নিয়মিত অভিনয় করতে চাই-সাজু আহমেদ

প্রকাশ: ২০১৬-০২-২৯ ২২:২৫:৪৮


Saju ahmed (8)সাংস্কৃতিক অঙ্গণে সাম্প্রতিক সময়ে ব্যস্ত সাজু আহমেদ। একাধারে তিনি নাট্যকার, নাট্যনির্দেশক ও অভিনেতা। ঢাকা মৌলিক নাট্যদলের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি। মঞ্চনাটক নির্দেশনা ও অভিনয়ের পাশাপাশি টিভি নাটকেও অভিনয় করেন। সাংস্কৃতিক অঙ্গণে সাম্প্রতিক সময়ে ব্যস্ততা নিয়ে সানবিডি মুখোমুখি হন সাজু আহমেদ।

সানবিডি : আপনার বর্তমান ব্যস্ততা প্রসঙ্গে জানতে চাই।
সাজু আহমেদ : নতুন একটি শর্ট ফিল্ম নির্মাণের প্রস্তুতি নিচ্ছি। আগামী মাসে শর্ট ফিল্ম ফেস্টিভ্যাল করার ইচ্ছে আছে। আমার নাট্যদলের তৃতীয় প্রযোজনা ‘বিক্ষুব্ধ অতীত এবং নজরুল’ নাটকের মহড়া করছি। এছাড়া এ বছর মে মাসে আমাদের দলের সপ্তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উদযাপনের প্রস্তুতি নিচ্ছি। বিজয় দিবস উপলক্ষে একটি টিভি নাটক লিখছি। এটি আমি পরিচালনাও করতে পারি। এইতো।
সানবিডি : এই সময়ে নজরুলকে নিয়ে নাটক কেন?
সাজু আহমেদ : নজরুলের শেষ জীবনের গল্প নিয়ে ‘বিক্ষুব্ধ অতীত এবং নজরুল’ নাটকটি রচিত। ছোটবেলা থেকে নজরুল সাহিত্য এবং নজরুলের জীবনদর্শন আমার আদর্শ। তার লেখা পড়ে সব সময় উদ্বুদ্ধ হই। ব্যক্তি নজরুলের জীবন সংগ্রাম আমাকে খুব তাড়িত করে। নাটকটি নিয়ে বরাবরের মতই দলের কর্মীরা সবাই বেশ খাটছেন।
সানবিডি : আপনার নিদের্শনায় ‘অংকুর’ নাটকটি আলোচনায় এসেছে?
সাজু আহমেদ : হ্যা এ পর্যন্ত নাটকটির তিনটি মঞ্চায়ন হয়েছে। আগামী ২৯ ফেব্রুয়ারি চতুর্থ মঞ্চায়ন হবে। নাটক বর্তমানকে ধারণ করে ভবিষ্যতের বিষয়ে নির্দেশনা দেয়। আমাদের ‘অংকুর’ নাটকেও সেই বিষয় তুলে ধরা হয়েছে। বর্তমান সময়ে নেতৃত্বের সংকট চলছে। বঙ্গবন্ধু, সোহরাওয়ার্দী, একে ফজলুল হক, মাওলানা ভাষানীর মত সৎ ত্যাগী নেতার অভাবে সমাজকে দিক নির্দেশনা দেয়ার মত নেতৃত্ব সংকট আমাদেরকে দিন দিন পেছনের দিকে নিয়ে যাচ্ছে। দেশের সমাজের এই সংকটকালীন অবস্থায় কি ধরণের নেতৃত্ব প্রয়োজন তা এই নাটকে আমরা তুলে ধরার চেষ্টা করছি। আর নাটকের অন্যতম প্রাণ কাজী রফিক ভাইয়ের নাট্য সংলাপ। অভিনেতাদের প্রাণবন্ত অভিনয়ও নাটকের অন্যতম বিষয়। সব মিলে দর্শকরা নাটকটি বেশ ভালোভাবেই গ্রহণ করেছেন।
সানবিডি : আপনিতো এই নাটকে অভিনয়ও করছেন?
সাজু আহমেদ : আমি নির্দেশনা উপভোগ করি। নাটক নির্মাণে আনন্দ বেশি পাই। তবে এ নাটকের একটি চরিত্রে অভিনয় করছি। মঞ্চের পাশাপাশি টিভি নাটক, টেলিফিল্ম ও চলচ্চিত্রে নিয়মিত অভিনয় করতে চাই।
সানবিডি : টিভি নাটকের খবর কি?
সাজু আহমেদ : সময় স্বল্পতার জন্য খুব বেশি টিভি নাটকে কাজ করা হয়নি। দীর্ঘ বিরতীর পর কিছুদিন আগে আরটিভিতে প্রচার হলো আমার অভিনীত সুমন রেজা পরিচালিত নাটক ‘দেব্বু’। এছাড়া কাজী টিপুর খন্ড নাটক ‘শূন্যস্থান পূরণ’, জি এম সৈকতের ‘আগুনের আর্তনাদ’ নাটকে অভিনয় করেছি। শ্রদ্ধেয় মনির হোসেন জীবন ভাইয়ের পরিচালনায় ধারাবাহিক নাটক ‘গুনীন’ একুশেটিভিতে এবং ‘নীলছায়া’ বিটিভিতে, জহিরুল ইসলাম পরিচালিত ‘সীমাবদ্ধ মানুষেরা’ দিগন্ত টিভিতে এবং মিনহাজ অভি পরিচালিত ঈদের ধারাবাহিক ‘শেষ অধ্যায়’ একুশেটিভিতে প্রচার হয়েছে।
Saju ahmed (7)সানবিডি : চলচ্চিত্রের কোন খবর?
সাজু আহমেদ : ১৯৯৯ সালে শাহাদাত হোসেন লিটন পরিচালিত ‘টপ লিডার’ নামের একটি চলচ্চিত্রে প্রথম ক্যামেরার সামনে দাড়িয়েছিলাম। এছাড়া আর চলচ্চিত্রে কাজ করা হয়নি। তারেক মাহমুদ ভাইয়ের নির্মিতব্য ‘চটপটি’ চলচ্চিত্রে অভিনয় করব।
সানবিডি : মঞ্চে এ পর্যন্ত কতগুলো নাটকে কাজ করেছেন?
সাজু আহমেদ : সবগুলো নাটকের নাম মনে নেই। তবে আমার জেলা বগুড়া এবং ঢাকা মিলে ৩০টি নাটকে অভিনয় করেছি।
সানবিডি : এ পর্যন্ত কয়টি নাটক নির্দেশনা দিয়েছেন?
সাজু আহমেদ : সব মিলে ১৫টির মত হবে। এরমধ্যে আমার ঢাকা মৌলিক নাট্যদলের দুটি পথনাটক ‘পাথর’ ও ‘এই পিরিতি সেই পিরিতি নয়’ এবং মঞ্চনাটক ‘বৃত্তেবিপ্রতীপ’ ও ‘অংকুর’ নাটকের নির্দেশনা দিয়েছি। ঢাকায় এর আগে থিয়েটার ভিউ নামের একটি দলের ‘নাপতালী’ নামে একটি নাটকের নির্দেশনা দিয়েছিলাম। বগুড়ার সোনাতলা থিয়েটারের হয়ে বেশ কয়েকটি নাটকের কথা তো আগেই বলেছি।
সানবিডি : আপনি তো লেখালেখিও করেন।
সাজু আহমেদ : ২০০০ সালে আমার প্রথম কাব্যগ্রন্থ ‘স্মৃতি কেন কাঁদায়’ প্রকাশ হয়। এবারের বই মেলার শেষের দিকে এটির দ্বিতীয় সংস্করণ বের করতে পারি। পাশাপাশি একটি ধারাবাহিক নাটক লেখার চেষ্টা করছি।
সানবিডি : আপনার ভবিষ্যত পরিকল্পনা কি?
সাজু আহমেদ : সংস্কৃতির সব অঙ্গনে কাজের জন্য নিজেকে প্রতিনিয়ত তৈরি করছি। তবে মঞ্চেই আমি স্বাচ্ছন্দবোধ করি। বিশেষ করে মঞ্চ নাটক নির্দেশনা আমি এনজয় করি। মাঝে মাঝে টিভি নাটক ও চলচ্চিত্রে অভিনয়ের প্রস্তাব পেলেও ভালই লাগে।