তৃতীয় দিনেও রাবিতে বিক্ষোভ অব্যাহত

প্রকাশ: ২০১৬-০৪-২৫ ১৯:১০:৪১


shockshova news pic রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) শিক্ষক এ এফ এম রেজাউল করিম সিদ্দিকী হত্যাকা-ের প্রতিবাদে তৃতীয় দিনেও বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করেছে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি, ইংরেজি বিভাগ ও অন্যান্য সংগঠন। পূর্ব নির্ধারিত ঘোষণা অনুযায়ী আজ সোমবার বিশ্ববিদ্যালয়ের কোন বিভাগের ক্লাস-পরীক্ষাও অনুষ্ঠিত হয় নি। তবে আগামীকাল থেকে ক্লাস-পরীক্ষা চলবে বলে জানিয়েছে শিক্ষক সমিতি।

অধ্যাপক সিদ্দিকী হত্যাকা-ের প্রতিবাদে সকাল সাড়ে ১০টায় বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি ও ইংরেজি বিভাগ রাবির সিনেট ভবনের সামনে এক ঘন্টাব্যাপী এ মানবন্ধন কর্মসূচি পালন করে।

মানববন্ধন থেকে এ হত্যাকা-ের সাথে জড়িতদের আইনের আওতায় এনে দ্রুত শাস্তির দাবি জানান শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা এবং মানবন্ধন শেষে রাবি উপাচার্য বরাবর একটি স্মারক লিপি হস্তান্তর করে শিক্ষক সমিতি। এর আগে ইংরেজি বিভাগ ক্যাম্পাসে শোক র‌্যালি করে।

মানববন্ধনে শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক শাহ্ আজমের সঞ্চালনায় বক্তব্য দেন ইতিহাস বিভাগের শিক্ষক অধ্যাপক চিত্তরঞ্জন মিশ্র, সহকারী অধ্যাপক সৈয়দ আব্দুল্লাহ আল মামুন চৌধুরী, আইন বিভাগের অধ্যাপক ড.হাসিবুল আলম প্রধান, ভূগোল ও পরিবেশ বিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক রকীব আহমেদ, কম্পিউটার সায়েন্স এ- ইঞ্জিনিয়ার বিভাগের সহকারী অধ্যাপক কাজী জাহিদুর রহমান, রাবি অফিসার অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মাসিউল আলম বাবু, রাবি প্রেস ক্লাবের সাবেক সভাপতি কাজল সিদ্দীক প্রমুখ।

এসময় আইন বিভাগের অধ্যাপক ড. হাসিবুল আলম প্রধান বলেন, আমরা রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা অনেক দুর্ভাগা। ২০০৪ সালে ২৪ ডিসেম্বর রবি শিক্ষক ইউনুস হত্যার মধ্য দিয়ে রাবিতে শুরু হয় শিক্ষক হত্যার ষড়যন্ত্র। গত ১২ বছরে একের পর এক সংস্কৃতিমনা, মুক্তবুদ্ধি চর্চা, প্রগতিশীল শিক্ষকদের হত্যা করা হয়েছে। কিন্তু কোন হত্যাকা-েরই সুষ্ঠু বিচার সম্পন্ন হয়নি। তবে কি এই বিশ্ববিদ্যালয়ে মুক্তবুদ্ধি চর্চা করা অপরাধ।

ইতিহাস বিভাগের শিক্ষক সৈয়দ আব্দুল্লাহ আল মামুন চৌধুরী এ হত্যাকা-ের প্রতিবাদ জানিয়ে বলেন, আমাদের অবস্থা এখন কন্যা দায়গ্রস্থ অসহায় পিতার মতো। এ সমাজের শিক্ষকদের প্রতিবাদের ভাষা হলো কলম। আমাদের অস্ত্র নেই, তলোয়ার নেই। কলম দিয়েই আমাদেরকে প্রতিবাদ জানাতে হবে।

তিনি আরো বলেন, পার্লামেন্টে যে আইন প্রণয়ন করছেন তা কি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক হত্যা বন্ধ করতে পারবে? কী আইন তৈরি করছেন যে আইন আমাদের নিরাপত্তা দিতে পারে না। আইন পরিবর্তন করতে হবে। আমরা এ জঘন্য হত্যাকা-ের বিচার চাই।

মানবন্ধন শেষে রাবি শিক্ষক সমিতি তাদের নির্ধারিত কর্মসূচি স্থগিত করে। এক সপ্তাহ পর আলোচনা করে পুনরায় কর্মসূচি প্রদান করা হবে বলে জানান সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক শাহ্ আজম। শিক্ষক সমিতির এ আন্দোলনে সংহতি জ্ঞাপন করে অন্যান্য পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়।

এছাড়া নিহত শিক্ষকের স্মরণে রাবির শহীদুল্লাহ কলাভবনে ১৪৭ নম্বর কক্ষে একটি শোকসভার আয়োজন করে ইংরেজি বিভাগ। শোকসভায় অধ্যাপক সিদ্দিকীর পরিবারের লোকজন উপস্থিত ছিলেন।

সানবিডি/ঢাকা/হৃদয়/এসএস