কে হচ্ছেন ডিএসইর ব্যবস্থাপনা পরিচালক?

নিজস্ব প্রতিবেদক প্রকাশ: ২০২৩-০২-০৩ ১১:৫২:৫৬


কে হচ্ছেন দেশের প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) ব্যবস্থাপনা পরিচালক(এমডি)। নতুন এই এমডি দায়িত্ব নিবেন ২০২২ সালের ২৩ আগস্ট পদত্যাগ করা তারিক আমিন ভূঁইয়ার জায়গায়। সম্প্রতি নতুন এমডি নিয়োগ দেওয়ার জন্য পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনে (বিএসইসি) তিন জনের নাম পাঠিয়েছে।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

সূত্র মতে, ডিএসইর পর্ষদ অনুমোদনের পর গত সোমবার (৩০ জানুয়ারি,২০২৩) এ বিএসইসিতে তিন জনের নাম পাঠানো হয়েছে। যাদের নাম পাঠানো হয়েছে তারা হলেন, ডিএসইর প্রধান পরিচালন কর্মকর্তা (সিওও) ও ভারপ্রপ্ত এমডি এম. সাইফুর রহমান মজুমদার,প্রাইম ব্যাংকে সাবেক এএমডি মো. তাবারক হোসেন ভূঁঞা এবং ভেঞ্চার ক্যাপিটাল অ্যান্ড প্রাইভেট ইক্যুইটি অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ভিসিপিয়াব) সাবেক সাধারণ সম্পাদক শওকত হোসেন।

সাইফুর রহমান:

বর্তমানে তিনি ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) প্রধান পরিচালন কর্মকর্তা (সিওও) ও ভারপ্রাপ্ত এমডির দায়িত্ব পালন করছেন ম. সাইফুর রহমান মজুমদার। ২০২০ সালের ৯ জানুয়ারি তিনি ডিএসইতে সিওও পদে যোগ দিয়েছেন।

ডিএসইতে যোগদানের পূর্বে সাইফুর রহমান কর্পোরেট ও আর্থিক পরামর্শক সংস্থা কর্পোরেট সাপোর্ট লিমিটেডের পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা হিসেবে কর্মরত ছিলেন। এর আগে তিনি চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জ (সিএসই) এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সিইও হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন।

একজন পেশাদার হিসাববিদ হিসেবে সাইফুর রহমান গত ২২ বছর ধরে বিভিন্ন পদে বেসরকারী খাতের সাথে জড়িত আছেন। শেয়ারবাজার, আর্থিক ব্যবস্থাপনা, রপ্তানি ও উৎপাদন পরিচালনা, মানব সম্পদ পরিচালনা এবং পরিচালনা পরামর্শক ইত্যাদি ক্ষেত্রে তার বিস্তৃত অভিজ্ঞতা রয়েছে।

সাইফুর রহমান একজন চাটার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্ট এবং কস্ট ম্যানেজমেন্ট অ্যাকাউন্ট্যান্ট। তিনি বাংলাদেশের শীর্ষ স্থানীয় উভয় অ্যাকাউন্টিং প্রতিষ্ঠান দ্য ইন্সটিটিউট অব চাটার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্টস অব বাংলাদেশ (আইসিএবি) এবং দ্য ইন্সটিটিউট অব কস্ট ম্যানেজমেন্ট অ্যাকাউন্ট্যান্টস অব বাংলাদেশ (আইসিএমএবি) এর ফেলো সদস্য। তিনি চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে হিসাব বিজ্ঞানে বি.কম (সম্মান) এবং এম.কম (অ্যাকাউন্টিং) সম্পন্ন করেন। চাটার্ড অ্যাকাউন্টেসি কোর্সের সময় সাইফুর রহমান মজুমদার বাংলাদেশের অন্যতম শীর্ষ পরামর্শক প্রতিষ্ঠান কেপিএমজি রহমান রহমান হকের সাথে কাজ করেছেন।

মো. তাবারক হোসেন ভূঁঞা:

মো. তাবারক হোসেন ভূঁঞা দেশের অন্যতম বেসরকারি ব্যাংক প্রাইম ব্যাংকের সাবেক অতিরিক্ত এমডি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছে। একই সাথে তিনি প্রতিষ্ঠানটির সহযোগী প্রতিষ্ঠান প্রাইম ব্যাংক ইনভেস্টমেন্টের ব্যবস্থাপনা পরিচালকের দায়িত্ব পালন করছেন। আগে  একই ব্যাংকের উপব্যবস্থাপনা পরিচালক ছিলেন। তারও আগে তিনি ছিলেন হিউম্যান রিসোর্স ডিভিশন ও মার্কেটিং ডিভিশনের প্রধান।

তাবারক বনানী শাখার প্রধান হিসেবে ২০১২ সালে ‘বেস্ট পারফরমিং ম্যানেজার’-এর পুরস্কার পেয়েছিলেন। তাবারক ২০০৫ সালে বাংলাদেশ বিমান বাহিনী থেকে উইং কমান্ডার হিসেবে অবসর নেন। তিনি বিমান বাহিনী একাডেমিতে শ্রেষ্ঠ ক্যাডেট নির্বাচিত হয়ে কমান্ড্যান্ট’স ট্রফি নিয়ে কমিশন পেয়েছিলেন।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এমএসএস (রাষ্ট্রবিজ্ঞান) এবং এলএলবি ডিগ্রি এবং বিজনেস স্টাডিজ অনুষদ থেকে এমফিল ডিগ্রি নেন তাবারক। পরে নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটিতে এমবিএ করেন তিনি।

তাবারক কানাডার ইয়র্ক ইউনিভার্সিটি কন্ট্রাক্ট ল’ কোর্স সম্পন্ন করেন এবং টরন্টো ইউনিভার্সিটি থেকে গ্লোবাল প্রফেশনাল এলএলএম ডিগ্রিও নেন।

তিনি একজন বিশিষ্ট কথাসাহিত্যিক ও নাট্যকার লেখা বেশ কয়েকটি নাটক বিভিন্ন টেলিভিশনে সম্প্রচারিত হয়েছে। তার লেখা কয়েকটি উপন্যাসও বাজারে রয়েছে।

শওকত হোসেন:

শওকত হোসেন চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) হিসেবে নিয়োগ পেয়েছিলেন। তিনি সিএসইর সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মামুন-উর-রশিদের পরিবর্তে যোগ দেওয়ার কথা ছিলো। তবে তিনি সিএসইর এমডি হিসেবে যোগদান করেননি।

শওকত হোসেন ভেঞ্চার ক্যাপিটাল অ্যান্ড প্রাইভেট ইক্যুইটি অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ভিসিপিয়াব) সাবেক সাধারণ সম্পাদক। বর্তমানে তিনি বিডি ভেঞ্চার লিমিটেডের এমডি হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।

উল্লেখ্য, অস্ট্রেলিয়াপ্রবাসী তারিক আমিন ভূঁইয়া ২০২১ সালের ২৫ জুলাই ডিএসইর এমডি হিসেবে যোগ দেন। তিনি ছিলেন প্রযুক্তি খাতের একজন বিশেষজ্ঞ। তিন বছরের জন্য তাঁকে নিয়োগ দেয় বিএসইসি। তিন বছরের জন্য নিয়োগ পেলেও ১৩ মাসের মাথায় ২০২২ সালের ২৩ আগস্ট তিনি পদত্যাগ করেন। ২৫ আগস্ট জরুরি পর্ষদ সভায় তার পদত্যাগপত্র গ্রহণ করা হয়।

ওই সময়ে ডিএসইর চেয়ারম্যান ইউনুসুর রহমান বলেছিলেন ‘তিনি ই-মেইলে আমাকে দেড় পৃষ্ঠার একটি পদত্যাগপত্র পাঠিয়েছেন। সেখানে তিনি যা লিখেছেন, তার সারমর্ম হলো যেভাবে তিনি কাজ করতে চাচ্ছিলেন, সেভাবে তিনি কাজ করতে পাচ্ছেন না। তাই এ অবস্থায় তিনি আর সংস্থাটির এমডির দায়িত্বে থাকতে চাচ্ছেন না।