ফিলিপাইনে ৭ কোটি আঙুলের ছাপ চুরি!
প্রকাশ: ২০১৬-০৪-১৩ ১২:৫৬:৩৮
ফিলিপাইনে সাধারণ নির্বাচনের মাত্র এক মাস আগে ঘটে গেল ইতিহাসের সবচেয়ে বড় সরকারি তথ্য চুরির ঘটনা। হ্যাকিংয়ের মাধ্যমে প্রায় সাত কোটি মানুষের আঙুলের ছাপ ও পাসপোর্ট থেকে ব্যক্তিগত তথ্য চুরি করা হয়েছে।
ফিলিপাইনে প্রতি ছয় বছর পরপর সাধারণ নির্বাচন হয়। শিগগিরই একটি নির্বাচনের মাধ্যমে দেশটি নতুন প্রেসিডেন্ট, ভাইস প্রেসিডেন্ট নির্ধারণ করা হবে। যেহেতু ফিলিপাইন এশিয়ার একটি দ্রুত বর্ধনশীল অর্থনীতির দেশ, তাই বিনিয়োগকারীদের চোখ থাকবে দেশটির সাধারণ নির্বাচনে।
বিবিসি জানিয়েছে, দ্য ফিলিপাইনস কমিশন অন দ্য ইলেকশনসের (কমেলেক) ওয়েবসাইট মার্চ মাসের শেষ দিকে হ্যাক করা হয়েছে। দেশটির অজ্ঞাত এক হ্যাকার দল ওই ঘটনার দায় স্বীকার করেছে।
হ্যাকার দলটি দাবি করেছে, তারা হ্যাকিংয়ের মাধ্যমে ৯ মের নির্বাচনে যে স্বয়ংক্রিয় ভোটিং মেশিনগুলো ব্যবহৃত হবে সেগুলোসহ দেশটির ভোটগ্রহণ ব্যবস্থার দুর্বলতাগুলো তুলে ধরতে চেয়েছে।
এ ঘটনার কিছুদিন পর ‘লুলজসেক ফিলিপাইনস’ নামের অপর এক হ্যাকার দল কমেলেকের পুরো ডাটাবেজ অনলাইনে প্রকাশ করে দিয়েছিল বলে ধারণা করা হয়। তবে কমেলেক দাবি করেছে, তারা কোনো সংবেদনশীল তথ্য প্রকাশ করেনি।
ফিলিপাইনের হ্যাকিংটি কত বড়?
সাইবার নিরাপত্তা প্রতিষ্ঠান ‘ট্রেন্ড মাইক্রো’র মতে এটি ইতিহাসের সবচেয়ে বড় সরকারি তথ্য চুরির ঘটনা, যেটি ২০১৫ সালের যুক্তরাষ্ট্রের ‘ইউএস অফিস অব পারসোনেল ম্যানেজমেন্টের’ হ্যাকিংয়ের ঘটনার চেয়েও বড়।
যুক্তরাষ্ট্রের ওই হ্যাকিংয়ে দুই কোটি নাগরিকের আঙুলের ছাপ এবং সামাজিক নিরাপত্তা নম্বর হ্যাক করা হয়েছিল, যদিও এখন পর্যন্ত তথ্যগুলো অনলাইনে পাওয়া যায়নি।
পানামার আইন ফার্ম মোস্যাক ফনসেকার মতে, এপ্রিলের শুরুতে সেখানে ১১ কোটির বেশি ডকুমেন্ট ফাঁস হয়েছে। এ ছাড়া সম্প্রতি অনলাইন ডেটিং সাইট ‘এশলে মেডিসন’, যুক্তরাষ্ট্রের ডিপার্টমেন্ট স্টোর ‘টার্গেট’ এবং বিশ্বের সবচেয়ে বড় ইলেকট্রনিক প্রতিষ্ঠান ‘সনি’-তেও এমন তথ্য ফাঁসের ঘটনা ঘটেছে।
ট্রেন্ড মাইক্রো এক প্রতিবেদনে বলেছে, ‘ফিলিপাইনে প্রত্যেক নিবন্ধনকৃত ভোটারই এখন জালিয়াতিসহ বিভিন্ন ঝুঁকির আশঙ্কায় রয়েছে।
প্রতিষ্ঠানটি আরো জানিয়েছে যে, স্বাস্থ্যসেবাদাতা এবং শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোই তথ্য ফাঁসের ঘটনায় সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
কতটা নিরাপদ উন্নয়নশীল রাষ্ট্রের নিরাপত্তা ব্যবস্থা?
ট্রেন্ড মাইক্রোর জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা রায়ান ফ্লোরেস বিবিসিকে জানান, উন্নয়নশীল দেশগুলোতে এমন ঘটনা আরো ঘটবে । তাই হ্যাংকিংয়ের মাধ্যমে সংবেদনশীল তথ্য ফাঁস হওয়া প্রতিহত করতে ওই সব দেশে তথ্য নিরাপত্তা দল গঠনের মাধ্যমে ‘শক্তিশালী নিরাপত্তা ব্যবস্থা’ গড়ে তোলার ওপর জোড় দেন ফ্লোরেস।
ওই কর্মকর্তা আরো জানান, নিরাপত্তা হুমকি মোকাবিলা করতে ফিলিপাইনের মতো দেশগুলোর নিজস্ব কোনো সংস্থা বা সরকারি প্রতিষ্ঠান নেই।