শিরোপা কার, ইংল্যান্ড না ওয়েস্ট ইন্ডিজের?

আপডেট: ২০১৬-০৪-০৪ ১১:৫৩:২৭


Samiশুরু আর শেষটায় দারুণ মিল ওয়েস্ট ইন্ডিজের। রেজাল্টের ক্ষেত্রেও যদি তাই হয়, তাহলেতো সোনায় সোহাগা। মুষ্টিবদ্ধ হাত একবার সামনে, আবার পেছনে; ক্যারিবীয়দের অদ্ভুত উদযাপনে মুখরিত হতে পারে কলকাতার ইডেন গার্ডেন স্টেডিয়িাম। শুরুর মতো শেষটাও কি রঙীন হবে গেইলদের? নাকি ক্যারিবীয়দের মুখ বিষণ্ন করে শিরোপা উৎসবে মাতবে ইংলিশ শিবির। সব ফয়সালা হবে রোববার কলকাতার ইডেন গার্ডেনে। টি২০ বিশ্বকাপের ফাইনালে যেখানে মুখোমুখি হবে সাবেক দুই চ্যাম্পিয়ন ওয়েস্ট ইন্ডিজ ও ইংল্যান্ড।

শুরু ও শেষে মহাত্মটা খোলাসা করা যাক। টি২০ বিশ্বকাপের সুপার টেন পর্বে ওয়েস্ট ইন্ডিজের প্রথম ম্যাচ ছিল এই ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে। ১৬ মার্চ ওয়াংখেড়ে স্টেডিয়ামে যেখানে ইংল্যান্ডকে ৬ উইকেটে হারিয়ে বিশ্বকাপ মিশন শুরু করেছির উইন্ডিজ বাহিনী। ৪৮ বলে ১১ ছক্কা ও ৫ চারে ১০০ রানে অপরাজিত ছিলেন ক্রিস গেইল।  আগে ব্যাট করা ইংল্যান্ডের ১৮২ রানও নস্যি ছিল গেইল ঝড়ের কারণে। এরপর নানা চড়াই-উতরাই পেরিয়ে সেই দুটি দলই আবার মুখোমুখি ফাইনালে। প্রথম জয়ের ধারাবাহিকতায় হাঁটবে ওয়েস্ট ইন্ডিজ, নাকি ঘুড়ে দাঁড়িয়ে শিরোপায় চুমু খাবে ইংল্যান্ড, তা সময়ই বলে দেবে।

সুপার টেন পর্বে দুই দলের জয়ও সমান, তিনটি করে, এক হার। ইংল্যান্ড হেরেছিল এই ওয়েস্ট ইন্ডিজের কাছে। আর ওয়েস্ট ইন্ডিজ হেরেছিল পুঁচকে আফগানিস্তানের কাছে। কিন্তু সেই ওয়েস্ট ইন্ডিজ সেমিফাইনালে ভারতের দেয়া ১৯৩ রানের টার্গেট ছুয়েছিল দুই বল হাতে রেখে। অন্যদিকে প্রথম সেমিফাইনালে অপ্রতিরোধ্য গতিতে এগিয়ে চলা নিউজিল্যান্ডকে সাত উইকেটে পর্যদুস্ত করেছিল ইংল্যান্ড। রোববারের ফাইনালে তাই ফেবারিট দুই দলই। যারা ভালো খেলবে জিতবে তারাই।

ফাইনালের আগে দুজনের মুখেই হাসি। শেষটা কে হাসবেন তাই দেখার বিষয়

ভারতের সঙ্গে ম্যাচে গেইল ছিলেন সুপার ফ্লপ। প্রথম ম্যাচে সেঞ্চুরির পর গেইল আর জাগতে পারেনি। তবে গেইল ছাড়াও ক্যারিবীয় শিবির অপ্রতিরোধ্য, তা সেমির ম্যাচে প্রমাণ করেছে লেন্ডল সিমন্স, চার্লেস ও রাসেল। তবে ফাইনালে গেইল যদি জেগেই যায়, লড়াইটা হবে মনমুগ্ধকর। ফাইনালে দুটি ছক্কা হাঁকাতে পারলেই গেইল ছুবেন প্রথম ক্রিকেটার হিসাবে আন্তর্জাতিক টি২০ ক্রিকেটে ১০০র মাইলফলক। এখন তার ছক্কার সংখ্যা ৯৮। তবে ইংল্যান্ডের জন্য বড় ভরসা রুট, রয় ও বাটলারের দুরন্ত ফর্ম। আর বল হাতে উইলে, জর্দান ও মঈন আলীর আত্ববিশ্বাস বাড়তি প্রেরণা মরগান শিবিরে।

তবে ফাইনালের আগে পরিসংখ্যানের বিচারে যোজন যোজন এগিয়ে থাকছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ শিবির। আন্তর্জাতিক টি২০ ক্রিকেট এই দুটি দল মুখোমুখি হয়েছে মোট ১৩ বার। তাতে ওয়েস্ট ইন্ডিজের জয় নয়টিতে। এর মধ্যে তিনটিতেই জয় টি২০ বিশ্বকাপে। ওয়েস্ট ইন্ডিজের কাছেই টি২০ ক্রিকেটে ইংল্যান্ডের সবচেয়ে বেশী হারের রেকর্ড এটি। টি২০ বিশ্বকাপে দুই দলই জিতেছে একবার করে শিরোপা। ২০১০ সালে ইংল্যান্ড, দুই বছর পর শ্রীলঙ্কায় অনুষ্ঠিত বিশ্বকাপে শিরোপা জেতে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। টি২০ বিশ্বকাপের ইতিহাসে এই প্রথম কোন দল দ্বিতীয়বারের মতো শিরোপা জিততে চলেছে।

অনুশীলনে ফুরফুরে মেজাজে গেইলরা

ফাইনাল বলেই ম্যাচটিতে তুমুল প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে বলে ধারণা ইংল্যান্ড অধিনায়ক ইয়ন মরগানের। তিনি বলেন, ‘আমরা বাস্তব অবস্থা অনুধাবন করছি। আমরা জানি এটা আর দশটা সাধারণ ম্যাচের মতো হবে না। এমনকি সেমিফাইনালের চেয়েও। তবে সেরাটা দেয়ারই চেষ্টা করব আমরা। আমরা জানি ওয়েস্ট ইন্ডিজ কেমন দল। ফলে এখানে জিততে হলে কী করতে হবে, তা সবারই জানা।’

অন্যদিকে ফাইনালে জিততে আত্ববিশ্বাসী ওয়েস্ট ইন্ডিজের অধিনায়ক ড্যারেন সামি। তিনি বলেন, ‘আমরা ইতোমধ্যে ইংল্যান্ডের শক্তিমত্তা দেখেছি প্রথম ম্যাচে। তাদের বেশকজন ম্যাচ উইনার আছেন। তবে আমাদেরও আছে। আমি বিশ্বাস করি, আমাদেরকে শুধু আমরাই হারাতে পারি। ফাইনালে জয়ের আশাই আছি। সেই মানসিকতা নিয়েই ফাইনাল ম্যাচে নামব’।

ইংল্যান্ড একাদশ (সম্ভাব্য): জ্যাসন রয়, আলেক্স হেলস, জো রুট, ইয়ন মরগান, জস বাটলার, বেন স্টোকস, মঈন আলী, ক্রিস জর্দান, আদিল রশিদ, ডেভিড উইলে, লিয়াম প্লাংকেট।

ওয়েস্ট ইন্ডিজ (সম্ভাব্য): ক্রিস গেইল, জনসন চার্লেস, লেন্ডল সিমন্স, মারলন স্যামুয়েলস, দিনেশ রামদিন, ডুয়াইন ব্রাভো, আন্দ্রে রাসেল, ড্যারেন সামি, কার্লোস ব্রাফেট, সুলেমান বেন, স্যামুয়েল বদ্রি।