জাককানইবিতে শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস পালন

আপডেট: ২০১৬-০২-২১ ২৩:১৮:৪১


JKNIU২১ ফেব্রুয়ারি মহান শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস-২০১৬ উদ্যাপন উপলক্ষ্যে জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ে দুইদিন ব্যাপী অনুষ্ঠানমালা অনুষ্ঠিত হয়। ২০ ফেব্রুয়ারি ২০১৬ তারিখ শনিবার সন্ধ্যায় ‘চুরুলিয়া’ মঞ্চে সংগীত বিভাগের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণে ভাষা ও দেশের গান পরিবেশিত হয়।  সংগীতানুষ্ঠান শেষে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে একুশের প্রথম প্রহর  রাত ১২:০১ মিনিটে পুষ্পস্তবক অর্পণ করা হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. মোহীত উল আলম, ট্রেজারার প্রফেসর এ এম এম শামসুর রহমান, সকল অনুষদের ডীন, সকল বিভাগীয় প্রধান, দুই আবাসিক হলের প্রভোস্ট, প্রক্টর, শিক্ষক সমিতি, কর্মকর্তা পরিষদ, শিক্ষক সংগঠন, রেজিস্ট্রার (অতিরিক্ত দায়িত্ব),সাংবাদিক সমিতি, কর্মকর্তা-কর্মচারীসহ বিভিন্ন সংগঠনের পক্ষ থেকে শহীদ মিনারে পুষ্পস্তবক অর্পণ করা হয়।
২১ ফেব্রুয়ারি বেলা ৩:০০ ঘটিকায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘গাহি সাম্যের গান’ মঞ্চে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। উক্ত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি  জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. হারুন-অর-রশিদ তাঁর বক্তব্যে বলেন, ‘এদেশের মানুষ হাজার বছর ধরে আন্দোলন সংগ্রাম করে একটি স্বাধীন সার্বভৌম দেশের উন্মেষ ঘটিয়েছে। দেশের স্বাধীনতার জন্য বিশ্বের অনেক দেশই আন্দোলন সংগ্রাম করেছে তবে ভাষার জন্য আন্দোলন সংগ্রাম করেছে এমন দেশ একমাত্র বাংলাদেশ। আর এই বাংলায় জন্মগ্রহণ করে যে বাংলা ভাষাকে ছোট করে দেখে তার জন্ম ঠিক নয় এবং সে কুসন্তান।’ ভাষা আন্দোলনে হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙ্গালী জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ভূমিকা আলোচনা করতে গিয়ে প্রধান অতিথি বলেন, ‘ভাষা আন্দোলনের প্রথম কারাবন্দী ছিলেন বঙ্গবন্ধু। তিনি কারাগারে একটানা এগার দিন অনশন করেছিলেন।’ তিনি আরও বলেন, ‘বাঙালীর সঠিক ইতিহাস জানতে হলে হাজার বছরের ইতিহাস জানতে হবে।
আলোচনা সভায় সভাপতি জাককানইবি’র উপাচার্য প্রফেসর ড. মোহীত উল আলম তাঁর বক্তব্যে বলেন, ‘বিভিন্ন বিদেশী ভাষার প্রভাবে বাংলা ভাষা অপরিশোধিত পর্যায়ে চলে যাবে বা ভাষা ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে এই ভয়ে আমি আতঙ্কিত নই। বাংলা ভাষা বটবৃক্ষের মতো বিশাল ও শক্তিশালী। একটি ভাষা অন্য একটি ভাষার সাথে লেনদেন হলে ভাষা আরও পরিশিলীত হয়।’ তিনি আরও বলেন, ‘বাংলা মানে মা, মাকে তো বাছাই করা যায় না। অন্য ভাষার ক্ষেত্রে বাছাই করে নিতে হয়।’
বিশেষ অতিথি ট্রেজারার প্রফেসর এ এম এম শামসুর রহমান বলেন, ‘পাকিস্তান ছিল সামন্তবাদী রাষ্ট্র ব্যবস্থা। তারা দেশের শাসন ব্যবস্থা কিছু লোকের মধ্যে সীমাবদ্ধ রেখেছিল। অর্থাৎ তাদের শাসন ব্যবস্থায় মধ্যবিত্ত বা নিম্নবিত্তের কোন অংশগ্রহণ নেই। এজন্যই পাকিস্তান সৃষ্টির দশ বছরেও দেশের সংবিধান রচনা করতে পারেনি। আমাদের সৌভাগ্য আমরা পাকিস্তান হতে আলাদা হতে পেরেছি।’
বিশেষ অতিথি হিসেবে আরও উপস্থিত ছিলেন মহান শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস- ২০১৬ উদ্যাপন কমিটি’র আহ্বায়ক, কলা অনুষদের ডিন প্রফেসর ড. মো: মাহবুব হোসেন, ব্যবসায় প্রশাসন অনুষদের ডিন প্রফেসর ড. সুব্রত কুমার দে এবং সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ডিন প্রফেসর ড. মো: হাবিবুর রহমান। স্বাগত বক্তব্য রাখেন, মহান শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস- ২০১৬ উদ্যাপন কমিটি’র সদস্য-সচিব ড. মো: সাইফুল ইসলাম। এছাড়া শিক্ষার্থীদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন সাব্বির আহমেদ ও আপেল মাহমুদ। আলোচনা সভা সঞ্চালনা করেন থিয়েটার এ- পারফরমেন্স স্টাডিজ বিভাগের বিভাগীয় প্রধান সৈয়দ মামুন রেজা

সবশেষে থিয়েটার এ- পারফরমেন্স স্টাডিজ বিভাগের পরিবেশনায় মান্নান হীরা রচিত নাটক ‘ইঁদারা’ মঞ্চস্থ হয়। নাটকটির নির্দেশনায় ছিলেন থিয়েটার এ- পারফরমেন্স স্টাডিজ বিভাগের শিক্ষার্থী মো: হুমায়ুন কবির।