মূসক আইন বহুস্তর করার চিন্তা
প্রকাশ: ২০১৬-০৫-০৯ ১৫:৫৯:০৮
রোববার সন্ধ্যায় সচিবালয়ে মূসক সংক্রান্ত এক বৈঠক শেষে অর্থমন্ত্রী এ কথা জানান। বৈঠকে বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ, অর্থ প্রতিমন্ত্রী এম এ মান্নান, অর্থসচিব মাহবুব আহমেদ, বাণিজ্য সচিব হেদায়েতুল্লাহ আল মামুন, এনবিআর চেয়ারম্যান নজিবুর রহমান ছাড়াও এফবিসিসিআইয়ের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি শফিউল ইসলাম মহিউদ্দিন, প্রাক্তন সভাপতি সালমান এফ রহমান, কাজী আকরাম উদ্দিন, এ কে আজাদসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ও ব্যবসায়ী প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।
বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসার পর ২০১০ সালে মূসক বা ভ্যাট আইন যুগোপযোগী করার উদ্যোগ নেয়। বিশেষ করে, বিশ্বব্যাংক ও আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল আইনটির বিভিন্ন ত্রুটি তুলে ধরে সেগুলো সংস্কার করার কথা বলে আসছে। এরই অংশ হিসেবে মূসক আইন চূড়ান্ত করা হয়। আগামী ১ জুলাই থেকে নতুন আইনটি কার্যকর হওয়ার কথা রয়েছে। রোববার আইনটি নিয়ে প্রায় দুই ঘণ্টার যৌথ বৈঠক হয়। পরে অর্থমন্ত্রীর সভাপতিত্বে সরকারি নীতিনির্ধাকরদের বৈঠক হয়।
বৈঠক শেষে অর্থমন্ত্রী সাংবাবিদকদের বলেন, ‘ভ্যাট নিয়ে ব্যবসায়ীদের অনেকগুলো প্রস্তাব আছে। প্রস্তবাগুলো নিয়ে বেশ কয়েকবার বৈঠক হয়েছে। আজও তাদের কথা শুনেছি। তারা তাদের অবস্থানের কথা বলেছে। আমরা শুনেছি। তাদের দাবিগুলোর যৌক্তিকতা নিয়ে কাজ হচ্ছে। তবে তাদের মূল দাবি হচ্ছে বহুস্তরের মূসক আইন।’
তিনি আরো বলেন, ‘বিষয়গুলো বেশ জটিল। তাই এ মুহূর্তে সুনির্দিষ্টভাবে কিছু বলা সম্ভব নয়। তবে তাদের দাবিগুলো কিছুটা বিবেচনা করা হবে। আগামী ১ জুলাই থেকে আইনটি কার্যকর হবে। আগামী বাজেটেই এর বিস্তারিত জানা যাবে। তার আগে এ নিয়ে কিছু বলা সম্ভব নয়।’
আইএমএফ, বিশ্বব্যাংকের কোনো চাপ আছে কিনা, সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘আইনটি করা হচ্ছে আমাদের অর্থনীতির স্বার্থে। এখানে ওদের কোনো চাপ নেই।’
এফবিসিসিআইয়ের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি শফিউল আলম মহিউদ্দিন বলেন, ‘ ব্যবসায়ীরা ভোক্তাদের কাছ থেকে মূসক আদায় করে তা সরকারকে বুঝিয়ে দেয়। এখানে ব্যবসায়ীদের ওপর নানাভাবে চাপ দেওয়া হয়। আমরা সেসব চাপ থেকে ব্যবসায়ীদের রেহাই দেওয়ার জন্য বহুস্তরের ভ্যাট আদায় ব্যবস্থা প্রচলনের দাবি জানিয়েছি। অর্থাৎ সবার ওপর ১৫ শতাংশ হারে ভ্যাট আদায় না করে ব্যবসার আকারভেদে ভ্যাট আদায়ের দাবি করেছি। এতে ১০ শতাংশ, ১৩ শতাংশ ও ১৫ শতাংশ হারে ভ্যাট আদায় হবে। এতে একদিকে ব্যবসায়ীদের ওপর চাপ কমবে, অন্যদিকে সরকারের রাজস্ব আদায় বাড়বে।’
ভ্যাট আইনে দাতাদের চাপ প্রসঙ্গে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘আমি মনে করি না, সরকার আর এখন এ ধরনের কোনো চাপের মুখে আছে। যেখানে সব ধরনের চাপ উপেক্ষা করে নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু নির্মাণের সাহস দেখাতে পারে, সেখানে কোনো চাপে সরকার ভ্যাট আইন করবে, তা বিশ্বাস করি না। তবে ভ্যাটকে ব্যবসাবান্ধব করতে হলে আইনটিকে বহুস্তর করতে হবে।’