‘বিচারের দীর্ঘসূত্রতা মন থেকে হত্যাকাণ্ডের স্মৃতি মুছে দিচ্ছে’
আপডেট: ২০১৬-০৪-৩০ ১৫:২২:০৪
দেশে একের পর এক হত্যাকা- হচ্ছে। বিচারের দীর্ঘসূত্রতা মানুষের মন থেকে এসব হত্যাকাণ্ডের স্মৃতি মুছে দিচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন রাজশাহী সদর আসনের সাংসদ ফজলে হোসেন বাদশা।
শনিবার রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের অধ্যাপক এ এফ এম রেজাউল করিম সিদ্দিকীর হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদে সিনেট ভবনের সামনে সকাল ১১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতির মানববন্ধনে সংহতি প্রকাশ করে এ মন্তব্য করেন ।
তিনি আরো বলেন ‘রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র শিক্ষকের সমন্বয়ে গণঅভ্যুত্থানের আগাম বার্তা দেখতে পাচ্ছি। অধ্যাপক রেজাউল হত্যার বিচারের দাবিতে রাবি দৃষ্টান্ত স্থাপন করবে। আমাদের সকলে মিলে একটা মঞ্চ তৈরি করতে হবে। যে মঞ্চের নেতৃত্বে গড়ে উঠবে দূর্বার আন্দোলন। আর এজন্য সকলের ঐক্যবদ্ধ হবার বিকল্প নেই। এখনই সময় বাংলাদেশের জনগণকে জঙ্গিমুক্ত করতে হবে। জঙ্গিবাদকে প্রতিহত করতে বাংলাদেশের জনগণকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। জনগণ যদি ঐক্যবদ্ধ হয় তারা যতই শক্তিশালী হোক পরাস্ত হবেই।
উক্ত মানববন্ধনে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সহ বিভিন্ন বিভাগের দেড় হাজার শিক্ষার্থী অংশ নেয়। শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক শাহ্ আজম শান্তনু’র সঞ্চালনায় মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, আমরা এখানে কাঁদতে আসেনি। শোক প্রকাশ করতে আসেনি। রেজাউল করিম সিদ্দিকী যে আদর্শ ধারণ করতো সেই আদর্শকে হত্যা করে বন্ধ করা যাবে না। আমরা শোককে শক্তিতে পরিণত করে এ হত্যাকাণ্ডের বিচার না হওয়া পযর্ন্ত ঘরে ফিরে যাবো না।
বক্তারা আরো বলেন, আমরা কোন সভ্য সমাজে বাস করি যেখানে গলা কেটে ও কুপিয়ে জাতির বিবেকদের হত্যা করা হয়। আর সে হত্যাকাণ্ডের বিচারের দাবিতে শিক্ষকদের রাস্তায় নামতে হয়, আন্দোলন করতে হয়। আমাদের প্রশ্ন। কি অপরাধ ছিলো রেজাউল স্যারের ? কি ক্ষতি করেছিল দেশ ও সমাজের যে তার মতো নিরীহ ও শান্ত মানুষটিকে হত্যা করা হলো। সরকারের কাছে জাতি জানতে চায় এ প্রশ্নের উত্তর। তাই অতিসত্বর এ হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে দোষীদের চিহ্নিত করে বিচারের আওতায় আনা হোক।
মানববন্ধন থেকে জানানো হয় ২ মে সারাদেশে সকল পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে সকাল ১০টা থেকে ১টা পর্যন্ত কর্মবিরতি পালন করা হবে। ৩মে সকাল ১১টায় রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট ভবনের সামনে সকল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক নেতৃবৃন্দের উপস্থিতিতে মহাসমাবেশ হবে। আর এ মহাসমাবেশে বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের উপস্থিত হওয়ার জন্য আহ্বান করা হয়।
এদিকে অধ্যাপক এ এফ এম রেজাউল করিম সিদ্দিকীর হত্যাকাণ্ডের ৮ম দিনেও ক্যাাম্পাসে মানবন্ধন, অবস্থান সমাবেশ ও বিক্ষোভ মিছিল হয়েছে । শনিবার সকাল ১০টায় বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষক শিক্ষার্থীরা মিছিল নিয়ে শহীদুল্লাহ্ কলা ভবনের সামনে মুকুল প্রতিবাদ ও সংহতি মঞ্চে এসে সমবেত হয়। পরে সেখানে ইংরেজি বিভাগের শিক্ষক শিক্ষার্থীদের সঙ্গে সংহতি প্রকাশ করে।
এর আগে শনিবার সকাল থেকে বাংলা বিভাগ, অর্থনীতি বিভাগ, পরিসংখ্যান বিভাগ, ইনফরমেশন সায়েন্স এ্যান্ড লাইব্রেরি ম্যানেজমেন্ট বিভাগ, লোক প্রশাসন বিভাগ, ভাষা বিভাগ, আইন বিভাগ, শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিউট বিভাগের শিক্ষক শিক্ষার্থীরা তাদের নিজ নিজ ব্যানারে ক্যাম্পাসের প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করে।
প্রসঙ্গত গত ২৩ এপ্রিল রাজশাহী নগরের শালবাগান এলাকায় অধ্যাপক এ এফ এম রেজাউল করিম সিদ্দিকীকে তার বাসা থেকে ৫০ গজ দূরে কুপিয়ে হত্যা করে দুর্বৃত্তরা।
সানবিডি/ঢাকা/হৃদয়/আহো