‘ইসলাম’ কেন রাষ্ট্রধর্ম, রুলের শুনানি ২৭ মার্চ

আপডেট: ২০১৬-০২-২৯ ১৮:৩১:৫৪


court-frontসংবিধানে রাষ্ট্রধর্ম হিসেবে ‘ইসলাম’ অন্তর্ভুক্তি কেন অসাংবিধানিক ও বেআইনি ঘোষণা করা হবে না, হাইকোর্টের রুল শুনানির জন্য ২৭ মার্চ ধার্য করেছেন হাইকোর্ট।

সোমবার  দুপুরে বিচারপতি নাঈমা হায়দার নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের বেঞ্চ এ আদেশ দেন।

এই বেঞ্চের অন্য সদস্যরা হলেন বিচারপতি কাজী রেজা-উল হক ও বিচারপতি মো. আশরাফুল কামাল।

উল্লেখ্য, সাবেক স্বৈরশাসক হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের শাসন আমলে ১৯৮৮ সালের ৫ জুন সংবিধানের অষ্টম সংশোধনীর মাধ্যমে সংবিধানের ২ (ক) ধারা প্রতিস্থাপন করে দেশের ৯০ ভাগের বেশি মানুষ মুসলিম হওয়ায় ‘ইসলাম’কে রাষ্ট্রধর্ম করা হয়।

প্রসঙ্গত, ২০১১ সালের ২৫ জুন আওয়ামী লীগ আমলে পঞ্চদশ সংশোধনীতে সংবিধানের ২ (ক) অনুচ্ছেদ ফের সংশোধন করা হয়। তবে ‘ইসলাম’কেই রাষ্ট্রধর্ম বহাল রাখা হয়।

সংবিধানের ২ ধারার ক উপধারায় বলা হয় , প্রজাতন্ত্রের রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম, তবে হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিষ্টানসহ অন্যান্য ধর্ম পালনে রাষ্ট্র সমমর্যাদা ও সমঅধিকার নিশ্চিত করিবেন]

১৯৮৮ সালেই প্রথমবার ‘ইসলাম’কে রাষ্ট্রধর্ম করার বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে ১৫ বিশিষ্ট নাগরিক হাইকোর্টে রিট আবেদন করেন।

‘স্বৈরাচার ও সাম্প্রদায়িকতা প্রতিরোধ কমিটির’ পক্ষে ২৮ বছর আগে যারা রিট আবেদনটি করেছিলেন, তারা হলেন- সাবেক প্রধান বিচারপতি কামালউদ্দিন হোসেন, বিচারপতি দেবেশ চন্দ্র ভট্টাচার্য, বিচারপতি কেএম সোবহান, কবি সুফিয়া কামাল, অধ্যাপক খান সরওয়ার মুর্শিদ, ব্যারিস্টার সৈয়দ ইশতিয়াক আহমেদ, অধ্যাপক কবীর চৌধুরী, শিল্পী কলিম শরাফী, অধ্যাপক মোশাররফ হোসেন, সেক্টর কমান্ডার অবসরপ্রাপ্ত মেজর জেনারেল চিত্তরঞ্জন দত্ত, অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী, রাজনৈতিক-কলামনিস্ট বদরুদ্দীন উমর, সাংবাদিক ফয়েজ আহমদ, অধ্যাপক বোরহানউদ্দিন খান জাহাঙ্গীর ও অধ্যাপক আনিসুজ্জামান।

এদের অধিকাংশই মারা গেছেন। এখন সিআর দত্ত, বদরুদ্দীন উমর, বোরহানউদ্দিন খান জাহাঙ্গীর, সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী ও অধ্যাপক আনিসুজ্জামান বেঁচে আছেন।

দ্বিতীয় বার ২০১১ সালে ‘ইসলাম’কে রাষ্ট্রধর্ম বহাল রাখা হলে রিট আবেদনকারীরা ২০১১ সালের ৮ জুন একটি সম্পূরক আবেদন করেন।

সম্পূরক আবেদনের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে সেদিনই বিচারপতি এএইচএম শামসুদ্দিন চৌধুরী ও বিচারপতি গোবিন্দ চন্দ্র ঠাকুরের হাইকোর্ট বেঞ্চ রুল জারি করেন।

রুলে বলা হয়, সংশোধনীর মাধ্যমে সংবিধানের ২ ধারার ক উপধারার অন্তর্ভুক্তি কেন অসাংবিধানিক ও বেআইনি ঘোষণা করা হবে না?

জাতীয় সংসদের স্পিকার এবং আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিবকে রুলের জবাব দিতে বলা হয়।

একই সাথে হাইকোর্ট অ্যামিকাস কিউরি হিসেবে ১৪ জ্যেষ্ঠ আইনজীবীকে নিয়োগ দেয়া হয়।

তারা হলেন বিচারপতি টিএইচ খান, কামাল হোসেন, রফিক-উল হক, এম আমীর-উল ইসলাম, এম জহির, মাহমুদুল ইসলাম, এ এফ হাসান আরিফ, রোকনউদ্দিন মাহমুদ, আখতার ইমাম, ফিদা এম কামাল, আজমালুল হোসেন কিউসি, আবদুল মতিন খসরু, ইউসুফ হোসেন হুমায়ুন, এ এফ এম মেসবাহ উদ্দিন। এদের মধ্যে এম জহির ও মাহমুদুল ইসলাম মারা গেছেন।