‘কালো টাকা ‌নিয়ে প্রশ্ন থাকায় ‌বি‌নিয়োগে আস্থাহীনতা’

আপডেট: ২০১৬-০৪-১০ ১৮:৪৮:২৬


 

Rehab1460269091অর্থনৈতিক প্রতিবেদক : অপ্রদ‌র্শিত অর্থ (কা‌লো টাকা) বি‌নি‌য়ো‌গে প্রশ্ন থাকার কারণে আবাসন খা‌তে বি‌নি‌য়ো‌গে আস্থাহীনতা তৈ‌রি হ‌য়ে‌ছে ব‌লে ম‌নে কর‌ছে রিয়েল এস্টেট অ্যান্ড হাউজিং অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (রিহ্যাব)।

সংগঠন‌টি আগামী ২০১৬-১৭ অর্থবছরের জাতীয় বাজেটে আবাসন খা‌তে বিনা প্রশ্ন বা শর্তে আগামী ১০ বছর কালো টাকা বিনিয়োগের সুযোগ চায়।

রোববার রাজধানীর হো‌টেল সোনারগাঁ‌য়ে আস‌ছে বা‌জেট উপল‌ক্ষে এক সংবাদ সম্মেল‌নে এ দা‌বি তু‌লে ধ‌রেন রিহ্যা‌বের সভাপ‌তি আলমগীর শামসুল আলা‌মিন।

তিনি বলেন, অর্থ পাচার রোধে কোনো শর্তছাড়া আবাসন খাতে অপ্রদর্শিত অর্থ বিনিযোগের সুযোগ প্রদান করা প্রযোজন। আগামী ১০ বছরের জন্য এ নীতি গ্রহণ করলে দেশে বিশাল উন্নয়ন সম্ভব। আমরা চাই, কালো টাকার উৎস বন্ধ করুক সরকার। কিন্তু ব্যবহারের ক্ষেত্রে ১০ বছরের জন্য কোনো প্রশ্ন না করুক।

আলমগীর শামসুল আলামিন আরও বলেন, প্রবাসীদের দেশে ফেরা, ব্যাংকের উচ্চ সুদ হার, নতুন জমি সংকট, নির্মাণ সামগ্রীর উচ্চমূল্য, নতুন গ্যাস সংযোগ সমস্যাসহ বিভিন্ন কারণে আবাসন খাতের বিক্রি ৮০ শতাংশ কমেছে এবং উদ্যোক্তাদের নতুন প্রকল্প গ্রহণের হার কমেছে ৯০ শতাংশ।

ওয়াশিংটন ভিত্তিক গবেষণা প্রতিষ্ঠান গ্লোবাল ফাইন্যান্সিয়াক ইন্টেগ্রিটি (জিএফআই)-এর প্রতিবেদনের তথ্য তুলে ধরে তিনি বলেন, আমদানি-রফতানির সময় পণ্যের প্রকৃত মূল্য গোপন করার মাধ্যমেই সব থেকে বেশি অর্থ পাচার করা হয়।

বাংলাদেশ থেকে ২০১৩ সালে ৯৬৬ কোটি ৬০ লাখ ডলার পাচার হয়েছে। টাকার অঙ্কে এর পরিমান ৭৬ হাজার ৩৬১ কোটি ৪০ লাখ টাকা। পাচার হওয়া এই অর্থ আগের বছের তুলনায় ৩৩ দশমিক ৭৯ শতাংশ বেশি।

এই অর্থ পাচার রোধে কোন শর্থছাড়া আবাসন খাতে অপ্রদর্শিত অর্শ বিনিয়োগের সুযোগ দেওয়া প্রয়োজন বলে মনে করেন রিহ্যাব সভাপতি।

তিনি বলেন, বর্তমানে ফ্ল্যাট ও প্লট নিবন্ধনের সময় ১৪ শতাংশ কর ও ফি দিতে হয়। এর মধ্যে ৪ শতাংশ করে গেইন ট্যাক্স, স্ট্যাম্প ফি ৩ শতাংশ, নিবন্ধন ফি ২ শতাংশ, স্থানীয় সরকার কর ২ শতাংশ ও ৩ শতাংশ মূল্য সংযোজন কর (মূসক) দিতে হয়। এই অত্যাধিক ব্যয়ে ক্রেতারা নিবন্ধনের আগ্রহ হারিয়ে ফেলছেন।

 এমন বিবেচনায় সংগঠনটির প্রস্তাব, সব মিলিয়ে নিবন্ধনসংশ্লিষ্ট কর ও ফি ৭ শতাংশ করা হোক। এর মধ্যে ২ শতাংশ গেইন ট্যাক্স; স্ট্যাম্প ডিউটি ও মূসক দেড় শতাংশ, নিবন্ধন ফি ও স্থানীয় সরকার কর ১ শতাংশ।

 আস‌ছে বা‌জে‌টে পরিবেশবান্ধব আবাসন নির্মাণে কর রেয়াত সুবিধা চায় রিহ্যাব। এমন সুযোগ দিলে উদ্যোক্তারা পরিবেশবান্ধব প্রকল্প নিয়ে আগ্রহী হবেন বলে মনে করে সংগঠনটির নেতারা।

আলমগীর শামসুল আলা‌মিন বলেন, শহর এলাকায় ৫ বছরের জন্য ট্যাক্স হলিডে এবং শহরের বাইরে ১০ বছরের জন্য ট্যাক্স হলিডে প্রচলন করতে হবে। একইসঙ্গে বাংলাদেশ ব্যাংক কর্তৃক স্বল্প আয়ের ও মধ্যবিত্তদের জন্য ২০ হাজার কোটি টাকার তহবিল গঠন পূর্বক সিঙ্গেল ডিজিট সুদে রি-ফাইন্যাসিং পুনঃপ্রচলন করতে হবে।

সংবাদ সম্মলনে আরো উপস্থিত ছিলেন রিহ্যাবের সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট রবিউল হক, সহ সভাপতি লিয়াকত আলী ভূইয়া, মো. আনোয়ারুজ্জামান, মো. ওয়াহিদুজ্জামান, প্রকৌশলী সরদার মো. আমিন প্রমুখ।

সানবিডি/ঢাকা/মেহেদী