চ্যালেঞ্জ নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে মার্সেল
প্রকাশ: ২০১৬-০৫-০৭ ২২:৪৫:৩০
বাংলাদেশের বাজারে অন্যতম শীর্ষ স্থান অর্জনের লক্ষ্যে ২০১৬ সালকে চ্যালেঞ্জিং বছর হিসেবে নিয়েছে দেশীয় ব্র্যান্ড মার্সেল। প্রধানত ইলেকট্রিক্যাল ও ইলেকট্রনিক্স পণ্য উৎপাদন ও বাজারজাত করছে মার্সেল। এরই মধ্যে মার্সেল পণ্য উৎপাদন প্রক্রিয়ায় যুক্ত হয়েছে বেশকিছু সর্বাধুনিক প্রযুক্তি। আইএসও স্ট্যান্ডার্ড বিক্রয়োত্তর সেবায় এসেছে নতুনত্ব।
মার্সেল সূত্রমতে, ইলেকট্রিক্যাল পণ্যে, বিশেষ করে ফ্রিজ ও এয়ারকন্ডিশনার বিক্রির ক্ষেত্রে বাংলাদেশের বাজারে তাদের অবস্থান দ্বিতীয়। দেশের বাজারে শীর্ষস্থান পেতে উৎপাদন প্রক্রিয়া থেকে শুরু করে বিপণন কৌশল সর্বত্রই নেওয়া হয়েছে সময় উপযোগী কর্মপরিকল্পনা।
প্রোডাক্ট লাইনে যুক্ত হয়েছে নতুন নতুন ইলেকট্রনিক্স ও ইলেকট্রিক্যাল পণ্য। পণ্যের উচ্চ গুণগত মান নিশ্চিত করতে গবেষণা ও উন্নয়ন কার্যক্রমকে আরও জোরদার করা হয়েছে। বাড়ানো হচ্ছে সেলস ও সার্ভিস পয়েন্টের সংখ্যা। উৎপাদন বাড়ানোর সঙ্গে কমছে পণ্যের দামও। ফলে গ্রাহক পর্যায়ে মার্সেল পণ্যের চাহিদা বেড়েছে। সব মিলিয়ে ইলেকট্রনিক্স শিল্প খাতে শীর্ষ স্থানে পৌঁছতে ২০১৬ সালকেই চ্যালেঞ্জ হিসেবে নিয়েছে মার্সেল।
গত কয়েক বছর ধরে গড়ে ৩০ থেকে ৩৫ শতাংশ প্রবৃদ্ধি অর্জন করেছে মার্সেল। চলতি বছরে ৪০ শতাংশ প্রবৃদ্ধি অর্জনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে প্রতিষ্ঠানটি। এ লক্ষ্যমাত্রা পূরণে গ্রাহকদের চাহিদা অনুযায়ী প্রোডাক্ট লাইনে যুক্ত করা হয়েছে আকর্ষণীয় ডিজাইনের রিচার্জেবল ল্যাম্প, ওয়াটার পিউরিফায়ার, ইন্ডাকশন কুকার, রিচার্জেবল ফ্যান, গ্যাস স্টোভ, সিলড লিড এসিড রিচার্জেবল ব্যাটারি, এলইডি বাল্ব, ইলেকট্রিক স্যুইচ-সকেট, বাল্ব হোল্ডার ও ফ্যান রেগুলেটর। এ ছাড়াও রেফ্রিজারেটর, ফ্রিজার, এলইডি টেলিভিশন, এয়ার কন্ডিশনার, এয়ার কুলার, রাইস কুকার ও ব্লেন্ডারসহ অন্যান্য হোম ও কিচেন এ্যাপ্লায়েন্স।
মার্সেলের প্রকৌশলীরা জানান, সম্প্রতি মার্সেল ফ্রিজে যুক্ত হয়েছে ইনভার্টার প্রযুক্তি। এর ফলে ফ্রিজের বিদ্যুত খরচ কমবে ব্যাপকভাবে। ফ্রিজের কম্প্রেসার হবে দীর্ঘস্থায়ী। এটি সচল থাকলেও বাড়তি কোনো শব্দ হবে না। যুক্ত হয়েছে ন্যানো হেলথকেয়ার টেকনোলজি। সব মিলিয়ে মার্সেল রেফ্রিজারেটর এখন এশিয়ার মান ছাড়িয়ে সর্বশেষ ইউরোপ স্ট্যান্ডার্ডে পৌঁছে গেছে। মার্সেল এয়ারকন্ডিশনারে যুক্ত হয়েছে গোল্ডেন ফিন। এলইডি টিভি উৎপাদনে ব্যবহৃত হচ্ছে বিশ্বের সর্বাধুনিক প্রযুক্তি। সবমিলিয়ে নিজস্ব কারখানায় উচ্চমানের পণ্য তৈরি করছে মার্সেল।
কর্তৃপক্ষের মতে, বর্তমানে মার্সেলের রয়েছে আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন ২৫টি পণ্যের দেড় শতাধিক আকর্ষণীয় ডিজাইন ও মডেলের পণ্য। এর মধ্যে রয়েছে ৩১টি মডেলের রেফ্রিজারেটর, ৬ মডেলের ফ্রিজার, ৪১টি মডেলের এলইডি এবং ১৩টি মডেলের কালার লাইন বা সিআরটি টেলিভিশন, ৭ মডেলের এয়ার কন্ডিশনার, ৪ মডেলের মোটরসাইকেল, ৭ মডেলের জেনারেটর, ৯ ধরনের ব্লেন্ডার, ২৪ রকমের এলইডি বাল্ব, ৮ মডেলের ইলেকট্রিক সুইচ, ১৪ মডেলের রাইস কুকার, ৬ ধরনের আয়রন, ৪টি করে মডেলের ইলেকট্রিক কেটলি এবং রিচার্জেবল ফ্যান, ৫ মডেলের সিলড লিড এসিড রিচার্জেবল ব্যাটারি, ২টি করে মডেলের রিচার্জেবল ল্যাম্প, ইন্ডাকশন কুকার, ওভেন, রুম হিটার, ভোল্টেজ স্ট্যাবিলাইজার ও গ্যাস স্টোভ এবং ১টি করে মডেল রয়েছে ওয়াটার পিউরিফায়ার, ফ্যান রেগুলেটর, হোল্ডার, এয়ার কুলার, ভোল্টেজ প্রোটেকটর।
চলতি বছরের প্রবৃদ্ধির যে লক্ষ্যমাত্রা ঠিক করা হয়েছে তার প্রায় ৪০ শতাংশই ইতোমধ্যে পূরণ হয়ে গেছে। এ ক্ষেত্রে বড় ভূমিকা রেখেছে মার্সেল ব্র্যান্ডের এয়ারকন্ডিশনার বা এসি, ফ্রিজ, এয়ার কুলার ও রিচার্জেবল ফ্যান। গত দু’মাস ধরে দেশব্যাপী তীব্র গরম পড়ায় মার্সেল এসির বিক্রি ব্যাপকহারে বেড়েছে। পাশাপাশি এলইডি টেলিভিশনও বিক্রয় বৃদ্ধিতে উল্লেখযোগ্য অবদান রাখছে বলে জানান মার্সেলের বিপণন বিভাগের কর্মকর্তারা।
বাজার দ্রুত সম্প্রসারিত হওয়ায় এবং গ্রাহক চাহিদা ব্যাপক বৃদ্ধির প্রেক্ষাপটে সারা দেশকে দুটি প্রধান (উত্তর ও দক্ষিণ) ভৌগোলিক অংশে ভাগ করে বিপণন কার্যক্রম চালাচ্ছে মার্সেল। মার্সেলের প্রধান বিপণন কর্মকর্তা (উত্তর) মোশারফ হোসেন রাজীব বলেন, ‘আমাদের লক্ষ্য দেশের ইলেকট্রনিক্স বাজারের শীর্ষ স্থান দখল করা। অতি অল্প সময়ে গ্রাহকদের কাছে মার্সেল ব্যাপক জনপ্রিয়তা পেয়েছে। গ্রাহকদের আস্থা আরও বাড়াতে বাজারে ছাড়া হয়েছে নতুন নতুন পণ্য।’
মার্সেলের প্রধান বিপণন কর্মকর্তা (দক্ষিণ) শামীম আল মামুন বলেন, ‘আমাদের জন্য চলতি বছরটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। উৎপাদন বৃদ্ধির পরিপ্রেক্ষিতে পণ্যের ওভারহেড কস্ট কমেছে। যার ফলে ক্রেতারা এখন আরও সুলভ ও আকর্ষণীয় মূল্যে পাচ্ছেন মার্সেল পণ্য। সারা দেশে দ্রুত বিক্রয়োত্তর সেবা দেওয়া হচ্ছে আইএসও সনদপ্রাপ্ত সার্ভিস ম্যানেজমেন্ট সিস্টেমের মাধ্যমে।’