মুঠোফোনে নিয়ন্ত্রণ হবে বিদ্যুৎ খরচ
প্রকাশ: ২০১৬-০৪-২১ ১৬:৩৪:৩২
স্মার্ট ফোন অথবা কম্পিউটারের মাধ্যমে নিয়ন্ত্রণ করা যাবে বিদ্যুতের খরচ। সফটওয়ারের মাধ্যমে মুহূর্তেই জানা যাবে ব্যবহৃত বিদ্যুতের পরিমাণ। বৈদ্যুতিক যন্ত্রাংশ কতটা বিদ্যুৎ ব্যবহার করছে তাও নিয়ন্ত্রণ করা যাবে। একই সঙ্গে বিদ্যুৎ বিতরণকারী প্রতিষ্ঠানকে জানানো যাবে মিটার রিডিং। এমনই এক ডিজিটাল মিটার উদ্ভাবন করেছে রাজশাহী প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (রুয়েট) দুই শিক্ষার্থী।
রুয়েটের যন্ত্রকৌশল বিভাগের চতুর্থ বর্ষের ছাত্র কে এম নাজমুল হাসান সজীব এবং সর্বার্থ গোস্বামী প্রীতম তাদের উদ্ভাবিত এই মিটারের নাম দিয়েছেন ‘ইন্টেলিজেন্ট মিটার’। প্রচলিত এনালগ পাওয়ার মিটার এবং ডিজিটাল মিটারের চেয়ে উন্নত এই মিটার তৈরিতে খরচ পড়বে এক হাজার টাকা। বৃহষ্পতিবার রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) কেন্দ্রীয় ক্যাফেটেরিয়ায় এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানানো হয়। ইন্টেলিজেন্স এনার্জি ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম (আইইএমএস) নামের এই প্রযুক্তির মাধ্যমে সারাদেশে বিদ্যুৎ সমস্যা সমাধানে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখা সম্ভব বলে মনে করছে দুই শিক্ষার্থী।
সংবাদ সম্মেলনে উদ্ভাবক সর্বার্থ গোস্বামী প্রীতম বলেন, বর্তমানে প্রচলিত ডিজিটাল মিটারে অটোমেটেড মিটার রিডার, যা শুধুমাত্র অটোমেটিক্যালি বিদ্যুৎ খরচ পরিমাপ করার মধ্যে সীমাবদ্ধ। কিন্তু আমাদের স্মার্ট মিটার বিদ্যুৎ খরচ পরিমাপসহ দিনে লাইট, ফ্যান, টিভি, এসি ইত্যাদি কতোটুকু সময় চলেছে তাও পরিমাপ করে এবং এটি খুব সহজে ব্যবহার উপযোগী সফটওয়ারের মাধ্যমে মানগুলো গ্রাহককে দেখানো যাবে। একইসঙ্গে এই মানগুলো গ্রাহক ও বিদ্যুত উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানকে সরবরাহ করে। এছাড়াও এই লোড কন্ট্রোল সিস্টেম অটোমেটিক এবং ম্যানুয়াল দুইভাবেই চালানো যাবে।
প্রীতম আরও বলেন, উন্নত এলগোরিদম ব্যবহার করে সফটওয়ারটি ব্যবহারকারীকে জানিয়ে দিবে চলতি মাসে কীভাবে বিভিন্ন বৈদ্যুতিক যন্ত্রপাতি ব্যবহার করলে বিদ্যুৎ বিল তুলনামূলক কম হবে। প্রতিটি বাসা কিংবা ইন্ডাস্ট্রি থেকে কি পারিমাণ ক্ষতিকর গ্রীনহাউজ গ্যাস নির্গত হচ্ছে এবং তা সহনীয় মাত্রায় আছে কিনা তাও জানিয়ে দেবে। প্রতিমাসে আমরা কতটুকু বিদ্যুত খরচ করতে চাই তা সফট্যওয়ারে জানিয়ে দিলে তা বৈদ্যুতিক যন্ত্রগুলোর লোড লিমিট করে খরচটা বেঁধে দেয়া মানের আশেপাশে রাখার চেষ্টা করবে।
আরেক উদ্ভাবক কেএম নাজমুল হাসান বলেন, বর্তমানে বৈদ্যুতিক ক্ষেত্রে যে ১৫ শতাংশ নন টেকনিক্যাল লস হয়, তা এই সিস্টেম ব্যবহারে কমিয়ে আনা সম্ভব হবে। এর মাধ্যমে সরকারের প্রায় ১ হাজার কোটি টাকা বাঁচবে, যা দিয়ে ১৬০ মেগাওয়াট বিদ্যুত মেইন গ্রীডে যুক্ত করা যাবে। এতে নতুন করে আরও ২ কোটি মানুষকে বিদ্যুৎ সেবার আওতায় আনা যাবে।
সম্মেলনে প্রীতম ও নাজমুল ইসলাম বলেন, এ্যান্ড্রয়েড ফোন এবং কম্পিউটারের মাধ্যমে এই মিটারটি ব্যবহার করা যাবে। মোবাইলের ম্যসেজের মাধমে এসব সুবিধা পাওয়া যাবে। সরকারীভাবে বিদ্যুৎ বোর্ড বিষয়টিকে গুরুত্বের সঙ্গে দেখলে এ উদ্ভাবনীর সুবিধা সবাই ভোগ করতে পারবে।
সানবিডি/ঢাকা/হৃদয়/এসএস