বাংলাদেশ থেকে দক্ষ জনশক্তি নিতে চায় জাপান

নিজস্ব প্রতিবেদক প্রকাশ: ২০২৩-০২-১৫ ১৮:৫৩:৫৭


বাংলাদেশের উন্নয়নে সব সময় পাশে থাকার মধ্য দিয়ে ঐতিহাসিক বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ককে অনন্য উচ্চতায় নিয়ে যেতে চায় জাপান। পাশাপাশি বাংলাদেশ থেকে দক্ষ জনশক্তি রফতানিরও আগ্রহ রয়েছে দেশটির।

বুধবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) বাংলাদেশে জাপানের নবনিযুক্ত রাষ্ট্রদূত ইওয়ামা কিমিনোরি স্থানীয় সরকার মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলামের সঙ্গে সাক্ষাৎকালে এ কথা বলেন।

কিমিনোরি বলেন, ‘বাংলাদেশের স্বাধীনতার পর থেকেই বন্ধু দেশ হিসেবে জাপান বাংলাদেশের নানা চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় সম্ভাব্য সব ধরনের সাহায্য ও সহযোগিতা দিয়ে যাচ্ছে। ২০২৩ সালে জাপান ও বাংলাদেশের মধ্যকার কূটনৈতিক সম্পর্কের ৫১তম বার্ষিকী উদযাপিত হচ্ছে।’

তিনি বলেন, `বাংলাদেশের জাতীয় ও স্থানীয় উন্নয়নে জাপান বন্ধুদেশ হিসাবে আরো সম্পৃক্ত হতে চায় যাতে বাংলাদেশ মধ্যম আয়ের দেশ থেকে উন্নত দেশের লক্ষ্যে পৌঁছাতে পারে। এর অংশ হিসেবে জাপানি কোম্পানিগুলোকে বাংলাদেশে ব্যবসা করতে উদ্বুদ্ধ করা হবে। যাতে বাংলাদেশ তার অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির লক্ষ্য অর্জনের সক্ষম হয়।’

১৯৭৩ সালের অক্টোবরে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঐতিহাসিক জাপান সফরের কথা উল্লেখ করে স্থানীয় সরকার মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম বলেন, বাংলাদেশ ও জাপানের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক সুদৃঢ় ভিত্তির উপর প্রতিষ্ঠিত। জাপান ও বাংলাদেশ পারস্পরিক সুবিধার্থে টেকনোলজি, তথ্য ও প্রযুক্তি খাতসহ সংস্কৃতির বিভিন্ন বিষয়ে আদান-প্রদান করতে পারে। এতে উভয় দেশ লাভবান হবে।’

সাক্ষাৎকালে জাপানের রাষ্ট্রদূত চট্টগ্রামের পয়োঃনিষ্কাশন ব্যবস্থার উন্নয়নে বিনিয়োগের কথা বলেন। এ জন্য জাপানের বিভিন্ন কোম্পানি বাংলাদেশে বিনিয়োগের অপেক্ষায় আছে বলেও জানান তিনি ।

জাপানের নারুতো শহর এবং বাংলাদেশের নারায়ণগঞ্জ শহরের মধ্যে সাদৃশ্য রয়েছে উল্লেখ করে কিমিনোরি আরও বলেন, ‘এই দুই শহরের মধ্যে সিটি টু সিটি পার্টনারশিপ সহযোগিতা চুক্তি হতে পারে। এতে দুটি শহরই লাভবান হবে।’

এসময় দক্ষ জনশক্তি রফতানির আগ্রহ জানিয়ে কিমিনোরি বলেন, বাংলাদেশ থেকে জাপান দক্ষ জনশক্তি নিতে আগ্রহী। এ সময় নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজারে স্পেশাল ইকোনমিক জোনের জন্য সংযুক্ত সড়ক এবং অন্যান্য অবকাঠামো সুবিধা বৃদ্ধি করা হলে তাতে জাপানি বিনিয়োগ বাড়বে বলেও জানান তিনি।

স্থানীয় সরকার মন্ত্রী বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বের ফলে বর্তমানে বাংলাদেশের যে উন্নয়ন অব্যাহত রয়েছে তাতে জাপানের আরও বিনিয়োগের সুযোগ রয়েছে। ডিজিটাল বাংলাদেশ, স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণ, পদ্মা সেতু বাস্তবায়নসহ নানা ধরনের প্রকল্প বাস্তবায়নের ফলে জাতি হিসেবে বাংলাদেশের সক্ষমতার পরিচয় আজ বিশ্বে উজ্জ্বল।’

তিনি আরও বলেন, ‘মাতারবাড়ি বিদ্যুৎ উৎপাদন প্রকল্পের মতো বৃহৎ প্রকল্পে বিনিয়োগের মাধ্যমে বাংলাদেশ এবং জাপানের সম্পর্ক আরও জোরদার হবে।’

এ সময় মন্ত্রী জাপানের নবনিযুক্ত রাষ্ট্রদূত ইওয়ামা কিমিনোরিকে বাংলাদেশের স্বাধীনতার ইতিহাস, জাতির পিতার অবদান, সেনা শাসনের ফলে দেশের উন্নয়ন বাধাগ্রস্ত হওয়া, সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানে স্বাধীন নির্বাচন কমিশনের অধীনে নির্বাচন এবং বিরোধী রাজনৈতিক দল ও স্বাধীনতাবিরোধী শক্তিগুলোর ষড়যন্ত্র সম্পর্কে বিস্তারিত অবহিত করেন।

এএ