ইসলামী বইমেলায় বিআইআইটির স্টলে গবেষণামূলক বইয়ের সমাহার
নিজস্ব প্রতিবেদক প্রকাশ: ২০২২-১১-০৩ ২১:২২:০০
বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের দক্ষিণ গেটে ইসলামিক ফাউন্ডেশন আয়োজিত ইসলামী বই মেলায় এবার বেচাকেনা বেড়েছে। মেলায় প্রতিদিনই ক্রেতাদের ভিড় লক্ষ্য করা যাচ্ছে। বিশেষ করে ছুটির দিনে মেলায় ক্রেতাদের উপচেপড়া ভিড় দেখা যায়। এর মধ্যে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের বিখ্যাত স্কলারদের বইয়ের সমাহার থাকায় বিআইআইটির স্টল ক্রেতাদের আলাদা নজর কেড়েছে।
গত ৮ অক্টোবর থেকে বায়তুল মোকাররমে শুরু হয়েছে মাসব্যাপী ইসলামী বই মেলা। মেলায় মোট ৬৪টি স্টল স্থান পেয়েছে। প্রতিদিনি সকাল ১০ টা থেকে রাত ৮ টা পর্যন্ত মেলায় বেচাকেনা চলে। আগামী ৭ নভেম্বর পর্যন্ত মেলা চলার কথা রয়েছে। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় মেলা চত্তর ঘুরে দেখা যায়, মেলায় ক্রেতাদের ব্যাপক ভিড়। মাদ্রাসার শিক্ষক-শিক্ষার্থীর পাশাপাশি ইসলামী বইয়ের সব শ্রেণী-পেশার পাঠক মেলায় আসছেন। বইমেলাকে ঘিরে আশেপাশে ভ্রাম্যমান পোশাক, জায়নামাজ-আতরের দোকানগুলোতেও বিক্রি বেড়েছে। ফাতেমা কোরআন মহল স্টলের বিক্রেতা শাহাজালাল বলেন, এবারের মেলায় বই বিক্রি বেশ ভালো হচ্ছে। শুধু শুক্রবার নয় সবদিনই মেলায় ক্রেতারা আসছেন। তারা সব ধরনের বই কিনছেন। মেলায় ৩৫ থেকে ৫০ শতাংশ পর্যন্ত ছাড় দেয়া হচ্ছে বলেও তিনি জানান।
বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ইসলামিক থট (বিআইআইটি) এর পাবলিকেশন্সের স্টলে দেখা যায়, বিশ্বের বিভিন্ন বিখ্যাত স্কলারদের বই। এর মধ্যে ইংরেজি ভাষার বইও রয়েছে। আবার পাঠকদের জন্য সহজবোধ্য করতে অনেক বই বাংলায় অনুবাদ করা হয়েছে। মেলার এ স্টলে আসা একটি কওমী মাদ্রাসার শিক্ষক মো: আব্দুল্লাহ বলেন, বিআইআইটির স্টলে যে বই পাওয়া যায় তাতে ইসলামের বৈশ্বিক ধারণা পাওয়া যায়। এজন্য এবারের বইমেলায় এ স্টল থেকে আমি বেশ কয়েকটি বই কিনেছি। আজ আরো কিছু বই কেনার জন্য এসেছি।
বৃহস্পতিবার এ স্টলে আসেন বিশিষ্ট গবেষক ও কবি মুসা আল হাফিজ। তিনি বলেন, বিআইআইটির স্টলের বেশিরভাগ বই আর্ন্তজাতিক মানের। বিশ্বের বিভিন্ন দেশের বিশিষ্ট লেখক, বুদ্ধিজীবীদের বুদ্ধিবৃত্তিক, গবেষণামূলক, চিন্তার নানা মাত্রার সাথে বাংলাদেশের পাঠকদের পরিচয় করিয়ে দিচ্ছে তারা। এভাবে প্রতিনিয়ত পাঠকদের মন জাগানো ও চিন্তাকে সম্মৃদ্ধ করছে বিআইআইটি। পাঠককে তার নিজের জায়গা থেকে আরো উচুস্তরে উঠিয়ে নেয়ার যে কাজ তা তিন দশক ধরে করে যাচ্ছে এ প্রতিষ্ঠানটি।
বিআইআইটির সিনিয়র সহকারী পরিচালক ডক্টর সৈয়দ শহীদ আহমাদ বলেন, বিআইআইটি বুদ্ধিবৃত্তিক চর্চায় গুরুত্ব দিয়ে থাকে। ১৯৮৯ থেকে আজ অবদি এ ইনস্টিটিউট মেধা, মনন, চিন্তা, গবেষণা ও সর্বোপরি ইসলামি গবেষণাকে যুগোপযোগী ও সর্বমহলে গ্রহণযোগ্য করার জন্য নিয়মিত কাজ করে যাচ্ছে। দেশ-বিদেশের প্রায় চার হাজার গবেষক আমাদের সাথে কাজ করে থাকেন। প্রতিষ্ঠার পর থেকে এ পর্যন্ত এ প্রতিষ্ঠান থেকে কয়েক শ’ গবেষণালদ্ধ মনোগ্রাফ, স্কুল কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ের পাঠ্য সহায়ক বই, বিশ্ববিখ্যাত ইসলামী পণ্ডিতদের লেখা আরবী ও ইংরেজি বইয়ের বাংলা অনুবাদ সহ বিভিন্ন সেমিনার, কর্মশালা ও শিক্ষক প্রশিক্ষণ কার্যক্রম পরিচালনা করে যাচ্ছে।
বিআইআইটির স্টলে পাঠকদের সবচেয়ে বেশি চাহিদার তালিকায় থাকা বইয়ের মধ্যে রয়েছে-অ্যাপ্রোসিং দ্য ডিসিপ্লিন অব ইন্টারন্যাশনাল রিলেশন্স, হজরত আয়েশা (রা.) বিয়ে ও বয়স, মুসলিম মানসে সংকট, উসুল আল ফিকহ, মুসলিম সভ্যতা, ইসলাম ইন বাংলাদেশ, দ্য কুরআন অ্যান্ড পলিটিক্স, ম্যাপিং দ্যা সেক্যুলার মাইন্ড প্রভৃতি।
এনজে