আসিফের খুনীদের ধরতে সাতদিনের আল্টিমেটাম

প্রকাশ: ২০১৬-০৪-২৬ ১৪:১৮:০৯


Asif-26042016মুন্সিগঞ্জ জেলার সিরাজদীখান উপজেলার কোলা ইউনিয়নের ছাত্রলীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি আসিফ হাসান হাওলাদারের বর্বরোচিত হত্যাকান্ডের মুল হোতাদের গ্রেফতারসহ সিরাজদীখান থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ইয়ার দৌসকে প্রত্যাহারের সাত দিন আল্টিমেটাম দিয়েছে আওয়ামী লীগ ও অংগ সহযোগী সংগঠনের নেতৃৃবন্দ।

মঙ্গলবার (১৬ এপ্রিল) বেলা ১২টায় জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে মাদকবিরোধী আসিফ মঞ্চ ও সিরাজদীখান উপজেলা ছাত্রলীগ আয়োজিত মানববন্ধনে এ আল্টিমেটাম দেওয়া হয়।

সিরাজদীখান কোলা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ও মাদকবিরোধী আসিফ মঞ্চের সমন্বয়কারী জাহাঙ্গীর খান বাবুর সভাপতিত্বে ও ছাত্রলীগ নেতা লোহানের সঞ্চলনায় মানববন্ধনের প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ অনলাইন অ্যাক্টিভিষ্ট ফোরাম (বোয়াফ) সভাপতি কবীর চৌধুরী তন্ময় বলেন, অত্যান্ত দুঃখজনক হলেও সত্য, দেশে আজ হত্যা, ধর্ষনের মহোৎসব চলছে। একে একে হত্যা করা হচ্ছে দেশেরে মেধাবী সন্তানদের। তারই ধারাবাহিকতায় ছাত্রলীগ নেতা আসিফ হাসান হাওলাদারকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে।

তিঁনি আরও বলেন, বিএনপি-জামায়াতের সময় নিয়োগ পাওয়া সিরাজদীখান থানার ভাপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ইয়ার দৌসের সহযোগীতায় বিনা চিকিৎসায় আসিফ জেল কারাগারে করুণ মৃত্যু বরণ করতে হয়েছে। আর শুধু তাই নয়, আসিফের পরিবারের সাথেও ওসি অশ্লীল ব্যবহার এমনকি হুমকি-ধামকি প্রদানের মাধ্যমে আসিফের হত্যাকান্ড অন্য দিকে ধাবিত করতে ষড়যন্ত্র করা হয় বলে আমরা জানতে পেরেছি।

যতই উপর মহরের ডাক-ঢোল বা হুমকি ধামকি দেওয়া হোক না কেন, আগামী সাত দিনের মধ্যে আসিফের হত্যাকারীদের গ্রেফতার এবং সিরাজদীখান থানার ভাপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে প্রত্যাহার করা না হলে বৃহত্তর আন্দোলনের ডাক দেওয়া হবে বলে মানববন্ধন থেকে হুশিয়ার করেন।

নিহত আসিফের বোন নুসরাত জাহান তনিমা বলেন, আমার ভাইকে মাদক ব্যবসায়ী ইয়ামিন, নুরুল আমিন রড দিয়ে পিটিয়ে গুরুতর আহত করে পুলিশকে টাকা দিয়ে আমার ভাইয়ে বিরুদ্ধে কোনো প্রকার অভিযোগ না থাকার পরও তাঁকে পুলিশ আটক করে থানা হাজত আটকে রাখে। সংবাদ পেয়ে আমার বাবা-মা থানায় আসিফকে দেখতে গেলেও আসিফের সাথে দেখা করতে দেওয়া হয়নি বরং উল্টো অশ্লীল ব্যবহার করা হয়েছে। চিকিৎসার কথা বলে আমার বাবার কাছ থেকে থানার এসআই দশ হাজার টাকা নিলেও চিকিৎসা না করে উল্টো মিথ্যা মামলা সাজিয়ে জেল হাজতে প্রেরণ করে ওসির সহায়তায় হত্যা করা হয়।

মানববন্ধনের আরো বক্তব্য রাখেন, সিরাজদীখান ছাত্রলীগের সভাপতি সৈকত মাহমুদ, ঢাকা মহানগর (দ.) ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারন সম্পাদক সাব্বির মাহমুদ, ঢাকা কলেজ ছাত্রলীগ নেতা জেএফ বোরহান, কোলা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মীর লেয়াকত আলী, নিহত আসিফের বাবা হাবিবুর রহমান হাওলাদার, একমাত্র বোন নুসরাত জাহান তনীমা ও স্থানীয় সংরক্ষিত মহিলা মেম্বার রৌশন আরা প্রমুখ।

উল্লেখ- ১২ এপ্রিল, ২০১৬ রাত সাড়ে আটটায় কোলা ইউনিয়ন ছাত্রলীগ ভারপ্রাপ্ত সভাপতি আসিফ হাসান হাওলাদার ও তাঁর সহকর্মী বিদ্যুৎমোল্লা মোটর বাইক যোগে বাবার ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে যাওয়ার পথে কোলা মিরপুরী দায়রা শরীফ প্রাঙ্গনে ইউনিয়ন ছাত্রলীগের বহিঃষ্কৃত সাধারণ সম্পাদক ইয়ামিন ও মাদক ব্যবসায়ী নুরুল আমীন গ্যাংদের হাতে হামলার শিকার হোন। গুরুতর আহত অবস্থায় আসিফকে হামলাকারীরা অপহরণ করে পাশ্ববর্তী এলাকার শ্রীনগরে সিং পাড়ার একটি বাড়ীতে অবরুদ্ধ করে রাখেন। কিন্তু সিরাদীখান থানার পুলিশ এসে আসিফকে প্রয়োজনীয় চিকিৎসা না দিয়ে গ্রেফতার করে জেল হাজতে পাঠায় এবং দুই দিন পর বিনা চিকিৎসায় আসিফ মুত্যু বরণ করেন। এরপর থেকে আসিফের পরিবার ও স্থানীয় আওয়ামী লীগ ও অংগ সহযোগী সংগঠনের নেতৃবৃন্দ অভিযোগ করে আসছে, পরিকল্পিতভাবে সিরাজদিখান ওসির নেতৃত্বে আসিফকে হত্যা করা হয়েছে।

সানবিডি/ঢাকা/জাহাঙ্গীর/আহো