প্রাথমিকের সহকারী শিক্ষকদের ১০ম গ্রেড নিয়ে কিছু কথা

সান বিডি ডেস্ক প্রকাশ: ২০২২-১০-২৬ ১০:২২:৪৫


ইংরেজিতে একটি প্রবাদ আছে ‘Give respect & take respect’ বাংলা হচ্ছে সম্মান দিলে সম্মান পাওয়া যায়। আমি কোন পেশা বা ডিগ্রিকে ছোট করে বলবো না। আমি আমার/আমাদের প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের গ্রেড ও বেতন কাঠামো নিয়ে কিছু কথা বলবো।

বর্তমান যুগের সাথে তাল মিলিয়ে চলতে গেলে, যেমন নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দাম থেকে শুরু করে আমাদের ব্যক্তিগত জীবনে যা যা প্রয়োজন সবকিছুর দাম বৃদ্ধি পেয়েছে তিন গুণ। যেখানে আমাদের বেতন বৃদ্ধি পেয়েছে জুলাই মাসে মূল বেতনের ৫%। আমরা যারা প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক তারা বেশির ভাগই নিম্ন-মধ্যবিত্ত পরিবারের সদস্য। আমাদের বেতনের উপর পুরো পরিবার নির্ভরশীল। এমতাবস্থায় শিক্ষকদের প্রতিটি দিন কাটছে হতাশায়।

আমরা শিক্ষক আমাদের মর্যাদার কথা বাদ দেন, আমাদের বর্তমান পরিস্থিতি খুবই নাজুক। আমাদের যে বেতন তা দিয়ে বর্তমান সময়ের প্রেক্ষাপটে চলা কঠিন হয়ে পড়েছে।

আর মর্যাদার দিক থেকে আমাদের থেকে কম যোগ্যতা সম্পন্ন লোকদের বেতন গ্রেড বেশি। যেমন, উপসহকারী কৃষি অফিসার, উপসহকারী প্রকৌশলী, নার্সিং কর্মকর্তা, ইউনিয়ন পরিষদ সচিব, উচ্চমান সহকারী এমনকি বিভিন্ন সেক্টরে ড্রাইভার পর্যন্ত আমাদের থেকে বেশি গ্রেডে বেতন পাচ্ছে।

উন্নত ও উন্নয়নশীল অন্যান্য দেশের দিকে তাকালে দেখি সব দেশেই শিক্ষকদের বেতন বেশি।

আমরা জানি ও বলে থাকি শিক্ষাই জাতির মেরুদণ্ড। একটি জাতি ও দেশের উন্নতি নির্ভর করে করে সে জাতি কতটা শিক্ষিত।

আর যারাই জাতির মেরুদণ্ড গড়বে, মেরুদণ্ড রক্ষার জন্য কাজ করবে তাদেরই যদি মেরুদণ্ড ভাঙা থাকে তাহলে অন্যের মেরুদণ্ড কেমনে গড়বে!

মেধাবীরা এসে শিক্ষকতা পেশায় থাকতে চান না কারণ শিক্ষকতা পেশায় মর্যাদা পরিমাপের গ্রেড ও বেতন কাঠামো খুবই কম যা দিয়ে আত্মসম্মান ও আর্থিক সচ্ছলতার সাথে চলা কঠিন হয়ে পড়েছে। আর যদি মেধাবী না থাকে তাহলে শিক্ষার মান কিভাবে ভালো হবে?

অনেকেই উচ্চতর ডিগ্রি নিয়ে শিক্ষকতা পেশায় যোগদান করে নিজেদের বেকারত্বের অভিশাপ মোচনের জন্য চেষ্টা করে। কিন্তু গ্রেড ও বেতন নিয়ে হিসেব করলে হতাশায় ভোগেন। ফলে তার অর্জিত মেধাটা ছাত্র-ছাত্রীদের দিতে পারেন না।

একটি দেশ, একটি জাতি বিনির্মানে যদি শিক্ষার ভূমিকা সবচেয়ে বেশি থাকে তাহলে শিক্ষকদের ও শ্রেষ্ঠ মর্যাদা দিতে হবে। আমি যদি ভালো কাজ করে স্বীকৃতি না পাই তাহলে আমার দ্বারা কি সব সময় ভালো কাজ করা সম্ভব? কিছু পেতে হলে কিছু দিতে হয়। এটাই নিয়ম।

পরিশেষে দ্বায়িত্বশীল কর্তৃপক্ষের কাছে বিনীত অনুরোধ করবো দেশের শিক্ষার মানকে বৃদ্ধি করতে, মেধাবীরা যাতে শিক্ষা খাতে থাকে সেজন্যই প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকদের ১০ম গ্রেডের জোর দাবি জানাচ্ছি।

লেখক: মোঃ মাসুমুর রহমান

সহকারী শিক্ষক, আহুতিয়া আলীমউদ্দিন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়

পাকুন্দিয়া, কিশোরগঞ্জ