‘রিজার্ভে টাকা চুরির ঘটনায় নজর রাখছে দুদক’

আপডেট: ২০১৬-০৩-১৪ ১৮:৫০:০২


Iqbal-Mahmud-600x371বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ টাকা চুরির বিষয়টি দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) নজর রয়েছে বলে জানিয়েছেন সংস্থাটির নতুন চেয়ারম্যান ইকবাল মাহমুদ। আজ সোমবার দুপুরে সেগুনবাগিচায় দুদকের প্রধান কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ তথ্য জানান।

ইকবাল মাহমুদ জানান, দুদক একটি স্বাধীন কমিশন। যেখানেই দুর্নীতি সেখানেই দুদক তদন্তে যাবে। রিজার্ভে টাকা চুরির ঘটনার তদন্ত করছে বাংলাদেশ ব্যাংক ও র‌্যাব; সেটি আমরা নজরে রাখছি।

তিনি আরও বলেন, দেশের ১৬ কোটি মানুষের মধ্যে খুব অল্প সংখ্যাক মানুষ দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত। দুদক হবে দুর্নীতিবাজদের জন্য আতঙ্কের নাম। আর যারা দুর্নীতি করে না তাদের জন্য দুদক হবে বটবৃক্ষ।

ইকবার মাহমুদ বলেন, আমি অনেককেই বলতে দেখিছে দুদকের অনেক কর্মকর্তা দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত। আমি চেষ্টা করবো আগে আমার নিজের ঘর ঠিক করতে। দুদকের মধ্যে যদি কোনো দুর্নীতি থাকে সেটা মুক্ত করবো।

কোনো ধরনের রাজনৈতিক চাপ থাকবে না উল্লেখ তিনি বলেন, আমরা অন্ধ, কারো মুখের দিকে তাকিয়ে কাজ করব না। আমরা আইন অনুযায়ী আমাদের কাজ করে যাব। এসময় দুদকের নতুন কমিশনার এ এফ এম আমিনুল ইসলাম উপস্থিত ছিলেন।

প্রসঙ্গত, সম্প্রতি ফিলিপাইনের পত্রিকা ইনকোয়ারারের প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, নিউ ইয়র্কের ফেডারেল রিজার্ভে গচ্ছিত বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ থেকে প্রায় ১ বিলিয়ন মার্কিন ডলার হাতিয়ে নিতে চেয়েছিল হ্যাকাররা। এ প্রচেষ্টায় দুই ধাপে প্রায় ১০১ মিলিয়ন ডলার লোপাট করলেও ৮৭০ মিলিয়ন ডলার পাচারে ব্যর্থ হয় তারা।

এতে আরও জানানো হয়েছিল, সুইফট মেসেজিং সিস্টেমে জালিয়াতির মাধ্যমে বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে চুরি করা অর্থ ফিলিপাইন ও শ্রীলঙ্কার ব্যাংকে স্থানান্তরিত হয়। এর মধ্যে ফিলিপাইনের অ্যাকাউন্টে নেওয়া ৮ কোটি ডলার ক্যাসিনোর মাধ্যমে হংকংয়ে পাচার করা হয়েছে।

ফেডারেল রিজার্ভের বাংলাদেশ ব্যাংকের অ্যাকাউন্ট হ্যাকিংয়ের মাধ্যমে অর্থ চুরির ঘটনা তদন্ত করবে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সাইবার নিরাপত্তা কোম্পানি ফায়ারআই। বাংলাদেশ ব্যাংকের পরামর্শক ওয়ার্ল্ড ইনফরমেটিক্সই অর্থ লোপাটের তদন্তে ফায়ারআইকে সম্পৃক্ততার কথা জানিয়েছে রয়টার্স।

বাংলাদেশ ব্যাংক গত শুক্রবার এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, সাইবার আক্রমণে ৩৫টি ভুয়া পরিশোধ নির্দেশের মাধ্যমে ৯৫ কোটি ১০ মার্কিন ডলার বা প্রায় ৭ হাজার ৬০৮ কোটি টাকা স্থানান্তরের প্রস্তাব পাঠানো হয়। তার মধ্যে ৩০টি নির্দেশ আটকানো সম্ভব হয়। তাতে ৮৫ কোটি ডলার বেহাত হওয়া প্রতিহত করা গেছে। তবে পাঁচটি পরিশোধ নির্দেশের বিপরীতে ১০ কোটি ১০ লাখ ডলার বা প্রায় ৮০৮ কোটি টাকা ফিলিপাইন ও শ্রীলঙ্কায় চলে যায়। তার মধ্যে শ্রীলঙ্কা থেকে ২ কোটি ডলার উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে বলে বাংলাদেশ ব্যাংক জানিয়েছে। ফিলিপাইনে যাওয়া ৮ কোটি ১০ লাখ ডলার বা প্রায় সাড়ে ৬০০ কোটি টাকা উদ্ধারের চেষ্টা চালাচ্ছে বাংলাদেশ ব্যাংক।

এদিকে রিজার্ভ থেকে অর্থ চুরির বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক করে পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে গতকাল শনিবার সাংবাদিকদের জানিয়েছিলেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত।

সানবিডি/ঢাকা/আহো