প্রতিবাদ মানববন্ধন: ছুটিতেও আন্দোলন চলবে

আপডেট: ২০১৬-০৫-০৪ ১৮:১১:৩৯


Rezaul.RUঅধ্যাপক এ এফ এম রেজাউল করিম সিদ্দিকী হত্যাকা-ের প্রতিবাদে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে আগামী ৭ তারিখ থেকে ঘোষিত গ্রীষ্মকালীন ছুটির মধ্যেও আন্দোলন চলবে বলে ঘোষণা দিয়েছে ইংরেজী বিভাগ। এদিকে অধ্যাপক রেজাউল করিমের হত্যার সঙ্গে জড়িতদের গ্রেফতার ও বিচারের দাবিতে বিভিন্ন সংগঠন ও বিভাগের ব্যানারে বুধবার ক্যাম্পাসে র‌্যালী ও মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে।

বুধবার দুপুর সাড়ে ১২টায় রাবির ইংরেজী বিভাগের সভাপতির কক্ষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে বিভাগের সভাপতি এএফএম মাসউদ আখতার বলেন, আগামী ৭ মে থেকে গ্রীষ্মকালীন ছুটিতে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ থাকলেও অধ্যাপক রেজাউল করিম হত্যার বিচার দাবিতে আমাদের আন্দোলন অব্যাহত থাকবে।

তিনি আরও বলেন, আমাদের সহকর্মীকে হত্যার সঙ্গে যারা জড়িত তাদের বিষয়ে পুলিশ এখনও কিছু জানাতে পারেনি। নিরীহ ও র্নিলিপ্ত এই মানুষটির হত্যার সঙ্গে যারা জড়িত তাদের শনাক্ত করে বিচারের আওতায় নিয়ে আসা হোক। কিন্তু নির্দোষ কেউ যেন হয়রানির শিকার না হয়।

এর আগে প্রিয় শিক্ষক হত্যাকা-ের প্রতিবাদে সকাল থেকেই বিভিন্ন বিভাগের ব্যানারে শোক র‌্যালী ক্যাম্পাসের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে। সকাল ১০টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদুল্লাহ কলা ভবনের সামনে থেকে র‌্যালি বের করে ইংরেজী বিভাগের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। পরে ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি, মনোবিজ্ঞান, ফলিত রসায়ন ও রসায়ন প্রকৌশল বিভাগসহ বিভিন্ন সংগঠন র‌্যালী করে।

সকাল সাড়ে ১০টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট ভবনের সামনে রাজশাহী সম্মিলিত সামাজিক আন্দোলনের ব্যানারে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। এতে রাবি শিক্ষক সমিতির সাবেক সভাপতি ড. আনন্দ কুমার সাহা বলেন, রাবির চার শিক্ষককে নৃশংসভাবে হত্যা করা হয়েছে। কিন্তু একটি হত্যাকা-েরও বিচার হয়নি। আমাদের জীবনের কি কোন নিরাপত্তা নেই। কখন যে আমাদের হত্যা করা হবে তারও ঠিক নেই। ঘাতকেরা আমাদের হত্যা করছে না বলেই আমরা বেঁচে আছি।

এরপর পূর্বঘোষিত কর্মসূচী অনুযায়ী অধ্যাপক রেজাউল হত্যাকা-ের বিচার দাবিতে সকাল ১১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট ভবনের সামনে শিক্ষক সমিতি মানববন্ধনের আয়োজন করে। এখানে মিছিল নিয়ে যোগ দেয় ইংরেজী বিভাগ, মনোবিজ্ঞান বিভাগ, ফলিত রসায়ন বিভাগ এবং ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা।

মানববন্ধনে রাবি শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. মোঃ শহীদুল্লাহ্ বলেন, অধ্যাপক রেজাউল আমাদের কাছে পিতৃতুল্য একজন শিক্ষক। তার মৃত্যুতে শিক্ষার্থী ও সহপাঠীরা পিতৃতুল্য একজন শিক্ষককে হারিয়েছেন। কাজেই পিতাকে হারিয়ে আমরা ঘরে বসে থাকতে পারি না। কারণ ঘাতকের চাপাতির আঘাত কখন কার ঘাড়ে পড়বে তা আমরা জানি না। অধ্যাপক রেজাউলের খুনীরা গ্রেফতার না হওয়া পর্যন্ত আমাদের আন্দোলন অব্যাহত থাকবে।

মানবন্ধন থেকে আরো জানানো হয়, আগামী ৭ ও ৮ তারিখ ক্যাম্পাসে সকাল ১০টা থেকে সাড়ে ১০টা পর্যন্ত অবস্থান ধর্মঘট পালন করবে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি। এবং আলোচনা করে পরবর্তী কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে।

এদিকে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যালেন্ডার অনুসারে বিশ্ববিদ্যালয়ে ৭ তারিখ থেকে ছুটির ঘোষণা থাকলেও ছুটির আগেই ক্যাম্পাস ছেড়ে বাসায় চলে যাচ্ছেন শিক্ষার্থীরা।

মানববন্ধনে আরো বক্তব্য দেন, সমিতির সাধারণ সম্পাদক শাহ্ আজম শান্তনু, সমাজবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক নীলুফার সুলতানা, মনোবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. মুর্শিদা ফেরদৌস বিনতে হাবিব, সমাজকর্ম বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. রবিউল ইসলাম, ফলিত রসায়ন ও রসায়ন প্রকৌশল বিভাগের প্রভাষক দিলীপ কুমার সরকার প্রমুখ।

গত ২৩ এপ্রিল রাজশাহী নগরের শালবাগান এলাকায় নিজ বাসা থেকে ৫০ গজ দূরে অধ্যাপক রেজাউল করিম সিদ্দিকীকে কুপিয়ে হত্যা করে দুর্বৃত্তরা।

সানবিডি/ঢাকা/এসএস