণাবেক্ষণ ব্যয় এবং কর্মকর্তা-কর্মচারীর বেতন বৃদ্ধি এক্ষেত্রে বিবেচনায় নেয়া হয়েছে। এদিকে গত অর্থবছর রেলওয়ে ৯০০ কোটি টাকা লোকসান করে। তবে ৭ দশমিক ২৩ শতাংশ ভাড়া বাড়ানো হলে লোকসান ৫০ কোটি টাকা কমবে। এদিকে রেলের ভাড়া বৃদ্ধির প্রতিবাদ জানিয়ে যাত্রী কল্যাণ সমিতির  মহাসচিব মো. মোজাম্মেল হক চৌধুরী জানান, সেবার মান বাড়ানোর অঙ্গিকার বাস্তবায়ন না করে বিদেশীদের স্বার্থে এ ধরনের জনবিরোধী সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের মধ্য দিয়ে রেলকে যাত্রী বিমূখ প্রতিষ্ঠানে পরিণত করার চক্রান্ত করা হচ্ছে। বছর বছর ভাড়া বৃদ্ধি করে সড়কপথের বাস ব্যবসায়ীদের স্বার্থ সংরক্ষণে কাজ করছে বাংলাদেশ রেলওয়ে।

তিনি বলেন, রেলওয়ে আজ চরম নৈরাজ্য ও লুটপাটের কারখানায় পরিণত হয়েছে। এ খাতে দুর্নীতি ও অব্যবস্থাপনার মহোৎসব চলছে উল্লেখ করে এসব দুর্নীতির দায়ভার নিরীহ যাত্রী সাধারণের কাঁধে চাপানোর জন্য বছর বছর ভাড়া বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। অব্যবস্থাপনা ও লুটপাট বন্ধ করা না হলে ভাড়া বৃদ্ধির সুফল আসবেনা বলে দাবি তার।