উৎপাদনশীল খাতে প্রবাসীদের বেশি বিনিয়োগের আহ্বান
প্রকাশ: ২০১৬-০৩-১৯ ১৯:১৪:১১
বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে প্রবাসীদের ভূমিকা অপরিসীম উল্লেখ করে দেশের উৎপাদনশীল খাতে তাঁদের বেশি বিনিয়োগ করার আহ্বান জানিয়েছেন অর্থ ও পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী এম এ মান্নান এবং পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম।
আজ শনিবার রাজধানীর একটি হোটেলে ‘উন্নয়নে প্রবাসী-সমৃদ্ধিতে প্রবাসী’ শীর্ষক এক আলোচনা সভায় দুই প্রতিমন্ত্রী এই আহ্বান জানান। সেন্টার ফর নন রেসিডেন্ট বাংলাদেশিস (এনআরবি) এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।
অনুষ্ঠানে অর্থ ও পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী এম এ মান্নান বলেন, পরিযায়ী পাখির মতোই বাংলাদেশের প্রবাসীরা পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে ছড়িয়ে পড়েছে। ফলে সারা পৃথিবীতেই এখন বাংলাদেশিরা পরিচিত হয়ে উঠছেন। তিনি বলেন, আগে প্রবাসীদের অবহেলা ও বঞ্চনার চোখে দেখা হতো। কিন্তু আওয়ামী লীগ সরকার প্রবাসীদের মর্যাদার চোখে দেখে। দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে তাঁদের অবদান অনেক। তাঁরা এখন দেশে আরও বিনিয়োগ করতে পারেন। প্রবাসীদের জন্য এই সরকারের দরজা সব সময় খোলা।
পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম বলেন, ‘আমরা যখন যে দেশে যাই সেখানকার প্রবাসী বাংলাদেশিদের কথা শুনি। বর্তমান সরকার সব সময় প্রবাসীদের কল্যাণে কাজ করতে চায়। প্রধানমন্ত্রী বলে দিয়েছেন কেউ যেন প্রবাসীদের সঙ্গে শাসকের মতো কথা না বলে তাদের যেন সহায়ক ভূমিকা পালন করি।’
পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী বলেন, প্রবাসীদের অবদান অনেক। গত সাত বছর প্রবাসী আয় চার গুন বেড়েছে। এর পেছনে সরকারের নানা উদ্যোগ আছে। তিনি বলেন, বাংলাদেশ এখন অতি সম্ভাবনাময় দেশ। প্রবাসীরা দেশে এসে বিনিয়োগ করতে পারেন। আর সরকারও বিভিন্ন ক্ষেত্রে প্রবাসীদের মেধা কাজে লাগাতে চায়।
বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর মোহাম্মদ ফরাসউদ্দিন বলেন, প্রবাসীরা বাংলাদেশের মানুষের হৃদয়ে। বঙ্গবন্ধুর দেশ স্বাধীনের পর যখন যেই দেশে যেতেন স্বাধীনতা সংগ্রামে সেখানকার প্রবাসীদের ভূমিকার প্রশংসা করে দেশ গড়তেও অবদান রাখতে বলতেন। বঙ্গবন্ধুর মতোই তাঁর কন্যাও প্রবাসীদের মর্যাদা দিচ্ছেন।
এফবিসিসিআইয়ের সাবেক সভাপতি কাজী আকরাম উদ্দিন আহমেদ বলেন, উন্নয়ন ও সমৃদ্ধি পরস্পরের সম্পর্কযুক্ত। উন্নয়ন হলে সমৃদ্ধি আসবেই। তিনি বলেন, কেবল অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে নয় বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে যেমন প্রবাসীদের অনেক অবদান তেমনি গণতন্ত্রে ফিরে আসার পেছনেও তাঁদের অবদান আছে। প্রায় এক কোটি বাংলাদেশি এখন প্রবাসে। তাঁরা দেশ গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছেন। তবে কেবল জমি ও বাড়িতে বিনিয়োগ না করে প্রবাসীদের উৎপাদনশীল খাত ও ব্যবসা-বাণিজ্যে বিনিয়োগ করার আহ্বান জানান তিনি।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন এনআরবির চেয়ারম্যান সেকিল চৌধুরী। এছাড়া মেট্রোপলিটন চেম্বারের সভাপতি নাসিম মঞ্জুর, ঢাকা চেম্বারের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি হুমায়ুন রশীদ, ঢাকায় নিযুক্ত অস্ট্রেলিয়ান হাইকমিশনার গ্রেগ উইল কর্ক, মার্কিন দূতাবাসের ইকোনমিক শাখার প্রধান ব্র্যাড স্টিল উইল এবং সাবেক রাষ্ট্রদূত আসহাবউদদ্দিন বক্তব্য রাখেন।
অনুষ্ঠানে ব্যান্ডিং আওয়ার্ডের জন্য যথাক্রমে ট্রাস্ট ব্যাংক, এবি ব্যাংক ও প্রাইম ব্যাংক পুরস্কার পায়। প্রবাসী আয় আনতে ভূমিকা রাখার জন্য যথাক্রমে ইসলামী ব্যাংক, অগ্রণী ব্যাংক ও সোনালী ব্যাংক পুরস্কার পায়। সংগঠন হিসেবে প্রবাসীদের জন্য ভূমিকা রাখায় জনশক্তি রপ্তানিকারকদের সংগঠন বায়রা ও মেট্রোপলিটন চেম্বার অব কমার্সকে সম্মাননা দেওয়া হয়।
এছাড়া সাবেক গভর্নর ফরাসউদ্দিনকে আজীবন সম্মাননা দেওয়া হয়। তিনি বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ চুরির ঘটনার তদন্ত করছেন। গতকাল অনুষ্ঠান শেষে এ নিয়ে জানতে চাইলে তিনি কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।
সানবিডি/ঢাকা/আহো