ঝালকাঠিতে ধর্ষিত স্কুলছাত্রীর আত্মহত্যা, হুমকিতে পরিবার
প্রকাশ: ২০১৬-০৪-১১ ২০:৫৫:৩৫
ঝালকাঠিতে গণধর্ষণের শিকার লাবণী আক্তার প্রিয়া নামে এক স্কুলছাত্রী লোকলজ্জার ভয়ে আত্মহুতি দেয়ার একটি ঘটনা প্রকাশ পেয়েছে। ঘটনাটি গত শনিবারের হলেও স্থানীয় প্রভাবশালীদের চাপের কারণে ধর্ষিতার পরিবার আইনি সহযোগিতা নিতে পারছে না। এমনকি চাপ প্রয়োগের কারণে ওই স্কুলছাত্রীর লাশ দাফনেও পরিবারকে বাধ্য করা হয় বলে অভিযোগ উঠেছে।
থানা পুলিশকেও বিষয়টি না জানাতে নানা ধরনের হুমকি-ধামকি দেয়া হচ্ছে। ফলে অজানা আতঙ্কে ভুগছে ধর্ষিতা স্কুলছাত্রীর পরিবার। এ বিষয়টি ফাঁস হয়ে যাওয়ায় ঝালকাঠির সদর উপজেলার বিনয়কাঠীতে তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছে।
ওই গ্রামের দিনমজুর মোজ্জাম্মেলের মেয়ে লাবণী আক্তার প্রিয়া সুগন্ধিয়া মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণির ছাত্রী ছিল। এ বিষয়ে প্রিয়ার বাবা মোফাজ্জেল এবং ফুফু মালা বেগমের কাছে জানতে চাইলে প্রথমে তারা প্রভাবশালীদের ভয়ভীতি কারণে বিষয়টি এড়িয়ে যান। তবে পরবর্তী সময়ে সাংবাদিকরা তাদের সহযোগিতার আশ্বাস দিলে বিষয়টি প্রকাশ করেন।
তারা জানিয়েছে- গত শনিবার রাতে প্রিয়ার বাবা মা বাড়িতে না থাকায় চাচার ঘর থেকে ভাত খেয়ে নিজ বাসায় ঘুমাতে যায়। এসময় লাবণী আক্তার প্রিয়ার চাচাতো দুলাভাই স্থানীয় আবু খার বখাটে পুত্র স্বপন প্রেমের ফাঁদে ফেলে রাতে লাবণীকে নিজের ঘরে নিয়ে ধর্ষণ করে। এ ঘটনা দেখে ফেলে তাদের আটক করে স্থানীয় মোড়লের পুত্র বখাটে সুমন, রসুলের পুত্র হুমায়ূন, গনি সরদারের পুত্র ফোরকান, ছালাম সরদারের পুত্র বাবু ওরফে হৃদয়। এক পর্যায়ে তারাও প্রিয়াকে ভয়ভীতি দেখিয়ে পালাক্রমে ধর্ষণ করে। পরে এরাই প্রিয়াকে পরিবারের কাছে ভয়ভীতি দেখিয়ে বিষয়টি কাউকে না বলার জন্য শাসিয়ে যায়। এমনকি স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গকে দিয়ে মামলা বা কারও কাছে অভিযোগ না করার জন্য অব্যাহত হুমকি দিয়ে যায়।
তখন প্রিয়া মান-ইজ্জতের কথা চিন্তা করে ঘরে থাকা কীটনাশক পান করলে অসুস্থ হয়ে পড়ে। এসময় পরিবারের সদস্যরা তাকে বরিশাল শের-ই বাংলা মেডিকেল (শেবাচিম) হাসপাতালে নিয়ে ভর্তি করে। সেদিন রাতেই চিকিৎসাধীন অবস্থায় শেবাচিমে প্রিয়ার মৃত্যু হয়।
প্রিয়ার বড় চাচা বলেন, পাঁচ বছর আগে তার বড় মেয়েকে ফুসলিয়ে বিয়ে করে ধর্ষণে অভিযুক্ত স্বপন। তারপর থেকেই মেয়ে ও মেয়ে জামাইয়ের সাথে সম্পর্ক নেই তাদরে। এর জের ধরে এমন ফাঁদ আবারও পাতে স্বপন। মেয়েকে হারিয়ে প্রিয়ার মা বাকরুদ্ধ হয়ে ফ্যালফ্যাল করে তাকিয়ে থাকেন। তার কাছে ঘটনার কথা জিজ্ঞেস করলে কিছুই যেন বলতে পারেন না।
এ ব্যাপারে ঝালকাঠির অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. আব্দুর রকিব এবং সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাহে আলম জানান, এমন ঘটনা তাদের জানা নেই। কোনো অ্যাকশনে যেতে হলে অভিযোগে প্রয়োজন। অভিযোগ পেলে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
সানবিডি/ঢাকা/আহো