গ্রামীণ টেলিকম:আইনজীবী ও শ্রমিক নেতাদের টাকা দিয়ে সমঝোতার অভিযোগ
সান বিডি ডেস্ক প্রকাশ: ২০২২-০৭-০২ ২৩:৩১:০৩
নোবেল বিজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসের প্রতিষ্ঠান গ্রামীণ টেলিকমের বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলায় রিটকারীদের আইনজীবী এবং তিন শ্রমিক ইউনিয়ন নেতাকে ২৪ কোটি টাকার বিনিময়ে সমঝোতার অভিযোগ উঠেছে।
এ বিষয়ে বৃহস্পতিবার (৩০ জুন) বিচারপতি মুহাম্মদ খুরশীদ আলম সরকারের হাইকোর্ট বেঞ্চ বলেছেন, আমরা শুনেছি শ্রমিকদের আইনজীবীকে অর্থের বিনিময়ে হাত করে তাদেরকে মামলায় আপস করতে বাধ্য করা হয়েছে।
হাইকোর্ট বলেন, আদালতকে ব্যবহার করে অনিয়ম যেন না হয়ে থাকে। যদি সবকিছু আইন অনুযায়ী না হয় তবে বিষয়টি সিরিয়াসলি দেখা হবে। আমি চাই না কোর্ট এবং আইনজীবীর সততা নিয়ে যেনো কোনো প্রশ্ন ওঠে।
এ সময় আদালত বিস্ময় প্রকাশ করে আরও বলেন, বাংলাদেশ কেন, উপমহাদেশের এমন কোনো আইনজীবী জন্ম নেয়নি যার ফিস ১২ কোটি টাকা হবে।
পরে আদালত দুই পক্ষের আইনজীবীকে ২রা আগস্টের মধ্যে লভ্যাংশ প্রদান সংক্রান্ত সকল ধরনের দালিলিক প্রমাণাদির এফিডেভিট কপি আদালতে জমা প্রদানের নির্দেশনা দেন।
জানা যায়, শ্রমিকদের মামলা প্রত্যাহারে রাজি করাতে দুই আইনজীবী ও তিন শ্রমিক ইউনিয়ন নেতাকে ২৪ কোটি টাকা দিয়েছে ডঃ মুহাম্মদ ইউনূসের মালিকানাধীন ‘গ্রামীণ টেলিকম’।
গত ২৫ মে বিচারপতি খুরশীদ আলমের আদালতে গ্রামীন টেলিকমের বিরুদ্ধে দায়ের করা কোম্পানী অবসায়ন মামলাটি প্রত্যাহারের আবেদন করে শ্রমিক ইউনিয়নের আইনজীবী মোঃ ইউসুফ আলী এবং গ্রামীণ টেলিকমের আইনজীবী এডভোকেট মোস্তাফিজুর রহমান। আদালতে জানানো হয় গ্রামীণ টেলিকম প্রতিষ্ঠানটির সর্বমোট ১৭৬ জন কর্মচারীকে বকেয়া লভ্যাংশ হিসেবে ৪৩৭ কোটি টাকা প্রদান করবে এবং বিনিময়ে শ্রমিকরা ডঃ ইউনূসের বিরুদ্ধে সকল মামলা প্রত্যাহার করে নিবে।
সেটেলমেন্ট একাউন্টের তথ্য বিশ্লেষণে দেখা যায়, একাউন্ট হতে তিনটি চেকের মাধ্যমে ২৬ কোটি ২২ লক্ষ টাকা গ্রামীণ টেলিকম শ্রমিক কর্মচারী ইউনিয়নের একাউন্টে প্রদান করা হয়েছে। পরবর্তীতে সেই একাউন্ট হতে ১৫ কোটি টাকা দেয়া হয় দুই আইনজীবী মোঃ ইউসুফ আলী ও জাফরুল হাসান চৌধুরী এবং তিন কোটি টাকা করে দেয়া তিন শ্রমিক নেতা মোঃ কামরুজামান, ফিরোজ মাহমুদ হাসান ও মাইনুল ইসলামকে।
এর আগে, আদালত ও সরকারের উচ্চ পদস্থ কর্মকর্তাদের প্রভাবিত করে বিবাদমান মামলাসমূহের রায় নিজেদের পক্ষে আনার জন্য ২০২১ সালেও প্রায় ১৪ কোটি টাকা দিয়ে ‘ঢাকা লজিস্টিকস সার্ভিসেস এন্ড সল্যুশন’ নামক লবিস্ট ফার্ম নিয়োগ দিয়েছিলো গ্রামীণ টেলিকম। তখন সফল হতে না পারলেও এবার আইনজীবী ও শ্রমিক নেতাদের ২৪ কোটি টাকা ঘুষ প্রদান করে শ্রমিকদের দায়ের করা মামলা প্রত্যাহার করে নিতে সক্ষম হয় গ্রামীণ টেলিকম।