চিন্তার নতুন ধারা সৃষ্টি করেছে চাঁদপুর সাংবাদিক ফোরাম: সাইফুল আলম
নিজস্ব প্রতিবেদক প্রকাশ: ২০২২-০৭-৩০ ২১:২১:১৫
ঢাকাস্থ চাঁদপুর সাংবাদিক ফোরাম দেশে একটা বার্তা দিয়েছে। চিন্তার একটি নতুন ধারা সৃষ্টি করেছে এই সংগঠন। এই সংগঠনের মাধ্যমে আমরা আমাদের সন্তানদের জ্ঞানের স্বীকৃতি দিচ্ছি, মেধার স্বীকৃতি দিচ্ছি।
শনিবার (৩০ জুলাই) বিকেল সাড়ে ৩টায় জাতীয় প্রেসক্লাবের আকরাম খাঁ হলে অনুষ্ঠিত ঢাকাস্থ চাঁদপুর জেলা সাংবাদিক ফোরাম আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন যুগান্তরের সম্পাদক ও জাতীয় প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি সাইফুল আলম।
বাণিজ্য প্রতিদিনের সম্পাদক ও ঢাকাস্থ চাঁদপুর সাংবাদিক ফোরামের সাধারণ সম্পাদক শাহরিয়ার পলাশের সঞ্চালনায় সভাপতিত্ব করেন সংগঠনের সভাপতি ও ঢাকা টাইমসের নির্বাহী সম্পাদক মিজান মালিক।
এতে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সাবেক ভূমি সচিব মাকসুদুর রহমান পাটওয়ারী। আরও ছিলেন ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের সচিব সুজিত রায় নন্দী, ঢাকা পোস্টের সম্পাদক মহিউদ্দিন সরকার, চ্যানেল আই-এর বিশেষ প্রতিনিধি মাজহারুল হক মান্না, সময়ের আলোর প্রকাশক কাজী আবদুল্লাহ ও ফোরামের সদস্যরা।
অনুষ্ঠানে শুরুতে জিপিএ-৫ পাওয়া কৃতি শিক্ষার্থীদের কয়েকজন বক্তব্য রাখেন।
এ সময় কোমলমতিরা জানান, ঢাকাস্থ চাঁদপুর সাংবাদিক ফোরাম থেকে বৃত্তি ও সংবর্ধনা পেয়ে আমরা আনন্দিত ও উচ্ছ্বসিত। এটা পড়াশোনায় আরও বেশি মনোযোগী হতে আমাদের উৎসাহ প্রদান করেছে। এটা সত্যি ব্যতিক্রম। আমাদের পরে যারা পাবে তাদেরকেও পড়াশোনায় উৎসাহ দেবে।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে সাইফুল আলম বলেন, আমরা মৃত ব্যক্তিদের মরণোত্তর সংবর্ধনা দিই। কিন্তু জীবিতদের কাজের ও মেধার স্বীকৃতি দিতে চাই না আমরা। বড় পরিসরে না হোক, ঢাকাস্থ চাঁদপুরের সাংবাদিক ফোরাম সেই কাজটি করেছে। একটা বার্তা দিতে পেরেছে। যে আমরা আমাদের সন্তানদের জ্ঞানের স্বীকৃতি দিচ্ছি, মেধার স্বীকৃতি দিচ্ছি। চিন্তার একটি নতুন ধারা সৃষ্টি করেছি এই সংগঠনের মাধ্যমে। এখানে যেসব ছোটরা সনদ, ক্রেস্ট, সংবর্ধনা পেয়েছ তারা নিজেদের ছোট ভাবার কারণ নেই। তোমরা তোমাদের এই স্বীকৃতি দিয়ে তোমাদের বাবা-মায়ের হৃদয় ভরে দিয়েছ। গৌরব এনে দিয়েছ।
তিনি বলেন, ছোটদের শিক্ষাক্ষেত্রে, মানবিক হবার ক্ষেত্রে, সাংস্কৃতিক চর্চার ক্ষেত্রে, দেশপ্রেমিক হওয়ার ক্ষেত্রে আমরা এই ছোটদের মনকে উজ্জ্বীবিত করার চেষ্টা করেছি, সম্প্রসারিত করেছি। এটা অভিভাবকদের দায়িত্ব। জাতীর পিতার সোনার দেশ গড়তে হলে সোনার মানুষ তৈরি করতে হবে। সোনার মানুষ তৈরি করতে হলে সোনার প্রতিভা গড়তে হবে। সে কাজের প্রয়াস ফুটে উঠেছে ঢাকাস্থ চাঁদপুর সাংবাদিক ফোরামের মাধ্যমে।
তিনি বলেন, ভারতের রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু প্রত্যন্ত গ্রামে সাঁওতাল পরিবারে জন্ম নেওয়া নারী। ১৫০ কোটি মানুষের মধ্যে এক নম্বরে পরিণত হয়েছেন। তার একটি বক্তৃতায় দেওয়া দুটি লাইন আমাকে খুব আকর্ষণ করেছে। তিনি বলেছেন, গরিব হলে যে স্বপ্ন দেখতে হয় আর সেই স্বপ্ন যে বাস্তবায়ন করা যায়, আমাকে নির্বাচন করা তার প্রমাণ।
যুগান্তর সম্পাদক যোগ করেন, আমরা আমাদের সন্তানদের জীবনযুদ্ধে জয়ী মানুষের কথা শুনাতে চাই, যারা মুক্তিযুদ্ধ করেছেন, জীবন দিয়েছেন তাদের কথা শোনাতে চাই, আদর্শ মানুষের কথা শোনাতে চাই। যাদের শ্রম, মেধা, আত্মত্যাগে এ দেশ গড়েছে, তাদের কথা শোনাতে চাই। আজকে চাঁদপুর সাংবাদিক ফোরাম সেই সূচনা করেছে।
সাবেক ভূমি সচিব মাকসুদুর রহমান পাটওয়ারী বলেন, চাঁদপুরের সাংবাদিকরা দারুণ ব্যক্তিক্রম সব উদ্যোগ নিচ্ছেন। লেখাপড়ার পাশাপাশি শিশুদের মানুষ রূপে গড়তে দুর্দান্ত পদক্ষেপ নিয়েছে। শিক্ষার্থীদের একটা ক্রেস্ট দিলে তাদের মন ভরে যায়। চাঁদপুরকে চাঁদের দেশ বলেছেন প্রধানমন্ত্রী। এই শিক্ষার্থীরা চাঁদের আলোয় দেশকে আলোকিত করুক। চাঁদপুরের চাঁদমুখ তোমরা।
ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের সচিব সুজিত রায় নন্দী বলেন, আজকের এই অনুষ্ঠানে চাঁদপুরের প্রিয়, শ্রদ্ধাভাজন সাংবাদিকদের দেখছি। তারা সাংবাদিক জগতের অলংকার। চাঁদপুরের এই সাংবাদিক ফোরাম ব্যতিক্রমী আয়োজন করেছে।
চাঁদপুরকে গৌরবের সঙ্গে টিকিয়ে রাখতে সাংবাদিকদের ভূমিকা নিয়ে কথা বলেন ত্রাণ সচিব।
তিনি বলেন, চাঁদপুরে মেঘনা ও পদ্মা নদীতে অপরিকল্পিতভাবে বালু উত্তোলন করে যেন পরিবেশ বিপর্যয় না করে, চাঁদপুরের ইলিশের অভয়াশ্রমকে ক্ষতিগ্রস্ত না করে যেজন্য সাংবাদিকদের সজাগ থাকতে হবে। মেঘনার ভাঙন থেকে চাঁদপুরকে রক্ষা করতে চাঁদপুরের সাংবাদিকরা যেভাবে কলম ধরেছেন, তার ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে হবে। সম্প্রতি সাম্প্রদায়িকতা মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে। দেশে সম্প্রীতি বজায় রাখতে সাংবাদিকদের অগ্রণি ভূমিকা রাখতে হবে। আজকে যেসব কৃতি শিক্ষার্থীদের সংবর্ধনা দেয়া হচ্ছে, তাদের ভবিষ্যৎ জীবনের শুভকামনা করছি।
সভাপতি মিজান মালিক বলেন, আমরা যে সংগ্রাম করে জীবনে যতটুকু প্রতিষ্ঠা পেয়েছি, এ অনুষ্ঠানের মাধ্যমে, শিক্ষার্থীদের সংবর্ধনা দেয়ার মাধ্যমে তারাও যেন বিষয়টি অনুধাবন করতে পারে। আমাদের অনুসরণ করে তার যেন প্রতিষ্ঠা পায়।
এম জি