স্ত্রীর ‘পরকীয়ার’ বলি ব্যবসায়ী

প্রকাশ: ২০১৬-০৫-০৪ ১০:০০:১৫


Mousumiরাজধানীর চকবাজারে জামিল হোসেন (৩২) নামে এক ব্যবসায়ীর বস্তাবন্দি লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। এ ঘটনায় নিহতের স্ত্রী ও স্ত্রীর প্রেমিকসহ চারজনকে আটক করা হয়েছে।

পুলিশের ধারণা, স্ত্রী মৌসুমীর (২২) পরকীয়ার জেরে এ হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। পুলিশ নিহতের লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল (মিটফোর্ড হাসপাতাল) মর্গে পাঠিয়েছে। সোমবার রাত ১০টার দিকে চকবাজার থানার ৫৯, ওয়াটার ওয়ার্কস রোডের বাসা থেকে পুলিশ লাশ উদ্ধার করে।

নিহতের ভগ্নিপতি আনোয়ার হোসেন জানান, ইসলামবাগে জামিলের স্কচটেপ তৈরির কারখানা আছে। চকবাজার ও ইসলামবাগে তার দুটি পাইকারি দোকানও আছে। সোমবার সকাল থেকে তিনি নিখোঁজ ছিলেন। কিন্তু স্ত্রী মৌসুমী বলেছেন তিনি দোকানে গিয়ে আর ফিরে আসেননি। দোকান কর্মচারীরা জানান তিনি দোকানেও যাননি। পরে ওইদিন সন্ধ্যায় জামিলের বোন শাহেদা পারভীন ও ভাগ্নি রুমা পারভীন থানায় গিয়ে জানান জামিলকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। পরে পুলিশ মৌসুমীকে থানায় ডেকে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করে। একপর্যায়ে ঘটনা জানাজানি হয়।

আনোয়ার আরো জানান, জামিলের পরিবারের অধিকাংশ সদস্য ভারতে থাকেন। দেশে বোন আর তিনি থাকতেন।

চকবাজার থানার পরিদর্শক (অপারেশন) হাফিজুর রহমান জানান, অভিযোগ পাওয়ার পর সোমবার রাত ১০টার দিকে মৌসুমী আক্তারকে খবর দিয়ে থানায় নিয়ে আসা হয়। তাকে কয়েক ঘণ্টা জিজ্ঞাসাবাদের একপর্যায়ে পুলিশের সন্দেহ হয়। পরে মৌসুমীকে সঙ্গে নিয়ে পুলিশ বাসা সার্চ করতে যায়।

বাসায় ঢুকতে চাইলে প্রথমে মৌসুমী বলেন চাবি হারিয়ে ফেলেছেন। পরে জেরার মুখে চাবি বের করে দেন। বাসার ড্রইংরুমে প্রবেশ করতেই লাশের দুর্গন্ধ পাওয়া যায়। তখন বাসার দুটি বেডরুমে তালা ঝুলানো ছিল। পরে বেডরুমের খাটের নিচ থেকে পলিথিনে মোড়ানো অবস্থায় সোমবার রাত ১টার দিকে জামিলের গলা কাটা লাশ উদ্ধার করা হয়। লাশ উদ্ধারের পর মৌসুমী বলেন, ‘রোববার রাত ১২টার দিকে আসলাম ও আল আমিন নামে দুই যুবক তাদের বাসায় যায়। তারা জামিলকে বঁটি দিয়ে গলা কেটে খুন করে। পরে আলামত মোছার জন্য ওই বঁটি পরিষ্কার করে। মৌসুুমীর দাবি, জামিলকে যখন খুন করা হয় তখন তিনি সাড়ে চার বছরের ছেলেকে নিয়ে অন্য কক্ষে ছিলেন।

মৌসুমী দাবি করেন, আসলাম ও আল আমিন খুন করে চলে যাওয়ার সময় শাসিয়ে যায়, জানাজানি হলে তাকে এবং ছেলেকেও হত্যা করা হবে। পরে মৌসুমী নিজেই ঘরের মেঝে থাকা রক্ত ধুয়ে পরিষ্কার করেন। খবর পেয়ে সিআইডির ক্রাইম সিন ইউনিট আলামত সংগ্রহ করেছে। মৌসুমীর দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে মঙ্গলবার ভোরের দিকে চকবাজার থেকে আসলাম ও আল আমিনকে আটক করে পুলিশ। গ্রেপ্তার হওয়া চারজন ও নিহত জমিলের সাড়ে চার বছরের শিশু বর্তমানে পুলিশ হেফাজতে রয়েছে। পুলিশ পরিদর্শক হাফিজুর রহমান জানান, আল-আমিন চকবাজারের একটি দোকানের ম্যানেজার। ব্যবসায়িক সূত্রে জামিলের সঙ্গে তার পরিচয় ও বাসায় যাতায়াত ছিল। আল-আমিনের সঙ্গে পরকীয়ার বিষয়টি স্বীকার করেছেন মৌসুমী। লাশ ময়নাতদন্ত শেষে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।

সানবিডি/ঢাকা/এসএসস