ভাঙা হচ্ছে এরশাদ শিকদারের ‘স্বর্ণকমল’

জেলা প্রতিনিধি প্রকাশ: ২০২৩-০১-০৫ ১০:১২:৫১


অবশেষে ভেঙে ফেলা হচ্ছে খুলনার এরশাদ শিকদারের রহস্যময় বাসভবন সেই ‘স্বর্ণকমল’। স্ত্রী-সন্তানদের সিদ্ধান্তে মঙ্গলবার (৪ জানুয়ারি) থেকে ভাঙা হচ্ছে ভবনটি। এটি খুলনা মহানগরীর মজিদ সরণীতে অবস্থিত। ফাঁসির রশিতে ঝুলে মৃত্যুদণ্ড হওয়া ভয়ঙ্কর খুনি এরশাদ শিকদারকে জড়িয়ে স্বর্ণকমলে রয়েছে নানা ঘটনা-রটনা।

শোনা যাচ্ছে- অর্থের প্রয়োজনে বড় স্ত্রী খোদেজা বেগম ও তার সন্তানরা আলোচিত স্বর্ণকমলসহ ৫ কাঠা জমি বিক্রি করে দিয়েছেন। যেখানে বহুতল বিশিষ্ট ভবন তৈরি করা হবে।

২০০৪ সালের ১০ মে খুলনা জেলা কারাগারে ফাঁসি কার্যকরের মধ্যে দিয়ে এরশাদ শিকদার অধ্যায়ের পরিসমাপ্তি ঘটে। কিন্তু তাঁর প্রিয় ‘স্বর্ণকমল’ ঘিরে তৈরি হয় নানা রহস্য। প্রায় দুই দশক পরও দূর-দুরান্ত থেকে ছুটে আসতো মানুষ। এটি ছিল এরশাদ শিকদারের বাসভবন। এই ভবণ নির্মাণ, স্থাপত্যশৈলী, ভবন অভ্যন্তরে ব্যবহৃত সরঞ্জাম নিয়েও ছিল আলোচনা। এবার হয়তো সেই অধ্যায়ের যবনিকা ঘটবে। ভাঙা পড়ছে রহস্য ঘেরা স্বর্ণকমল।

বিলাসবহুল বাড়ি ‘স্বর্ণকমল’ এরশাদ শিকদারের বহু অপকর্মের সাক্ষী। বাড়িটিতে গোপন কুঠরি এবং অস্ত্র ভান্ডারের কথাও শোনা যায়। শোনা যায়, ওই বাড়ির বিভিন্ন গোপন স্থানে নগদ কয়েক কোটি টাকা লুকানো ছিল। প্রায়ই জলসা বসতো বাড়িতে। শহরের নামিদামি ব্যক্তিরা যেতেন সেখানে। এক সময় সাধারণ মানুষের খুব আগ্রহের জায়গা ছিল ‘স্বর্ণকমল’। আলোচনা-সমালোচনার কেন্দ্রবিন্দু ছিল ওই বাড়িটি। বিশেষ করে ২০০৪ সালের ১০ মে খুলনা জেলা কারাগারে এরশাদ শিকদারের ফাঁসি কার্যকর করার পর জৌলুশ হারানো বাড়িটি ছিল রহস্যে ঘেরা।

কথিত আছে, বাড়িটি বানানোর সময় এরশাদ শিকদারের হাতে খুন হন নির্মাতা। বাড়ি নির্মাণের গোপন বিষয়গুলো যাতে কেউ জানতে না পারে এ জন্য তাঁকে হত্যা করা হয়। আবারও কেউ কেউ বলে থাকেন, এ বাড়িটি নির্মাণের সময় কিছু অংশ অন্যের জমিতে ঢুকে যাওয়ায় নির্মাতাকে খুন করে এরশাদ শিকদার।

বাড়ির সামনে নামফলকটি খুলে ফেলা হয়েছিল অনেক আগে। ১৮ বছর আগের সেই জৌলুশ না থাকলেও এখন মানুষ ভবনটি দেখতে আসতো। কিন্তু সম্প্রতি ভবনের একাংশ ভেঙে ফেলার সিদ্ধান্ত নেয় এরশাদ শিকদারের ছেলেরা। সেই সিদ্ধান্তের পর বাড়ির ভিতরে ভাঙার কাজ শুরু হয়।

কর্মরত শ্রমিক আজিজুল, রহমানসহ অন্যরা জানান, স্বর্ণ কমলের অর্ধেক ভেঙে ফেলা হচ্ছে। জমির মালিকরা সেখানে বহুতল ভবন করবেন। এ কারণে গত কয়েক দিন ধরে ভাঙার কাজ চলছে।

এরশাদ শিকদারের মেজ ছেলে কামাল শিকদার জানান, কেডিএ’র ১০ কাঠা জমির ওপর তাদের পুরাতন তিন তলা এবং আরেকটি দুই তলা বাড়ি ছিল। তারা কয়েকদিন আগে পুরাতন তিন তলা ভবনটি শ্রমিক দিয়ে ভেঙে ফেলেছেন। এখন দুই তলা ভবনটির অর্ধেকের মতো অংশ ভাঙা হচ্ছে। ভেঙে ফেলা ৫ কাঠা জমির ওপর ১০ তলা ভবন নির্মাণের পরিকল্পনা রয়েছে।

এম জি