বেড়েছে চাল-আটা-মাছসহ নিত্যপণ্যের দাম

নিজস্ব প্রতিবেদক প্রকাশ: ২০২২-১১-১১ ১৪:৩৭:০৮


রাজধানীর বাজারে বেড়েছে চাল, আটা ও মাছসহ সব ধরনের নিত্যপণ্যের দাম। শুক্রবার (১১ নভেম্বর) রাজধানীর শ্যামলী ও মহাম্মদপুর কাঁচা বাজারে ক্রেতা ও বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে এ তথ্য জানা গেছে।

বাজারে গিয়ে দেখা যায়, মিনিকেট চাল বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি ৭০ থেকে ৭৬ টাকায়। ব্রি-২৮ (মোটা চাল) প্রতি কেজি ৫৯ থেকে ৬২ টাকা, খোলা চিনিগুঁড়া ১৩০-১৪০ টাকা, নাজিরশাইল ৭০ থেকে ৮২ টাকা, লাল চাল ৭৯-৮৫ টাকা, কাটারি আতপ ৭৭ থেকে ৮৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। প্রত্যেক প্রকার চালের দামই বেড়েছে বেড়েছে।

শ্যামলী বাজারে একজন চাল বিক্রেতা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, নতুন ধান কাটা শুরু হয়েছে। বাজারে আসতে আরও কিছুদিন লাগবে। তখন দাম কমবে।

হালিম নামের এক বিক্রেতা বলেন, খুচরা মিনিকেট ৬৯ থেকে ৭৮ (মানভেদে)। নাজিরশাল ৭০-৭৮টাকা। প্রতি কেজি চালে গত সপ্তাহের চেয়ে ১টাকা বেড়েছে। খোলা আটা ৬৮ টাকায় বিক্রি হয়েছে। প্যাকেট আটা প্রতি কেজি বিক্রি হয়েছে ৭৫ টাকা।

বাজারে দেশি মসুরের ডালের কেজি বিক্রি হচ্ছে ১৫০ টাকা। কেজিতে বেড়েছে ১০ টাকা। দুই সপ্তাহ আগে মসুরের ডালের কেজি ছিল ১৪০ টাকা, ইন্ডিয়ান মসুরের ডালের কেজি ১২০ টাকায়। লবণের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৩৮-৪০ টাকা। বাজারে ভোজ্যতেল বিক্রি হচ্ছে ১৭৮-১৮০ টাকায়। খোলা সোয়াবিন তেল ১৫৮-১৬০ টাকা কেজিতে বিক্রির কথা থাকলেও ৭-৮ টাকা বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে।

রাজধানীর খুচরা পর্যায়ে প্রতি কেজি চিনি ১১৫-১২৫ টাকায় বিক্রি হয়েছে। মুদি দোকানি মো. কবির বলেন, কোম্পানি থেকে চিনির সরবরাহ কম। এক সপ্তাহ আগে অর্ডার দিয়েছিলাম আজকে দিয়ে গেলো।

বড় ইলিশ প্রতি কেজি ১৬০০ থেকে ১৯০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। ৭০০ থেকে ৯৫০ গ্রাম ওজনের ইলিশ ৮৫০ থেকে ১২০০ টাকা কেজি, এক হাজার ২০০ থেকে এক হাজার ৫০০ গ্রাম ওজনের ইলিশ প্রতি কেজি ১৩০০ থেকে ১৫০০ টাকা কেজি, ৪০০ থেকে ৪৫০ গ্রাম ওজনের ইলিশ প্রতি কেজি ৪৫০ থেকে ৭৫০ টাকা দরে বিক্রি হয়েছে। এছাড়া আইড় প্রতি কেজি ৫০০ থেকে ৮০০ টাকা, শোল ৫০০ থেকে ৭৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়েছে। তেলাপিয়া ১৭০ ২৩০টাকা কেজি, মাঝারি আকারের রুই ২৯০- ৩৫০ টাকা, বড় আকারের রুই ৫০০-৫৫০ টাকা, গুঁড়া চিংড়ি ৪৫০-৬০০ টাকা, কাঁচকি ৩০০-৪০০টাকা কেজি দরে বিক্রি হতে দেখা গেছে।

এক ক্রেতা বলেন, গত সপ্তাহের চেয়ে এ সপ্তাহে মাছের দাম বেশি মনে হচ্ছে। আমাদের বেতন তো বাড়ছে না। এখন ভালো মাছ কম কিনি।

বাজারে শীতকালীন সবজির সরবরাহ প্রচুর থাকায় দাম কমের দিকে। গোল বেগুন প্রতি কেজি ৫০ থেকে ৬০ টাকা দরে বিক্রি হতে দেখা যায়, যা আগের সপ্তাহে ছিল ৭০ থেকে ৮০ টাকা। পাকা টমেটো ১১০ থেকে ১২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছিল, যা আগের সপ্তাহে ছিল ১২০ থেকে ১৩০ টাকা। এছাড়া ঢেঁড়শ ৫০ থেকে ৬০ টাকা, শিম ৫০ থেকে ৭০ টাকা, মুলা ৩৫-৪৫ টাকা, পটোল ৪০ থেকে ৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়, যা আগের সপ্তাহের তুলনায় কম। লাউ আকারভেদে ৫০-৮০ টাকা, শসা ৮০ থেকে ১০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়। এছাড়া মাঝারি আকারের ফুল কপি ৪০-৬০ টাকা ও আলু ২৮ থেকে ৩৫ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়। কাঁচামরিচ কেজি বিক্রি হচ্ছে ৮০-৯৫টাকায়। এছাড়া কাঁচা কলার হালি বিক্রি হচ্ছে ৩০-৪০ টাকায়। লেবুর হালি বিক্রি হচ্ছে ১০-২০ টাকা।

এক সপ্তাহ আগে বাজারভেদে ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হয়েছে ১৭৫ থেকে ১৮৫ টাকা কেজি দরে। আজও একই দামে বিক্রি হতে দেখা গেছে। তবে কিছু দোকানি সুযোগ বুঝে দাম বেশিও নিচ্ছেন। সোনালি মুরগি ৩০০ থেকে ৩২০ টাকা ও দেশি মুরগি ৪৯০ থেকে ৫৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়েছে।

ডিমের দাম কিছুটা কমেছে। মুরগির লাল ডিম ডজনে কমেছে ৫ টাকা করে। আজ ১৪৫টাকা ডজন বিক্রি হতে দেখা গেছে। এ ছাড়া মুরগির সাদা ডিম ১৪০ টাকা, হাঁসের ডিম ২১৫-২২০ টাকা, দেশি মুরগির ডিম ৩৪০-২৪০ টাকা ডজন বিক্রি হতে দেখা গেছে।

বাজারে গরুর মাংসের কেজি ৬৮০-৭০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। খাসির মাংসের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৯০০-১০০০ টাকায়।

এদিকে টিসিবির দৈনিক বাজার পণ্যমূল্যে দেখা যায়, সাত দিনে প্রতি কেজি মসুর ডাল ৪ দশমিক ২৬ শতাংশ বেশি দরে বিক্রি হয়েছে। কেজিতে আটার দাম বেড়েছে ৬ দশমিক শূন্য ৯ শতাংশ, ময়দা ৭ দশমিক ৪৮ শতাংশ, ভোজ্যতেল সর্বোচ্চ ৭ দশমিক ৫৫ শতাংশ, আদা সর্বোচ্চ ১৯ দশমিক ৫৭ শতাংশ, রসুন ৩ দশমিক শূন্য ৩ শতাংশ, শুকনা মরিচ ২ দশমিক ৭৪ শতাংশ, হলুদ ২ দশমিক ১৭ শতাংশ, ছোলা ৩ দশমিক ১৩ শতাংশ, ধনিয়া ৭ দশমিক ৬৯ শতাংশ, জিরা ৫ শতাংশ এবং প্রতি কেজি লবঙ্গ ২ দশমিক শূন্য ৬ শতাংশ বেশি দামে বিক্রি হয়েছে। প্রতি কেজি চিনির দাম ২ দশমিক ২৭ শতাংশ বেড়েছে। পাশাপাশি কেজিপ্রতি লবণের দাম বেড়েছে ২ দশমিক ৭৪ শতাংশ।

এম জি