শাহবাজ শরীফের স্বীকারোক্তি
আইএমএফের ‘কল্পনাতীত’ শর্তে রাজি হওয়া ছাড়া উপায় নেই
আন্তর্জাতিক ডেস্ক প্রকাশ: ২০২৩-০২-০৩ ১৯:২৬:৫৭
পাকিস্তানে চলমান চরম অর্থনৈতিক সংকট থেকে উত্তরণে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) ঋণ সহায়তার শর্তগুলো ‘কল্পনাতীত’। তবে সংকটের এই মুহূর্তে সেসব কঠিন শর্ত মেনে নেওয়া ছাড়া উপায় নেই বলে জানিয়েছেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরীফ। খবর এএফপির।
পাকিস্তানের সঙ্গে কয়েক মাস ধরে থমকে থাকা ঋণ আলোচনা পুনরুজ্জীবিত করার জন্য গত দেশটিতে পাকিস্তানে পৌঁছেছে আইএমএফের একটি প্রতিনিধি দল। ঋণছাড়ের জন্য দেশটিকে কর বৃদ্ধি, বিভিন্ন খাতে সরকারি ভর্তুকি কমানোর মতো বেশ কিছু শর্ত দিয়েছিল আন্তর্জাতিক ঋণদাতা সংস্থাটি। তবে আগামী অক্টোবরে নির্বাচন সামনে রেখে জনগণের মধ্যে নেতিবাচক প্রতিক্রিয়ার আশঙ্কায় এসব শর্তের বিরুদ্ধে অবস্থান নেয় পাকিস্তান সরকার। কিন্তু মারাত্মক অর্থনৈতিক অনটনে সেই অবস্থান হয়তো আর ধরে রাখতে পারছেন না শাহবাজ শরীফ।
শুক্রবার (৩ ফেব্রুয়ারি) টেলিভিশনে এক ভাষণে পাকিস্তানি প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, আমি বিস্তারিত ব্যাখ্যায় যাবো না। শুধু বলবো, আমাদের অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জ অকল্পনীয়। আইএমএফের যেসব শর্তে আমাদের রাজি হতে হবে, তা কল্পনার বাইরে। তবে শর্তগুলো আমাদের মানতেই হবে।
পাকিস্তানের অর্থনৈতিক অবস্থা দীর্ঘদিন ধরেই আশঙ্কাজনক। তার সঙ্গে রয়েছে বিদেশি ঋণের কিস্তি সংকট, রাজনৈতিক অস্থিরতা ও নিরাপত্তা পরিস্থিতির অবনতি।
গত বৃহস্পতিবার পাকিস্তানের কেন্দ্রীয় ব্যাংক জানিয়েছে, তাদের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ মাত্র ৩১০ কোটি ডলারে নেমে গেছে, যা দিয়ে মাত্র ১৮ দিনের আমদানিব্যয় মেটানো সম্ভব।
এর একদিন আগেই দেশটিতে বার্ষিক মূল্যস্ফীতি বেড়ে ৪৮ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছানোর খবর পাওয়া যায়। অর্থাৎ, পাকিস্তানের জনগণ এখন সাধারণ খাদ্যপণ্য কিনতেই হিমশিম খাচ্ছে। বেড়েছে পেট্রল-ডিজেলের দামও।
এর মধ্যে ডলারের কালোবাজারি ঠেকাতে পাকিস্তানি রুপির ওপর নিয়ন্ত্রণ শিথিল করার সিদ্ধান্ত নেয় পাকিস্তান সরকার। এর ফলে দেশটির মুদ্রার মান রেকর্ড নিচে নেমে যায়।
বিশ্বের পঞ্চম বৃহত্তম জনগোষ্ঠীর দেশটি বর্তমানে জরুরি খাদ্য ও ওষুধ ছাড়া নতুন কোনো ঋণপত্র (এলসি) ইস্যু করছে না। এর ফলে করাচি বন্দরে জমা পড়েছে হাজার হাজার কনটেইনার।
এমন পরিস্থিতিতে দেশ ধীরে ধীরে দেউলিয়া হওয়ার পথে এগোনোয় এবং বন্ধুসুলভ কোনো দেশই তুলনামূলক সহজ শর্তে ঋণ দিতে আগ্রহী না হওয়ায় আইএমএফের কাছেই মাথানত করতে হচ্ছে ইসলামাবাদকে।
এনজে