দেখে নিন কিভাবে এটিএম কার্ডের টাকা চুরি করছে বিদেশি (ভিডিও)
আপডেট: ২০১৬-০২-২২ ১৭:২৪:৪১
ব্যাংকের এটিএম বুথে কার্ড জালিয়াতির সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে পিওটর সিজোফেন মাজুরেক (ছদ্মনাম থমাস পিটার) নামের এক বিদেশি নাগরিককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশের গোয়েন্দা শাখা (ডিবি)। একই ঘটনায় সিটি ব্যাংকের আরও তিন কর্মকর্তাকে আটক করা হয়েছে।
ভিডিও প্রথম আলোর সৌজন্যে
পিওটর গুলশানে থাকেন। ঢাকায় থেকে যেতে বাংলাদেশি এক হোটেল কর্মচারীকে বিয়ে করে তিনি সংসার পেতেছেন। গেল সপ্তাহে তিনি পুত্রসন্তানের বাবা হয়েছেন।
আজ সোমবার ঢাকা মহানগর পুলিশের মিডিয়া সেন্টারে অনুষ্ঠিত সংবাদ ব্রিফিংয়ে এসব তথ্য জানান নবগঠিত কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিটের প্রধান ডিআইজি মনিরুল ইসলাম।
পিওটরের জন্মস্থান ইউক্রেন। তিনি জার্মানির নাগরিক। থমাস পিটার নামে তাঁর পোল্যান্ডের পাসপোর্ট রয়েছে। আটক হওয়া তিন ব্যাংক কর্মকর্তা হলেন মকসেদ আলম ওরফে মাকসুদ, রেজাউল করিম ও রেফাজ আহমেদ। ব্যাংকের কার্ড ডিভিশনে তাঁরা কর্মরত।
মনিরুল ইসলাম বলেন, গতকাল রোববার রাতে রাজধানীর গুলশানে পিওটরের নিজের বাসা ও বিভিন্ন এলাকা থেকে চারজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। পুলিশের অতিরিক্ত উপকমিশনার মো. শাহজাহানের নেতৃত্বে এই অভিযান চালানো হয়।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে পিওটর বলেন, দীর্ঘদিন ধরে তাঁরা এই জালিয়াতির সঙ্গে জড়িত। তাঁর সঙ্গে এ কাজে আরও জড়িত আছেন লন্ডনপ্র বাসী এক বাংলাদেশি, বুলগেরিয়ার ও ইউক্রেনের একজন করে নাগরিক। তাঁদের সঙ্গে সিটি ব্যাংকের কার্ড ডিভিশনের গ্রেপ্তার তিন কর্মকর্তারও যোগসাজশ রয়েছে।
ব্রিফিংয়ে জানানো হয়, পিওটর পুলিশকে বলেছেন, তিনি এক বছর আগে বিজনেস ভিসা নিয়ে বাংলাদেশে আসেন। কিছুদিন আগে ভিসার মেয়াদ শেষ হয়। তাঁরা বাংলাদেশে অবস্থানরত বিদেশি নাগরিকদের কাছ থেকে এর আগে টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। এটিএম বুথ থেকে তাঁরা শত শত কোটি টাকা হাতিয়ে নেন। পরে বাংলাদেশিদের এটিএম বুথ থেকে টাকা জালিয়াতির কাজ শুরু করেন। সিটি ব্যাংকের তিন কর্মকর্তার কাছে থাকা পাঞ্চ মেশিন তাঁদের এ কাজে সহায়তা করে। এ ঘটনার জন্য পিওটর ‘অনুতপ্ত’ বলে জানিয়েছেন।
এই চক্রের সঙ্গে অন্য ব্যাংকের আরও কয়েকজন জড়িত বলে ডিবি জানিয়েছে। এগুলো খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
ডিবি বলছে, এটিএম বুথের কার্ড জালিয়াতির চক্র মূলত পূর্ব ইউরোপের রোমানিয়া, বুলগেরিয়া, ইউক্রেন ও পোল্যান্ডভিত্তিক। এরা ইউরোপ, আফ্রিকাসহ এশিয়ার বিভিন্ন দেশে তৎপর। গ্রেপ্তার হওয়া ব্যক্তিদের জিজ্ঞাসাবাদে ১০ দিনের রিমান্ড চাইবে ডিবি।
এ মাসের প্রথম সপ্তাহে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় বেসরকারি ইস্টার্ন, সিটি ও ইউসিবিএল ব্যাংকের এটিএম বুথ থেকে অন্তত ২০ লাখ টাকা তুলে নেয় চক্রটি। টাকা হাতিয়ে নিতে তারা স্কিমিং ডিভাইস বসিয়ে গ্রাহকদের গোপন তথ্য চুরি করে। এরপর ঘটনার শিকার গ্রাহকেরা ছাড়াও সংশ্লিষ্ট ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংক লিমিটেড (ইউসিবিএল), সিটি ব্যাংক ও ইস্টার্ন ব্যাংক কর্তৃপক্ষের টনক নড়ে। এই সেক্টরের কড়া নিরাপত্তা সুরক্ষায় বাংলাদেশ ব্যাংকও দ্রুত এগিয়ে আসে। মাঠে নামে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।