ধর্ম নিয়ে প্রধানমন্ত্রীকে ওপেন চ্যালেঞ্জ জানালেন আসিফ মহিউদ্দিন
আপডেট: ২০১৬-০৪-১৫ ২০:৩৭:১২
বৃহস্পতিবার সকালে গণভবনে নববর্ষের এক অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ফ্যাশন দাঁড়িয়ে গেছে, ধর্মের বিরুদ্ধে কিছু লিখলেই তারা মুক্তচিন্তার ধারক! কিন্তু আমি এখানে কোনও মুক্তচিন্তা দেখি না। আমি দেখি নোংরামি।
তিনি বলেন, এত নোংরা নোংরা কথা কেন লিখবে? আমি আমার ধর্ম মানি, যাকে আমি নবি মানি তার সম্পর্কে নোংরা কথা কেউ যদি লেখে সেটা কখনোই আমাদের কাছে গ্রহণযোগ্য নয়। ঠিক তেমনি অন্য ধর্মের যারা তাদের সম্পর্কে কেউ কিছু লিখলে তাও কখনো গ্রহণযোগ্য হবে না। যারা এগুলো করে তা তাদের সম্পূর্ণ নোংরা মনের পরিচয়, বিকৃত মনের পরিচয়। শেখ হাসিনা বলেন, এটা পুরোপুরিই তাদের চরিত্রের দোষ এবং তারা বিকৃত মানসিকতার।
প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, একজন মুসলমান হিসেবে আমি প্রতিনিয়ত আমার ধর্মকে অনুসরণ করে চলি। কাজেই সে ধর্মের বিরুদ্ধে কেউ লিখলে আমি কষ্ট পাই। শেখ হাসিনা বলেন, সবাইকেই সংযমতা নিয়ে চলতে হবে, শালীনতা বজায় রেখে চলতে হবে। অসভ্যতা কেউ করতে পারবে না। আর তা করলে তার দায়িত্ব আমরা নেবো না।
প্রধানমন্ত্রীর এই বক্তব্যকে কটূক্তি করে এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে মানসিক বিকারগ্রস্থ আখ্যা দিয়ে ইসলাম বিদ্বেষী ব্লগার আসিফ মহিউদ্দিন তার ফেসবুক পাতায় লিখেছে-
“মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ধর্ম বিষয়ে সরাসরি বিতর্কের আহবান জানাচ্ছি। আপনি ধর্ম বিষয়ে কী জানেন এবং বোঝেন আমি জানি না, কিন্তু আপনার বক্তব্য শুনলে ধর্ম সম্পর্কে নিতান্তই জ্ঞানহীন বলে মনে হয়। যার যে বিষয়ে সেরকম জ্ঞান নেই, তার মুখ থেকে সে বিষয়ে বিশেষজ্ঞ মতামত শুনতে খুব কুৎসিত এবং নোংরা লাগে। শুনলে মানসিক বিকারগ্রস্থ বলে মনে হয়। তাই অনুগ্রহ করে আমার সাথে বিতর্কে অবতীর্ণ হোন। দেখা যাক, আপনি ধর্ম বিষয়ে কতটা জ্ঞান রাখেন। প্রতিজ্ঞা করছি, বিতর্কে পরাজয় বরণ করলে নাস্তিকতা নিয়ে লেখা ছেড়ে দেবো। ইসলামের সমালোচনা আর কোনদিনই করবো না, সেই সাথে সহি মুসলমান হয়ে যাবো। একই সাথে, অন্য কেউ নাস্তিকতা নিয়ে লেখালেখি করলে আমি তাদের বিরুদ্ধেও লেখালেখি করবো।”
এই স্ট্যাটাস দেয়ার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই আসিফ একটি গ্রুপ খোলে ‘ইসলাম বিষয়ক বিতর্ক’ নামে। এই গ্রুপ খোলা প্রসংগে আসিফ লিখেছে-
“আজকের স্ট্যাটাসের পরে প্রায় শ’দেড়েক মানুষ আমার সাথে বিতর্কের ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন। যারা বিতর্কের ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন সবাইকে অসংখ্য ধন্যবাদ এবং শুভেচ্ছা। ব্যক্তিগতভাবে আমি সবাইকেই সমান চোখে দেখি, এবং সবাইকেই সমান গুরুত্ব দেয়ার চেষ্টা করি, শুধু একদম হাস্যকর কথাবার্তা না বললে। তাই সকলের সাথেই আমি বিতর্ক করতে চাই।
তবে যেহেতু আমি একজন মাত্র মানুষ, শ’দেড়েক বা ততোধিক মানুষের সাথে বিতর্ক করা আমার জন্য সময় সাপেক্ষ, তাই আপনারা দেড়’শ মানুষ নিজেরাই ঠিক করুন, ঠিক কারা আমার সাথে বিতর্কে আসবেন। আপনারা চাইলে একটি গ্রুপ খুলুন, সেখানে নিজেরা মিলে আলাপ আলোচনা করে আপনাদের মধ্য থেকে তিনজনকে বাছাই করুন। যখন তিনজন সর্বসম্মতভাবে নির্বাচিত হবেন, সেই তিনজনার সাথে আমি আলাপ করতে পারি। সেই তিনজনার নাম আমাকে পাঠাবেন।
দেখা যায়, বেশিরভাগ ধার্মিকের যুক্তি, “আল্লায় না থাকলে কুরান ক্যাডায় লিখছে?” বা “ইসলাম সত্য না হইলে ক্ষিধা লাগে ক্যান?” বা “নাসায় বিজ্ঞানীরা বইসা বইসা কুরান তিলাওয়াত কইরা বিজ্ঞান আবিষ্কার করে” টাইপের ভয়াবহ যুক্তির মধ্যে সীমাবদ্ধ। তার ওপর ভয়াবহ বানান, এক লাইন পড়তে গেলে তিনবার উষ্ঠা খাইতে হয়। গালাগালির কথা তো না বলাই ভাল। তাই এমন কাউকে নির্বাচিত করবেন না যারা নোংরা গালাগালি করে। বা একটা বাক্য শুদ্ধ করে লিখতে পারে না। বা এইসব হাস্যকর কথাবার্তা বলে। তাতে আপনাদেরও লাভ, আমারো কিছু সময় বাচে।
তাই গ্রুপটি আমিই খুলে দিচ্ছি। যারা আমার সাথে বিতর্ক করতে প্রাথমিকভাবে নির্বাচিত হবেন, তাদের কমপক্ষে ১০০ জনার সমর্থন লাগবে। অর্থাৎ আপনারা যারা কমপক্ষে ১০০ টি সমর্থন পাবেন, তারাই শুধু আমার সাথে আলাপের জন্য প্রাথমিকভাবে নির্বাচিত হবেন। আর যারা নির্বাচিত হবেন, তাদের মধ্যে থেকে প্রথম তিনজনার সাথে আমি সরাসরি বিতর্কে অংশ নেবো। ১০০ টির চাইতে কম সমর্থন পেলে আপনি বিতর্কের জন্য নির্বাচিত হবেন না।
নিচের গ্রুপে যুক্ত হোন এবং আপনি কেন বিতর্কে নির্বাচিত হতে চান তা লিখুন। জনসমর্থণ পেলে আপনি নির্বাচিত হবেন, এবং আমার সাথে সরাসরি লাইভ ভিডিওতে বিতর্কে অংশ নেয়ার সুযোগ পাবেন। মনে রাখবেন, প্রাথমিকভাবে নির্বাচিত হতে হলে আপনার ১০০ টি লাইক বা সমর্থণসূচক মন্তব্যের প্রয়োজন হবে। একই মানুষ কয়েকবার সমর্থন দিতে পারবেন না। তাই শুদ্ধ বানানে নিজের সম্পর্কে লিখুন, যাতে অন্যরা আপনাকে নির্বাচিত করতে পারে।”