উজবেকিস্তানের সঙ্গে বাণিজ্যবৃদ্ধি করতে জয়েন্ট ওয়ার্কিং গ্রুপ

নিজস্ব প্রতিবেদক আপডেট: ২০২২-০৭-২৯ ১৮:৫১:৪২


উজবেকিস্তানের সঙ্গে বাণিজ্যবাধা দূর করতে একটি জয়েন্ট ওয়ার্কিং গ্রুপ গঠন করা হবে বলে জানিয়েছেন বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি।

তিনি বলেন, উজবেকিস্তান থেকে সার আমদানির বিষয়ে আলোচনা হয়েছে, তারা বাংলাদেশকে সহযোগিতা করবে। চলতি বছরের মধ্যে বাণিজ্য ও বিনিয়োগ বৃদ্ধি এবং বাণিজ্য ক্ষেত্রে বাধা দূর করার জন্য একটি জয়েন্ট ওয়ার্কিং গ্রুপ গঠন করা হবে। এরপর দ্রুততম সময়ের মধ্যে চলমান সমস্যাগুলো সমাধান করা হবে।

শুক্রবার (২৯ জুলাই) ঢাকায় হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।

বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, উজবেকিস্তান বাংলাদেশের বন্ধু রাষ্ট্র। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৭৩ সালে তাসখন্দ সফর করেছিলেন। উভয় দেশের মানুষের মধ্যে সংস্কৃতি ও ধর্মীয় বিষয়ে ব্যাপক আগ্রহ রয়েছে। উজবেকিস্তানের সঙ্গে বাংলাদেশের ব্যবসা-বাণিজ্য ও বিনিয়োগ বৃদ্ধির অনেক সুযোগ রয়েছে। এ সুযোগকে কাজে লাগানোর জন্য ঢাকায় উজবেকিস্তানের একটি দূতাবাস স্থাপনের প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। আশা করা যায় খুব কম সময়ের মধ্যে ইতিবাচক সাড়া পাওয়া যাবে।

তিনি বলেন, উভয়দেশের মধ্যে আকাশ পথে যোগাযোগ চালুর বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। আশা করা যায় এ বিষয়ে আমরা ভালো কিছু করতে পারবো। তখন মাত্র সাড়ে চার ঘণ্টায় ঢাকা থেকে উজবেকিস্তান যাওয়া যাবে। এখন অনেক ঘুরে প্রায় ১২ ঘণ্টা ভ্রমণ করে সেখানে যেতে হয়।

টিপু মুনশি বলেন, রোহিঙ্গা ইস্যুতে উজবেকিস্তান বরাবরই বাংলাদেশের পক্ষে কথা বলেছে, আগামীতের এ সহযোগিতা অব্যাহত রাখবে। ডাবল ট্যাক্সেশন পদ্ধতি উভয় দেশের মধ্যে বাণিজ্য ক্ষেত্রে একটি বড় বাধা। এ বিষয়ে উজবেকিস্তান সরকার পদক্ষে নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছে। আশা করা যায় এ সমস্যারও সমাধান হবে।

হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে দুই দেশের মধ্যে অনুষ্ঠিত বৈঠকে সাতটি বিষয়ের ওপর আলোচনা করা হয়। এগুলো হলো- উভয় দেশে মধ্যে বাণিজ্য এবং অর্থনৈতিক বিষয়, টেক্সটাইল এবং কটন, অ্যাগ্রো ফুড অ্যান্ড ফ্রুটস, ফার্মাসিউটিক্যাল প্রভৃতি। বেঠক শেষে একটি যৌথ বিবৃতি দেওয়া হয়।

এতে বলা হয়, আলোচ্য বিষয়গুলোর ওপর উভয় পক্ষের মধ্যে আন্তরিক পরিবেশে আলোচনা হয়েছে। বাণিজ্য, বিনিয়োগ ও অর্থনৈতিক সহযোগিতা বৃদ্ধিতে পদক্ষেপ নিতে উভয় দেশ একমত পোষণ করে। এজন্য যেসব বাধা রয়েছে সেগুলো দূর করতে উভয় দেশের সরকার পদক্ষেপ গ্রহণ করবে। সভায় বাংলাদেশের উন্নয়ন এবং সক্ষমতা তুলে ধরা হয়।

বাংলাদেশের তৈরি পোশাক, ওষুধসহ রপ্তানি পণ্য আমদানি করার জন্য উজবেকিস্থানের প্রতি আহ্বান জানানো হয়। এছাড়া মেডিকেল পণ্য রপ্তানির বিষয়ে উভয় দেশের মধ্যে একটি এমওইউ স্বাক্ষরের প্রস্তাব দেওয়া হয়। উজবেকিস্তান টেকনোলজি ট্রান্সফার, স্কিল ডেভেলপমেন্ট, টেক্সটাইল সেক্টরে ট্রেনিং সংক্রান্ত প্রস্তাব দেয়। উভয় দেশ এগুলো বাস্তবায়নে আগ্রহ প্রকাশ করে। ঢাকায় উজবেকিস্তানের একটি দূতাবাস স্থাপন এবং আকাশ পথে যোগাযোগ স্থাপনের বিষয়ে উভয় পক্ষ আগ্রহ প্রকাশ করে।

বৈঠকে উজবেকিস্তনের পক্ষে নেতৃত্ব দেন উপ-প্রধানমন্ত্রী জামশেদ কাদজায়েভ। দেশটির ২২ সদস্যের প্রতিনিধি দলে ছিলেন যোগাযোগ মন্ত্রী ইখম মাকামোভ, ফাস্র্ট ডেপুটি মিনিস্টার অব ইনভেস্টমেন্ট অ্যান্ড ফরেন ট্রেড লাজিজ কদরাতোভ, ডেপুটি মিনিস্টার অব এগ্রিকালচার আলিসার সুকোরোভ, ডেপুটি মিনিস্টার অব ট্রান্সপোর্ট জাসুরবেক ছোরিভ প্রমুখ।

বাংলাদেশ পক্ষে ১৫ সদস্যের প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেন বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি। প্রতিনিধি দলে অন্যান্যের মধ্যে ছিলেন- বাংলাদেশ ইনভেস্টমেন্ট ডেভেলপমেন্ট অথরিটির (বিডা) নির্বাহী চেয়ারম্যান মো. সিরাজুল ইসলাম, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব তপন কান্তি ঘোষ, বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের সচিব মোকাম্মেল হোসেন, পাট ও বস্ত্র মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. আব্দুর রউফ, কৃষি মন্ত্রণাালয়ের সচিব মো. সাঈদুল ইসলাম, উজেকিস্তানে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত জাহাঙ্গীর আলম, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর ভাইস-চেয়ারম্যান এ এইচ এম আহসান, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (রপ্তানি) নুসরাত জাবিন বানু, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (রপ্তানি-২) মো. আব্দুর রহিম খান প্রমুখ।

এএ