শীগ্রই খুলবে মালয়েশিয়ার শ্রমবাজার
আপডেট: ২০১৬-০৪-৩০ ১০:১২:১৪
মালয়েশিয়ায় এখন বিদেশি শ্রমিক নেয়া বন্ধ। এ অবস্থায় সেখানকার শিল্প কলকারখানাগুলো শ্রমিক সংকটে পড়েছে। বিষয়টি এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে যে, নিয়োগকারী প্রতিষ্ঠানগুলো সরকারের ওপর নানাভাবে চাপ প্রয়োগ করতে শুরু করেছে। শ্রমিক সংকটের কারণে সেখানে উৎপাদনের ওপর প্রভাব পড়ছে। ফলে এই সংকট থেকে উত্তরণের উপায় খুঁজছে সরকার।
দেশটির উপপ্রধানমন্ত্রী ড. আহমেদ জাহিদ হামিদি বৃহস্পতিবার এ নিয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেছেন। তিনি বলেছেন, মালয়েশিয়ার সরকার খুব শিগগির পুনরায় বাংলাদেশসহ বিদেশি শ্রমিক নেয়ার বিষয়ে সিদ্ধান্তের কথা ঘোষণা দেবে। এ ব্যাপারে কাজ চলছে। খবর দ্য স্টার অনলাইনের।
জাহিদ হামিদি জানান, বিভিন্ন স্টেকহোল্ডারদের অভিযোগ ও পরামর্শের ভিত্তিতে সরকার বিষয়টি সক্রিয়ভাবে বিবেচনা করছে।
তিনি বলেন, বিদেশি শ্রমিক নেয়ার বিষয়টি নিয়ে আমি বেশ উদ্বিগ্ন। বিভিন্ন খাতে ইতিমধ্যে এর প্রভাব পড়তে শুরু করেছে। পুনরায় বিদেশি শ্রমিকের প্রবেশের দ্বার উন্মুক্ত করে দিতে নিয়োগ কোম্পানিগুলো সরকারের কাছে আহ্বান জানাচ্ছে। সরকার বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে নিয়েছে। খুব শিগগির এই ব্যাপারে গুরুত্বপূর্ণ ঘোষণা আসতে পারে।
আহমেদ জাহিদ এই বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, সরকার এই বিষয়ে বিভিন্ন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে পরামর্শ ও প্রস্তাবের বিষয়টি সবসময়ই উন্মুক্ত রেখেছে। বিশেষ করে ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে।
বেশ কয়েকটি বেসরকারি সংস্থা (এনজিও) এই বিষয়ে সরকারের কাছে অভিযোগ করেছে বলে তিনি জানান। তিনি বলেন, আমি তাদেরকে দোষারোপ করছি না। কিন্তু আমি মনে করি, বিদেশি শ্রমিকদের নিয়ে তাদের পরামর্শের জন্য শেষ পর্যন্ত দায়দায়িত্ব তাদেরই নিতে হবে। তবে অবৈধ শ্রমিকদের পুনরায় নেয়ার পরিবর্তে স্থানীয়দের কর্মীদেরই নিয়োগ দেয়া হবে।
প্রসঙ্গত, বাংলাদেশের জনশক্তি রপ্তানির বড় বাজার মালয়েশিয়া। প্রায় ছয় লাখ বাংলাদেশি সেখানে বিভিন্ন পেশায় কাজ করছেন। দীর্ঘদিন বন্ধ থাকার পর ২০১৩ সালে ‘জিটুজি’ পদ্ধতিতে ‘প্ল্যান্টেশন’ খাতে বাংলাদেশ থেকে জনশক্তি নিতে শুরু করে মালয়েশিয়া। তৎকালীন প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থানমন্ত্রী খন্দকার মোশাররফ হোসেনের বিশেষ উদ্যোগে খুলে যায় মালয়েশিয়ার শ্রমবাজার। তবে এ পদ্ধতিতে আশানুরূপ কর্মী দেশটিতে না যাওয়ায় বিপুলসংখ্যক মানুষ সাগরপথে জীবনবাজি রেখে মালয়েশিয়ার উদ্দেশে যাত্রা করে, যা জাতীয় ও আন্তর্জাতিক মিডিয়ায় সমালোচনার জন্ম দেয়।
এ প্রেক্ষাপটে মালয়েশিয়ার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জাহিদ হামিদি গত জুন মাসে সরকারের পাশাপাশি বেসরকারি তথা রিক্রুটিং এজেন্সির মাধ্যমে সব খাতে ১৫ লাখ কর্মী নেয়ার ঘোষণা দেন। সেই ঘোষণার আলোকেই গত ১৮ ফেব্রুয়ারি ‘জিটুজি প্লাস’ চুক্তি সই হয়। তবে এ চুক্তির পরদিনই জাহিদ হামিদি ঘোষণা দেন বিদেশ থেকে কোনো কর্মী নেবে না মালয়েশিয়া।
সানবিডি/ঢাকা/আহো