দুই মাস পর ভারত থেকে গম আমদানি শুরু
উপজেলা প্রতিনিধি প্রকাশ: ২০২২-০৭-১৮ ১৮:৪৫:৩৬
দুই মাস ৪ দিন পর আবারো যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দর দিয়ে ভারত থেকে গম আমদানি শুরু হয়েছে। এর আগে বাজার নিয়ন্ত্রণ রাখতে গত ১৩ মে গম রপ্তানির ওপর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছিল ভারত। গতকাল রোববার রাতে ১৪১০ মেট্রিক টন গমবাহী একটি কার্গোরেল বেনাপোল বন্দরে প্রবেশ করে।
প্রতি মেট্রিক টন গম ২৯ হাজার ৪০১ টাকা মূল্যে শুল্কমুক্ত সুবিধায় আজ সোমবার বন্দর থেকে গম ছাড়া হচ্ছে। আমদানি শুরুতে রেলের রাজস্ব আয়ও বেড়েছে। কমতে শুরু করেছে স্থানীয় বাজার গমের মূল্য।
বেনাপোল আমদানি-রপ্তানি সমিতির সহসভাপতি আমিনুল হক জানান, দেশে চাহিদার মাত্র ৩ শতাংশ গম উৎপাদন হয়। বাকি ৯৭ শতাংশ গম রাশিয়া, ইউক্রেন ও ভারতসহ বেশ কয়েকটি দেশ থেকে আমদানি হয়। চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে রাশিয়া-ইউক্রেন আগ্রাসনে এ দুই দেশ থেকে স্বাভাবিক গম রপ্তানি বাধাগ্রস্ত হয়। এতে বিশ্বে গমের বাজার অস্থিতিশীল হয়ে পড়ে। বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম গম উৎপাদনকারী দেশ ভারত তাদের খাদ্য নিরাপত্তা ও বাজার স্বাভাবিক রাখতে গত ১৩ মে থেকে দেশের বাইরে গম রপ্তানি বন্ধ করে দেয়। তবে নিষেধাজ্ঞার আগে খোলা এলসির গম রপ্তানির সুযোগ থাকবে বলে জানায় ভারত। এতে বেনাপোল বন্দর দিয়ে বন্ধ হয়ে গিয়েছিল গম আমদানি। দেশের বাজারে রাতারাতি গমের দাম কেজি ৩২ টাকা থেকে বেড়ে ৪৫ টাকায় দাঁড়ায়। তবে নানান জটিলতায় পুরোনো এলসির গমও এত দিন আমদানি হয়নি। এখন জটিলতা নিরসনে আবার ভারত থেকে শুরু হয় গম আমদানি।
বেনাপোল রেল স্টেশন মাস্টার সাইদুর রহমান জানান, গতকাল রোববার রাজশাহীর আমদানি কারক ‘বিসমিল্লাহ ফ্লোয়ার মিলস’ ভারত থেকে একটি কার্গোরেলে ৬০টি কনটেইনারে ১৪১০ মেট্রিক টন গম আমদানি করে। গম আমদানিতে রেল খাতে সরকারের রাজস্ব এসেছে ৮ লাখ ৪৮ হাজার টাকা।
আমদানি কারকের প্রতিনিধি রায়হান উদ্দীন জানান, প্রতি কেজি গমের আমদানি মূল্য পড়েছে ২৯ টাকা ৪০ পয়সা। আনুষঙ্গিক খরচ বাদ দিয়ে আমদানি করা এসব গম বাজারে ৩৯ টাকায় বিক্রি করা হবে। শুল্কমুক্ত সুবিধায় বন্দর থেকে গম ছাড় করা হচ্ছে।
সাধারণ ক্রেতা মফিজুর রহমান জানান, ৪০ টাকা দামে গম কিনতে সাধারণ মানুষের কষ্ট হয়ে যায়। দাম কমলে উপকার হয়।
স্থানীয় গম বিক্রেতা রহমান জানান, গম আমদানি বন্ধ থাকায় কেজিতে দাম বেড়েছিল ১২ টাকা। এখন আমদানি শুরু হওয়ায় দাম কমতে শুরু করেছে। গমের সরবরাহ বাড়লে দাম আর কমবে।
এ বিষয়ে বেনাপোল রেল স্টেশন মাস্টার সাইদুর রহমান জানান, দ্রুত গমের চালান ছাড়ানোর কাজ করছে সংশ্লিষ্টরা। আমদানি শুরু হওয়ায় রেল খাতে রাজস্ব আয়ও বেড়েছে।
বেনাপোল বন্দরের উপসহকারী সঙ্গনিরোধ কর্মকর্তা হেমন্ত কুমার সরকার জানান, পুরোনো এলসির গম আমদানি শুরু হলেও বন্ধ রয়েছে নতুন করে গম আমদানির অনুমতি। আমদানি করা গম খাওয়ার উপযোগী কিনা সেটা পরীক্ষা করে ছাড়পত্র দেওয়া হচ্ছে।
এএ