ঢাবিতে ক্রিকেট টুর্নামেন্টে সংঘর্ষ, আহত ২০
স্পোর্টস ডেস্ক প্রকাশ: ২০২৩-০১-১০ ১৭:৩০:০৭
আন্তঃবিভাগ ক্রিকেট টুর্নামেন্ট-২০২৩ এর ফাইনাল ম্যাচে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) সমাজকল্যাণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউট এবং মার্কেটিং বিভাগের শিক্ষার্থীদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে অন্তত ২০ শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন।
সোমবার (৯ জানুয়ারি) বিকেল ৪টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় খেলার মাঠে এ ঘটনা ঘটে।
আহতরা ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল (ঢামেক) থেকে প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছেন। পরে সেখান থেকে কয়েকজনকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিকেল সেন্টারে চিকিৎসা নিচ্ছেন। আহতদের মধ্যে মার্কেটিং বিভাগের চারজন এবং ১৬ জন সমাজকল্যাণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থী।
আহত সমাজকল্যাণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থীরা হলেন- স্নাতকোত্তরের শিক্ষার্থী নাজমুস সাকিব শান্ত, মামুন রেজা, জীম নাজমুল, মিনহাজুল ইসলাম ফাহিম, চতুর্থ বর্ষের নাঈম হাসান অয়ন, কৃপা দাস, ফারহান মুরসালিন অলিভ, জামিল হোসেন জীম, তৃতীয় বর্ষের মশিউর রহমান মুন্না, রিশাদ সরকার, এনামুল হক পলাশ, অয়ন সমাদ্দার, মাসফিউর রহমান, দ্বিতীয় বর্ষের তপন, প্রথম বর্ষের মেহেদী হাসান ও রেদোয়ান। এদের মধ্যে নাজমুস সাকিব শান্ত, জীম নাজমুল, মশিউর রহমান মুন্না ও মেহেদী হাসান গুরুতর আহত হয়েছেন।
মার্কেটিং বিভাগের চারজন হলেন- ২৭ ব্যাচের মো. দেলোয়ার হোসেন, জুলফিকার মাহমুদ মুন্না, ইমতিয়াজ হোসেন ও ২৬ ব্যাচের আরাফ মাহমুদ।
এদিকে আহতদের দেখতে সোমবার রাতেই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিকেল সেন্টারে যান উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান।
ভুক্তভোগী ও প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, সমাজকল্যাণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউট এবং মার্কেটিং বিভাগের মধ্যে ফাইনাল খেলা চলছিল। মার্কেটিং বিভাগের এক শিক্ষার্থী আউট হয়েও মাঠ থেকে বের হয়ে যেতে অস্বীকৃতি জানান।
সমাজকল্যাণের শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, মার্কেটিং বিভাগের শিক্ষার্থীরা খেলার শুরু থেকেই তাদের বিভিন্ন ভাষায় গালিগালাজ করেন। সিনিয়ররা বিষয়টি সমাধানের চেষ্টা করলেও মার্কেটিং বিভাগের শিক্ষার্থীরা তাদের ওপর আক্রমণাত্মক হলে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।
সমাজকল্যাণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থী মিনহাজুল ইসলাম ফাহিম জানান, খেলার শুরু থেকেই মার্কেটিং বিভাগের শিক্ষার্থীরা আমাদের সঙ্গে খুব খারাপ ব্যবহার করেন। তাদের এক খেলোয়াড় আউট হয়, আম্পায়ারও আউট দেন, কিন্তু তারা আম্পায়ারের আউট মানতে নারাজ। এর মধ্যে ওদের যারা মাঠের বাইরে দাঁড়িয়ে ছিলেন তারা আমাদের অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করেন। একপর্যায় তারা আমাদের ওপর আক্রমণাত্মক হয়ে যায়। আমার হাতে, মাথায় আঘাত করে। এরপরও আমাদের সিনিয়ররা পরিস্থিতি শান্ত করার চেষ্টা করে, কিন্তু কোনো কাজ হয়নি।
আরেক শিক্ষার্থী মামুন রেজা বলেন, তারা আমাদের সঙ্গে যে ব্যবহার করেছে তা কোনো মানুষ করতে পারে না। ইট দিয়ে শান্ত ভাইয়ের মাথায় আঘাত করেছে। আমার হাতে মারা হয়েছে। আমাদের এক জুনিয়র কালো রঙের ছিলেন, এজন্য তাকে উপহাস করে কালু বলে ডাকে তারা। এটা কি কোনো সভ্য মানুষের কাজ হতে পারে?
সমাজকল্যাণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের পরিচালক অধ্যাপক ড. মো. গোলাম আজম বলেন, এটা আসলে কোনোভাবেই কাম্য নয়। তাদের কিছু ছেলে-মেয়ে উস্কানিমূলক কথা বলেছিলেন। আমাদের অনেক শিক্ষার্থীকে আহত করা হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের উচিত খেলার সময় এরকম ঘটনা যেন না ঘটে সেরকম ব্যবস্থা নেওয়া।
অন্যদিকে, মার্কেটিং বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. এবিএম শহিদুল ইসলাম এই ঘটনাকে সমাজকল্যাণ ইনস্টিটিউটের সৃষ্টি করা গণ্ডগোল বলে মন্তব্য করেন। তিনি বলেন, তারা হেরে যাচ্ছে, এজন্য খেলার শেষ দিকে তারা গণ্ডগোল শুরু করে। খারাপ ভাষা ব্যবহার বিষয়ে তিনি বলেন, এটা তো খেলারই একটা অংশ। আম্পায়ার এটা তাদের বলে দিয়েছেন।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. একেএম গোলাম রব্বানী বলেন, ঘটনাটি সত্য। এটি কাম্য নয়। খেলার সময় অনিয়ন্ত্রিত উত্তেজনার বহিঃপ্রকাশ এটি। আমরা এ ঘটনার কারণ অনুসন্ধান ও প্রতিকারে কাজ করছি।
আই এইচ