রপ্তানি তহবিলের ঋণ বিতরণে বাংলাদেশ ব্যাংকের সঙ্গে ৪৯ ব্যাংকের চুক্তি
নিজস্ব প্রতিবেদক প্রকাশ: ২০২৩-০১-৩০ ২০:৫৬:২১
রপ্তানিমুখী শিল্পের বিকাশ ও প্রসারের চলমান ধারা অব্যাহত রাখতে ১০ হাজার কোটি টাকার তহবিল গঠন করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এ তহবিল থেকে প্রাক-অর্থায়ন সুবিধা দেওয়া হবে। বাংলাদেশ ব্যাংকের সঙ্গে ‘রপ্তানি সহায়ক প্রাক-অর্থায়ন তহবিলে’ অংশগ্রহণকারী ৪৯টি তফসিলি ব্যাংকের অংশগ্রহণ চুক্তি হয়েছে।
সোমবার (৩০ জানুয়ারি) কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদারের উপস্থিতিতে এ চুক্তি হয়। চুক্তিতে বাংলাদেশ ব্যাংকের পক্ষে ব্যাংকিং প্রবিধি ও নীতি বিভাগের পরিচালক মাকসুদা বেগম এবং স্ব-স্ব ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালকরা সই করেন।
এসময় গভর্নর বলেন, কোভিড-১৯ বা করোনা মহামারি পরবর্তী অর্থনৈতিক অভিঘাত ও রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের প্রভাবে উদ্ভূত পরিস্থিতির কারণে বিশ্ব অর্থনীতিতে বিরূপ অবস্থা বিরাজ করছে। এ পরিপ্রেক্ষিতে দেশের রপ্তানিমুখী শিল্প প্রতিষ্ঠানসমূহকে অধিকতর অভিঘাত সহনশীল করার পাশাপাশি এ খাতের বিকাশ ও প্রসারের চলমান ধারা অব্যাহত রাখা প্রয়োজন। এ লক্ষ্যে বাংলাদেশ ব্যাংকের সম্পূর্ণ অর্থায়নে ১০ হাজার কোটি টাকার একটি রপ্তানি সহায়ক ‘প্রাক-অর্থায়ন তহবিল’ গঠন করা হয়।
তিনি বলেন, সমাজের দরিদ্র ও অবহেলিত জনগোষ্ঠীর আর্থিক ক্ষমতায়নে বাংলাদেশ ব্যাংক নিরন্তর কাজ করে চলেছে। সরকারের অন্তর্ভুক্তিমূলক আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন কৌশলের সঙ্গে সঙ্গতি রেখে বাংলাদেশ ব্যাংক এরই মধ্যে ২০২২-২৩ অর্থবছরের দ্বিতীয় মুদ্রানীতি ঘোষণা করেছে। কৃষক, নারী উদ্যোক্তা, কুটির শিল্পসহ ক্ষুদ্র, মাঝারি ও বৃহৎ উদ্যোক্তা এবং রপ্তানিকারক ও ব্যবসায়ীদের জন্য বেশ কয়েকটি প্রণোদনা ঋণ প্যাকেজ বাস্তবায়ন করেছে।
এছাড়া ব্যাংকগুলোকে নীতি সহায়তা প্রদান, আর্থিক অন্তর্ভুক্তির আওতায় অধিকতর মানুষকে জাতীয় উৎপাদনের সঙ্গে সম্পৃক্ত করতে কাজ করা হচ্ছে বলেও জানান তিনি।
আব্দুর রউফ তালুকদার আরও বলেন, নতুনভাবে গঠিত আজকের ১০ হাজার কোটি টাকার প্রাক-অর্থায়ন তহবিলটিও দেশের রপ্তানি খাতের উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখবে বলে আমার দৃঢ় বিশ্বাস। ইএফপিএফের (রফতানি সহায়ক প্রাক-অর্থায়ন তহবিল) অর্থায়ন কার্যক্রম শিগগির শুরু হবে। মাত্র ৪ শতাংশ সুদে এ তহবিল থেকে কাঁচামাল কেনা বা আমদানির বিপরীতে প্রত্যক্ষ ও প্রচ্ছন্ন রপ্তানিকারকদের দেশি মুদ্রায় ঋণ নেওয়ার সুযোগ থাকবে। যার মেয়াদ হবে ১৮০ দিন।
তিনি বলেন, এ ঋণের ক্ষেত্রে ব্যাংক পর্যায়ে সুদহার হবে ১ দশমিক ৫ শতাংশ। বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ থেকে আপাতত আর কোনো ফান্ড গঠন করা হবে না। এছাড়া ইডিএফ ফান্ড থেকে দেওয়া অর্থ সমন্বয় করে এর আকার ধীরে ধীরে কমানো হবে। এরই মধ্যে ইডিএফে ১ বিলিয়ন ডলার সমন্বয় হয়েছে।
অনুষ্ঠানে ডেপুটি গভর্নর আবু ফরাহ মো. নাছের নতুন এই তহবিলের বৈশিষ্ট্য ও সুবিধাসমূহ বিস্তারিত তুলে ধরেন। অনুষ্ঠানের সভাপতি নির্বাহী পরিচালক নূরুন নাহার তহবিল সম্পর্কে ধারণা সম্বলিত একটি পাওয়ার পয়েন্ট প্রেজেন্টেশন দেন। এছাড়া সোনালী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. আফজাল করিম এবং অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকার্স, বাংলাদেশের (এবিবি) চেয়ারম্যান ও ব্র্যাক ব্যাংক লিমিটেডের ম্যানেজিং ডিরেক্টর অ্যান্ড সিইও সেলিম আর. এফ. হোসেন তাদের বক্তব্যে তহবিলটি যথাযথভাবে বাস্তবায়নের আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ ব্যাংকের ব্যাংকিং প্রবিধি ও নীতি বিভাগের পরিচালক মাকসুদা বেগম, একই বিভাগের পরিচালক মোহাম্মদ ইব্রাহীম ভূঁইয়া ও অতিরিক্ত পরিচালক মো. নাজিম উদ্দিনসহ অন্যান্য কর্মকর্তা এবং সংশ্লিষ্ট ব্যাংকসমূহের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
এএ