বেড়েই চলেছে পেঁয়াজ রসুনের দাম
প্রকাশ: ২০১৬-০৩-০৪ ১৬:০৮:১১
গত কয়েক সপ্তাহ ধরেই বাড়ছে আমদানিকৃত রসুন ও দেশি পেঁয়াজের দাম। পাশাপাশি বেগুনসহ কিছু সবজির বাড়ছে। বাজারে গ্রীষ্মকালীন সবজির সরবরাহ শুরু হলেও তার দাম চড়া। এছাড়া আগের চড়া দামেই বিক্রি হচ্ছে ব্রয়লার মুরগি, ডিম, মসুর ডাল, চাল ও চিনি।
আজ রাজধানীর পলাশী, হাতিরপুল, কারওয়ান বাজার, শান্তিনগরসহ কয়েকটি বাজারে গিয়ে এবং খোঁজ নিয়ে এ তথ্য জানা গেছে।
বাজারে নতুন রসুন এলেও তা যথেষ্ঠ নয়, ফলে পুরাতন আমদানিকৃত রসুনের দাম বেড়েই চলেছে। বাজারে আমদানিকৃত চীনা রসুন বিক্রি হচ্ছে ১৯০ থেকে ২০০ টাকা কেজি দরে। গত সপ্তাহে এটি বিক্রি হয়েছে ১৮০ থেকে ১৯০ টাকায়। তবে দেশি নতুন রসুনের দাম তুলনামূলক কম। বিক্রি হচ্ছে মানভেদে ৮০ থেকে ১০০ টাকা কেজি দরে। ব্যবসায়ীরা জানান, দেশি রসুনের সরবরাহ বাড়লে আমদানিকৃত রসুনের দামও কমে আসবে।
এদিকে গত ২/৩ সপ্তাহ ধরেই পেঁয়াজের দাম বাড়ছে। তিন সপ্তাহ আগেও ২৫ থেকে ২৮ টাকা কেজি দরে দেশি ও বিদেশি পেঁয়াজ বিক্রি হলেও এখন তার দাম ৩৫ থেকে ৪০ টাকা প্রতি কেজি। তবে আমদানিকৃত ভারতীয় পেঁয়াজ আগের মতোই ২৫ থেকে ৩০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। ব্যবসায়ীরা জানান, বাজারে শীতকালীন কাঁচা পেঁয়াজের সরবরাহ কমে গিয়েছে। এজন্য দাম বাড়ছে। তবে মাস খানেক পরেই ক্ষেত থেকে শুকনা পেঁয়াজ আসা শুরু হলে আবার এর দাম কমে আসবে বলে তারা আশার কথা শোনালেন।
এদিকে শীত শেষ হয়ে আসায় সবজির সরবরাহ ধীরে ধীরে কমছে। দামেও তার প্রভাব লক্ষ্যণীয়। সপ্তাহের ব্যবধানে বেগুনের দাম বেড়েছে অন্তত ১৫ টাকা। মানভেদে এই সবজি বিক্রি হচ্ছে ৩৫ থেকে ৫০ টাকা কেজি দরে। এছাড়া বাড়তি দামে শশা ২৫ থেকে ৩৫ টাকা, করলা ৪৫ থেকে ৫৫ টাকা, ঝিঙে ও চিচিঙ্গা ৫০ থেকে ৬০ টাকা, পেপে ২৫ থেকে ৩০ টাকা, টমেটো ২০ থেকে ২৫ টাকা, শিম ২৫ থেকে ৩৫ টাকা, গাজর ২০ থেকে ২৫ টাকা, ঢেঁড়স ৫০ থেকে ৬০ টাকা, বাঁধা ও ফুলকপি প্রতিটি ২০ থেকে ২৫ টাকা, লাউ ৩০ থেকে ৪০ টাকা, মিষ্টি কুমড়া প্রতি ফালি ১৫ থেকে ২০ টাকা, জালি কুমড়া প্রতিটি ২০ থেকে ৩০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। তবে আলুর দাম বেশ কম। বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি ১২ থেকে ১৫ টাকায়। এক কেজি কাঁচা মরিচের দাম নেয়া হচ্ছে ৪৫ থেকে ৫৫ টাকা।
গত কয়েক সপ্তাহ ধরেই মুরগির দাম বাড়ছে। আজ নতুন করে না বাড়লেও আগের চড়া দামেই বিক্রি হতে দেখা যায়। বাজারে ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হচ্ছে ১৫০ থেকে ১৫৫ টাকা কেজি দরে। এছাড়া কক ও সোনালি ২০০ থেকে ২২০ টাকা এবং দেশি মুরগি বিক্রি হচ্ছে ৩৪০ থেকে ৩৫০ টাকা কেজি দরে। এদিকে ডিমের দাম আগের মতোই চড়া রয়েছে। খামারের মুরগির লাল ও সাদা ডিম বিক্রি হচ্ছে প্রতি ডজন ৯৮ থেকে ১০৬ টাকা এবং প্রতি হালি ৩৩ থেকে ৩৬ টাকা দরে। আর দেশি মুরগির ডিমের হালি ৪২ থেকে ৪৫ টাকায় এবং হাঁসের ডিম ৪৪ থেকে ৪৮ টাকায় বিক্রি হতে দেখা যায়। গরুর মাংস আগের মতোই ৩৮০ থেকে ৪০০ টাকা এবং খাসির মাংস ৫০০ থেকে ৫৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।
মাছের বাজারে গত সপ্তাহের তুলনায় তেমন কোনো পরিবর্তন চোখে পড়েনি। ব্যবসায়ীরা জানান, প্রতি কেজি দেশি রুই মাছ আকারভেদে ১৮০ টাকা ২৮০ টাকা, আমদানিকৃত রুই ১৭০ থেকে ২৬০ টাকা, কাতলা আকারভেদে ২৭০ থেকে ৩০০ টাকা, তেলাপিয়া ১২০ থেকে ১৮০ টাকা, চিংড়ি ছোট ৩৫০ থেকে ৪৫০ টাকা, বড় ৪৫০ থেকে ৭০০ টাকা, কৈ ১৪০ থেকে ১৮০ টাকা, পাঙ্গাশ ১২০ থেকে ১৪০ টাকা, সিলভার কার্প ১২০ থেকে ১৮০ টাকা, মাগুর ৭০০ থেকে ৮০০ এবং ইলিশ আকারভেদে ৪০০ থেকে ১২০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।
চালের বাজারে মানভেদে মিনিকেট চাল বিক্রি হচ্ছে ৪৪ থেকে ৪৮ টাকা কেজি দরে। আর নাজিরশাইল ৪৮ থেকে ৫২ টাকা, মোটা চাল ৩২ থেকে ৩৪ টাকা কেজি দরে বিক্রি হতে দেখা গেছে। আর প্রতি কেজি খোলা আটা ২৫ থেকে ২৮ টাকা, প্যাকেট ৩৩ থেকে ৩৫ টাকা, খোলা ময়দা ৩২ থেকে ৩৪ টাকা, প্যাকেট ৪০ থেকে ৪৩ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়। এছাড়া আগের চড়া দামেই দেশি চিকন মশুর ডাল বিক্রি হচ্ছে ১৩৫ থেকে ১৪০ টাকা এবং চিনি ৪৮ থেকে ৫০ টাকা কেজি দরে। পাঁচ লিটার সয়াবিন তেলের বোতল বিক্রি হচ্ছে ৪৪০ থেকে ৪৫৫ টাকায়। আর এক লিটারের দাম নেয়া হচ্ছে ৯০ থেকে ৯৫ টাকা।