বড় হচ্ছে কৃষিযন্ত্রের বাজার
প্রকাশ: ২০১৬-০৩-১৮ ১৪:৫৬:২৮
দেশে কৃষির যান্ত্রিকীকরণ বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বাড়ছে কৃষিযন্ত্র ও যন্ত্রাংশের চাহিদা। গত পাঁচ বছরে বিভিন্ন কৃষি যন্ত্রপাতির বাজারের আকার দেড় হাজার কোটি টাকা বেড়ে এখন সাড়ে আট হাজার কোটি টাকায় উন্নীত হয়েছে। এসব যন্ত্রপাতির মধ্যে উল্লেখযোগ্য অংশ তৈরি করছেন দেশীয় উদ্যোক্তারা। এসব তথ্য জানিয়ে পল্লী উন্নয়ন একাডেমির (বগুড়া) মহাপরিচালক প্রকৌশলী এম এ মতিন বলেছেন, কৃষি যন্ত্রপাতি সহজলভ্য করতে এর ওপর থেকে কর উঠিয়ে নিতে হবে। আর দেশীয় উদ্যোক্তাদের উৎসাহ ও প্রযুক্তি সহায়তা দিতে হবে। গতকাল বৃহস্পতিবার আন্তর্জাতিক কৃষি প্রযুক্তি মেলার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
পল্লী উন্নয়ন একাডেমি (বগুড়া) ষষ্ঠবারের মতো মেলাটির আয়োজন করেছে। রাজধানীর আন্তর্জাতিক কনভেনশন সিটি বসুন্ধরায় (আইসিসিবি) আগামীকাল শনিবার পর্যন্ত মেলাটি চলবে। ওই মেলায় ১৫০টি স্টলে ১৫টি দেশের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান কৃষি ও কৃষিভিত্তিক শিল্পের যন্ত্রপাতি ও প্রযুক্তি, খাদ্য প্রক্রিয়াজাতকরণ, সংরক্ষণ, মোড়কজাতকরণের যন্ত্র ও প্রযুক্তি, বীজসহ বিভিন্ন উপকরণ ও সেবা প্রদর্শন করছে। গতকাল সকালে মেলার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় প্রতিমন্ত্রী মসিউর রহমান রাঙ্গা উপস্থিত ছিলেন।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় বিভাগের সচিব এম এ কাদের সরকার। মসিউর রহমান রাঙ্গা বলেন, এ দেশের কৃষিতে এখনো আধুনিক যন্ত্রের আশানুরূপ ব্যবহার শুরু হয়নি। এ দেশে খামার যান্ত্রিকীকরণের পাশাপাশি উন্নত প্রযুক্তি ও কলাকৌশলের সমন্বয় সাধন একান্ত প্রয়োজন।
অনুষ্ঠানের মূল প্রবন্ধে এম এ মতিন জানান, ২০১১ সালে দেশে কৃষি যন্ত্রপাতির বাজার ছিল সাত হাজার ১১৫ কোটি টাকার। ২০১৫ সালে তা বেড়ে আট হাজার ৪৯০ কোটি টাকা হয়েছে। সরকার কৃষি যন্ত্রপাতি ক্রয়ে ভর্তুকি দেওয়ায় বিক্রি অনেক বেড়েছে। তিনি বলেন, ১৯৮৮ সালে সরকার শ্যালো মেশিনের ওপর থেকে কর তুলে নিয়েছিল। এর ফলে চীন থেকে আমদানি করা সেচযন্ত্র অনেক কম খরচে কেনা সম্ভব হয়। তা কৃষিতে বিপ্লব এনেছিল। এম এ মতিন নতুন নতুন কৃষিযন্ত্রের ওপর কর তুলে নেওয়ার পরামর্শ দিয়ে আরো বলেন, অনেক কৃষিযন্ত্র বাংলাদেশকে আমদানি করতে হয়। কম দামে কার্যকরী যন্ত্র আমদানি করতে পারলে কৃষকরা উপকৃত হবেন। খরচ কমবে। এম এ মতিন বলেন, বগুড়া ও ঢাকার ধোলাইখালের হালকা প্রকৌশল শিল্পের উদ্যোক্তারা অনেক ভালো মানের পণ্য উত্পাদন করছেন। কৃষকরা তাঁদের পণ্য ব্যবহার করেন। কারণ সেগুলো দামে সাশ্রয়ী ও টেকসই।
এসব উদ্যোক্তাদের প্রয়োজনীয় প্রযুক্তি সহায়তা ও উৎসাহ দিতে হবে। সরকারি বিভিন্ন সংস্থার প্রকৌশলীদের উচিত তাঁদের কাছে গিয়ে বসে থাকা। মেলায় ভারত, যুক্তরাষ্ট্র, থাইল্যান্ড, ইন্দোনেশিয়া, মালয়েশিয়া, চীন, জার্মানি, কোরিয়া, তুরস্ক, স্পেন, তাইওয়ান, ইরান, তিউনিশিয়া, ইতালি ও কানাডার বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান অংশ নিয়েছে। মেলা আয়োজনে পল্লী উন্নয়ন একাডেমিকে সহায়তা করেছে ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট প্রতিষ্ঠান লিমরা ট্রেড ফেয়ার অ্যান্ড এক্সিবিশনস। মেলায় ১০ হাজার দর্শনার্থী আসবে বলে আশা করছে তারা।