নাইজেরিয়াতে রপ্তানি হচ্ছে বিশ্বমানের ওয়ালটন পণ্য
আপডেট: ২০১৬-০৩-১২ ২২:৪৭:৩৬
ওয়ালটন পণ্য এবার রপ্তানি হচ্ছে আফ্রিকার বৃহত্তম অর্থনীতির দেশ নাইজেরিয়ায়। শুরুতে রপ্তানি হচ্ছে ওয়ালটনের ফ্রিজ এবং এয়ার কন্ডিশনার। পর্যায়ক্রমে যাবে অন্যান্য পণ্য। দামে সাশ্রয়ী এবং মানে সেরা হওয়ায় প্রতিদ্বন্দ্বী অন্যান্য ব্র্যান্ডের চেয়ে বাংলাদেশের ওয়ালটনকেই প্রাধান্য দিচ্ছেন নাইজেরিয়ার ব্যবসায়ীরা।
ওয়ালটনের লক্ষ্য নাইজেরিয়ার মাধ্যমে প্রতিবেশী অন্যান্য আফ্রিকান দেশগুলোতেও বাজার সম্প্রসারণ করা। ওয়ালটনের কর্মকর্তারা মনে করেন, নাইজেরিয়ার মতো একটি গুরুত্বপূর্ণ দেশে ওয়ালটন ব্র্যান্ডের পণ্য রপ্তানির মাধ্যমে বর্হিবিশ্বে বাংলাদেশের সুনাম বৃদ্ধি পাবে। ব্র্যান্ডিং হবে ‘মেড ইন বাংলাদেশ’ পণ্যের। তাদের মতে, রপ্তানি বহুমুখীকরণে এটি একটি মাইলফলক। যা উজ্জীবিত করবে বাংলাদেশি উদ্যোক্তাদের।
এ বিষয়ে সম্প্রতি ‘জে এন্ড কে ওয়ালটন টেকনোজিস নাইজেরিয়া লিমিটেড’ এর প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা জনসন অগবু’র নেতৃত্বে তিন সদস্যের একটি ব্যবসায়ী প্রতিনিধি দল গাজীপুরের চন্দ্রায় ওয়ালটন কারখানা পরিদর্শন করেন। এরপর তারা রাজধানীর মতিঝিলে ওয়ালটন গ্রুপের প্রধান কার্যালয়ে বৈঠক করেন। এ বৈঠকে কোম্পানির ইন্টারন্যাশনাল মার্কেটিং বিভাগের প্রধানসহ উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের উপস্থিতিতে নাইজেরিয়াতে ওয়ালটন পণ্য রপ্তানি প্রক্রিয়ার আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন হয়।
সূত্রমতে, বর্তমানে ১৯ দেশে রপ্তানি হচ্ছে ওয়ালটন ব্র্যান্ডের বিশ্বমানের পণ্য। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো ভারত, নেপাল, ভুটান, মালদ্বীপ, কাতার ও সংযুক্ত আরব আমিরাত। এর আগে আফ্রিকার সুদানে গেছে ওয়ালটন পণ্য। রপ্তানি তালিকায় এবার নতুন করে যুক্ত হলো নাইজেরিয়া।
নাইজেরিয়াতে ওয়ালটন পণ্যের আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান হলো ‘জে এন্ড কে ওয়ালটন টেকনোজিস নাইজেরিয়া লিমিটেড’। নাইজেরিয়ায় পণ্য রপ্তানির পূর্বে সেদেশের মান নিয়ন্ত্রণ সংস্থা সনক্যাপের (স্ট্যান্ডার্ড অরগানাইজেশন অব নাইজেরিয়া কনফরমিটি অ্যাসেসমেন্ট প্রোগ্রাম) সনদ পেয়েছে ওয়ালটন।
এ প্রসঙ্গে ওয়ালটনের ইন্টারন্যাশনাল মার্কেটিং বিভাগের প্রধান রকিবুল ইসলাম রাকিব বলেন, ১৮ কোটিরও বেশি মানুষের দেশ নাইজেরিয়া। কৌশলগত বিপণন বিশ্লেষণে খুব সম্ভাবনাময় একটি বাজার দেশটি। বাংলাদেশের বাজারে ওয়ালটন যেমন বিক্রির শীর্ষে রয়েছে, তেমনি ভবিষ্যতে নাইজেরিয়ার বাজারেও আমাদের শীর্ষে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তিনি জানান, উচ্চ গুণগতমান ধরে রেখে পণ্য সরবরাহ করলে নাইজেরিয়ার বাজারে একটি শক্তিশালী অবস্থানে পৌঁছতে সক্ষম হবে ওয়ালটন।
জে এন্ড কে ওয়ালটন টেকনোজিস নাইজেরিয়া লিমিটেডের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা জনসন অগবু বলেন, নাইজেরিয়াতে প্রতিদ্বন্দ্বী ব্র্যান্ডগুলোর তুলনায় ওয়ালটন পণ্য দামে অনেক সাশ্রয়ী এবং মানের দিক থেকেও আরো উন্নত। তাই, নাইজেরিয়াতে ইলেকট্রনিক্স পণ্যের সিংহভাগ বাজার দখলে ওয়ালটন দ্রুত এগিয়ে যাবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি। জনসন অগবু আরো বলেন, নাইজেরিয়ার মাধ্যমে পার্শ্ববর্তী অন্যান্য দেশেও পণ্য সরবরাহ সম্ভব হবে। কারণ প্রতিবেশী অনেক দেশেই সমুদ্রবন্দর নেই। তারা নাইজেরিয়ার বন্দর ব্যবহার করে। এই সুযোগটি কাজে লাগাতে পারে ওয়ালটন।
জানা গেছে, জনসংখ্যা ও অর্থনীতির দিক থেকে আফ্রিকান দেশগুলোর মধ্যে নাইজেরিয়া খুবই গুরুত্বপূর্ণ অবস্থানে রয়েছে। স্বল্পোন্নত দেশের তালিকা থেকে দেশটি এখন ‘লোয়ার মিডল ইনকাম’ দেশে পরিণত হয়েছে। বিশ্ব অর্থনীতিতে দ্রুত অগ্রসরমান ’নেক্সট ইলেভেন’ কান্ট্রির তালিকায়ও রয়েছে দেশটি। ভৌগলিকভাবেও নাইজেরিয়া আফ্রিকার কেন্দ্রবিন্দুতে অবস্থিত। আছে সমুদ্র বন্দর। এর প্রতিবেশী হিসেবে আছে ক্যামেরুন, নাইজার, চাদ, মালি, ঘানা ইত্যাদি দেশ।
এছাড়া আলজেরিয়া, লিবিয়া, মিশর, সুদানসহ আফ্রিকার বেশ কয়েকটি দেশের অবস্থান নাইজেরিয়ার কাছাকাছি। তাই নাইজেরিয়ার বাজারে আধিপত্য বিস্তার করতে পারলে ওইসব দেশেও ওয়ালটনের বাজার সম্প্রসারণ সম্ভব হবে।