বৃহস্পতিবার শুরু অর্থসূচক ক্যাপিটাল মার্কেট এক্সপো
পুঁজিবাজার ডেস্ক আপডেট: ২০২৩-০১-০৩ ১৭:১৬:০৯
পুঁজিবাজারের ব্র্যান্ডিং ও সচেতনতা বাড়াতে আগামী বৃহস্পতিবার থেকে শুরু হচ্ছে তিন দিনব্যাপী অর্থসূচক ক্যাপিটাল মার্কেট এক্সপো-২০২৩।
মঙ্গলবার (৩ ডিসেম্বর) রাজধানীর পুরানাপল্টনের ক্যাপিটাল মার্কেট জার্নালিস্ট ফোরাম (সিএমজেএফ) মিলনায়তনে এক সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে এ তথ্য জানানো হয় ।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে অর্থসূচকের সম্পাদক জিয়াউর রহমান বলেন, এবার পঞ্চমবারের মতো ক্যাপিটাল মার্কেট এক্সপো অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। বিনিয়োগ শিক্ষার প্রসার এবং পুঁজিবাজারের উন্নয়নে ভূমিকা রাখার লক্ষ্যে ২০১৫ সালে অর্থসূচকের উদ্যোগে এই এক্সপো শুরু হয়। মাঝখানে জাতীয় নির্বাচন এবং করোনাভাইরাস অতিমারির কারণে ৩ বছর এই এক্সপো অনুষ্ঠিত হয়নি।
আগামী ৫ জানুয়ারি, বৃহস্পতিবার রাজধানীর কাকরাইলের আইডিইবি ভবনে এবারের এক্সপো শুরু হবে। এদিন সকাল ১১.০০ এ মাননীয় বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি এমপি প্রধান অতিথি হিসেবে এই এক্সপো উদ্বোধন করবেন। এই অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি থাকবেন বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) এর চেয়ারম্যান প্রফেসর শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম। এতে সম্মানিত অতিথি হিসেবে হিসেবে উপস্থিত থাকবেন ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের চেয়ারম্যান ইউনুসুর রহমান, চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের চেয়ারম্যান আসিফ ইব্রাহীম, বাংলাদেশ পাবলিকলি লিস্টেড কোম্পানিজ অ্যাসোসিয়েশনের (বিএপিএলসি) প্রেসিডেন্ট আনিস উদ দৌলা, বাংলাদেশ মার্চেন্ট ব্যাংকার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিএমবিএ) প্রেসিডেন্ট মোঃ ছায়েদুর রহমান এবং ডিএসই ব্রোকার্স অ্যাসোসিয়েশন (ডিবিএ) এর প্রেসিডেন্ট রিচার্ড ডি রোজারিও।
আগামী ৬ জানুয়ারি, শুক্রবার সকাল ১০.৩০ এ প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) এর কমিশনার ড. শেখ শামসুদ্দিন আহমেদ, অনুষ্ঠানে সম্মানিত অতিথি হিসেবে হিসেবে উপস্থিত থাকবেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এর অধ্যাপক ড. এম সাদেকুল ইসলাম।
আগামী ৭ জানুয়ারি, শনিবার সন্ধ্যা ৬টায় অনুষ্ঠেয় এক্সপোর সমাপনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন। বিশেষ অতিথি থাকবেন বিএসইসির কমিশনার ড. শেখ শামসুদ্দিন আহমেদ।
এক্সপোতে বিএসইসি, সিডিবিএল, বিআইসিএম, বিএএসএম, আইসিএবি, আইসিএমএবি, আইসিএসবি, ব্রোকারহাউজ, মার্চেন্ট ব্যাংক, লিস্টেড কো্ম্পানি, সম্পাদ ব্যবস্থাপনা প্রতিষ্ঠানসহ ৩৫টির বেশি প্রতিষ্ঠান অংশ নিচ্ছে।
তিনদিনের এক্সপোতে উদ্বোধনী ও সমাপনী অনুষ্ঠানের বাইরে বিভিন্ন বিষয়ের উপর চারটি সেমিনার অনুষ্ঠিত হবে। এসব সেমিনারে বিএসইসি, ডিএসই ও সিএসইর শীর্ষ কর্মকর্তা, খ্যাতনামা স্টক ব্রোকার, মার্চেন্ট ব্যাংকার, অ্যাসেট ম্যানেজার, শিক্ষাবিদ, অর্থনীতিবিদ, চার্টার্ড অ্যাকাউন্টেন্ট, কস্ট অ্যান্ড ম্যানেজমেন্ট অ্যাকাউন্টেন্ট, চার্টার্ড ফিন্যান্সিয়াল এনালিস্ট প্রমুখ অংশ নেবেন।
তিনি আরও বলেন, একটি বিশেষ পরিস্থিতির মধ্যে এবারের ক্যাপিটাল মার্কেট এক্সপো অনুষ্ঠিত হচ্ছে। আপনারা জানেন, প্রথমে করোনাভাইরাস অতিমারি এবং পরে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের আঘাতে বিশ্ব অর্থনীতি টালমাটাল। কালো মেঘের ছায়া আমাদের আকাশেও। আমাদের অর্থনীতিতেও দেখা যাচ্ছে নানা চাপ। তবে অর্থনীতির চেয়ে বেশি নাজুক অবস্থা আমাদের পুঁজিবাজারের। গত দুই দশকে এতটা নাজুক অবস্থায় কখনো ছিল না এই বাজার। যেখানে দৈনিক গড়ে এক হাজার কোটি টাকা লেনদেন না হলে ব্রোকারহাউজ ও স্টক এক্সচেঞ্জের পরিচালন ব্যয় উঠে আসে না, সেখানে লেনদেন নেমে এসেছে ২শ কোটি টাকায়। সেকেন্ডারি বাজার গতিশীল না থাকায় মার্চেন্টগুলোর প্রধান যে কাজ, বাজারে বেশি বেশি নতুন কোম্পানির শেয়ার নিয়ে আসা, সেটিও ব্যাহত হচ্ছে। তবে সবচেয়ে দুর্দশায় আছেন বিনিয়োগকারীরা। ব্যক্তি বিনিয়োগকারী, প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারী, সম্পদ ব্যবস্থাপনা প্রতিষ্ঠান-সবারই নাজুক অবস্থা। বাজারের এই অবস্থার পেছনে বৈশ্বিক অবস্থা অনেকাংশে দায়ী। তবে আরও কিছু বিষয় হয়তো আছে। কারণ আমাদের অর্থনীতিতে বৈশ্বিক পরিস্থিতির প্রভাব যতটা পড়েছে, পুঁজিবাজারের অবস্থা তারচেয়ে নাজুক। অন্যদিকে বিদ্যমান বৈশ্বিক অবস্থার মধ্যেও আমরা ভারতসহ বেশ কিছু দেশের পুঁজিবাজারে ভাল পারফরম্যান্স দেখেছি। পুঁজিবাজারের বর্তমান অবস্থার উত্তরণে সংশ্লিষ্ট ইস্যুগুলো নিয়ে আলোচনা খুবই জরুরি। কারণগুলো চিহ্নিত করা গেলে করণীয় ঠিক করা সহজ হবে। ক্যাপিটাল মার্কেট এক্সপোতে অনুষ্ঠেয় বিভিন্ন সেমিনারে অর্থনীতি ও পুঁজিবাজারের নানা ইস্যু নিয়ে আলোচনা হবে।
অন্যদিকে এক্সপোতে অংশগ্রহণকারী প্রতিষ্ঠানগুলো তাদের স্টলে তাদের পণ্য ও সেবা প্রদর্শন করবে। পুঁজিবাজার যে খারাপ সময় পার করছে, তা সাময়িক। অবশ্যই এই বাজার তার গতিশীলতা ফিরে পাবে। এর জন্য সব স্টেকহোল্ডারকে সমন্বিতভাবে কাজ করতে হবে। সামগ্রিক বাজারের গভর্ন্যান্সের মান বাড়াতে হবে। মানুষের মধ্যে পুঁজিবাজার ও অর্থনীতি নিয়ে অতিমাত্রায় যে আতঙ্ক বিরাজ করছে, তা কমানোর চেষ্টা করতে হবে। পাশাপাশি, বিনিয়োগ শিক্ষাকেও জোরার করতে হবে। কারণ বিনিয়োগকারীরা আরও সচেতন এবং সতর্ক হলে দুষ্টচক্র সহজে কারসাজি করতে পারবে না। অন্যদিকে হুজুগ ও গুজব কমে আসবে। এসব বিষয়ে এবারের এক্সপো কিছুটা ভূমিকা রাখবে বলে আমাদের বিশ্বাস।
অর্থসূচক ক্যাপিটাল মার্কেট এক্সপো ২০২৩ এ কো-পার্টনারদের মধ্যে আছে- বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ক্যাপিটাল মার্কেট (বিআইসিএম), বাংলাদেশ একাডেমি ফর সিকিউরিটিজ মার্কেট (বিএএসএম), ইনস্টিটিউট অব কস্ট অ্যান্ড ম্যানেজমেন্ট অ্যাকাউন্টেন্ট অব বাংলাদেশ (আইসিএমএবি)।
ক্যাপিটাল মার্কেট এক্সপো ২০২৩ সকাল ১০টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত সবার জন্য খোলা থাকবে।এক্সপোতে প্রবেশের জন্য কোনো টিকেট লাগবে না । উল্টো প্রবেশ কূপনের র্যাফেল ড্রতে থাকবে মূল্যবান সকল পুরস্কার।
সংবাদ সম্মেলনে এক্সপোর পার্টনার বাংলাদেশ মার্চেন্ট ব্যাংকার্স অ্যাসোসিয়েশন (বিএমবিএ) প্রেসিডেন্ট মো. ছায়েদুর রহমান ও ডিএসই ব্রোকার্স অ্যাসোসিয়েশন (ডিবিএ) প্রেসিডেন্ট রিচার্ড ডি রোজারিও উপস্থিত ছিলেন।
আই এইচ /এসকেএস