নিজেকে ‘মৃত’ ঘোষনা করলেন, সেই লাঞ্ছিত শিক্ষক (ভিডিও)
প্রকাশ: ২০১৬-০৫-১৮ ১১:২৪:৫৩
নিজ হাতে গড়া স্কুলে সম্পূর্ণ উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে মিথ্যা গুজবের মাধ্যমে অপমানিত হওয়ার ঘটনায় ন্যায্য বিচার দাবি করেছেন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন সেই লাঞ্ছিত প্রধান শিক্ষক শ্যামল কান্তি ভক্ত। জীবনভর আদর্শ শিক্ষক হিসেবে পেশাগত দায়িত্ব পালন করা শ্যামল কান্তির কণ্ঠে এখন সব হারানোর বেদনা স্পষ্ট।
‘যে শিক্ষক সুনামের সঙ্গে এতোগুলো বছর দায়িত্ব পালন করেছে সেই শিক্ষক শ্যামল কান্তি আজ মৃত,’ হতাশার এমন মর্মস্পর্শী কথাগুলো আক্ষেপ নিয়ে বলেছেন লাঞ্ছনার শিকার নারায়ণগঞ্জ বন্দর উপজেলার পিয়ার সাত্তার লতিফ উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শ্যামল কান্তি ভক্ত।
সম্পূর্ণ উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে মিথ্যা গুজবে নিজ হাতে গড়া স্কুলে অপমানিত হওয়ার ঘটনায় ন্যায্য বিচার দাবি করেছেন এই শিক্ষক।
হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ওই মানুষ গড়ার কারিগর বলেন, ‘এখনতো আমি মৃত। আমার অবস্থা একরকম জীবন্মৃত কিংবা মৃত। আমার আর কিছু নেই। কারণ আমার সম্মান নেই আমার কিছু নেই। আমার সঙ্গে যা করা হয়েছে এরপর সব কিছু শেষ। এখন আমাকে মেরে ফেললেও কিছু যায় আসে না। আমিতো একেবারেই শেষ-মৃত, আমার কিছু নাই।’
সব হারানোর বেদনা নিয়ে লাঞ্ছনার শিকার এই শিক্ষক আরও বলেন, ‘আমার বলতে যা ছিলো তা হলো এতো বছরে অর্জিত সম্মান, নিজের গড়া স্কুল, ছাত্র পড়ানো, বাড়ি বাড়ি গিয়ে খোঁজ নেয়া। এগুলো মনে করে লাভ নাই। এখন আমি নাই, আমি শেষ। জাতি যেনো এই মৃত শ্যামল ভক্তকে বাঁচিয়ে তোলে। যে ঘটনা ঘটেছে তার যেনো ন্যায্য বিচার হয়। এই সুষ্ঠু বিচারটা যেনো এই মৃত শ্যামল ভক্ত পায়।’
কোনো শিক্ষকের সঙ্গে এমন আচরণ কখনোই কাম্য নয় জানিয়ে তিনি বলেন, ‘যারা মানুষ গড়ার কারিগর তারা যেনো কেউ কোনোদিন এই পরিস্থিতির শিকার না হন। এভাবে আর যেনো কাউকে ফাঁসানো না হয়। পরিকল্পিতভাবে কারও যেনো সম্মানহানী না হয়। আমারতো কিছু নাই। আমার তিনটা মেয়ে তাদের কী হবে তা জানি না, আমি তাদের জন্য কী করতে পারবো বলতে পারছি না।’
‘ইসলাম ধর্মের বিরুদ্ধে কটূক্তির’ অভিযোগে গত শুক্রবার শ্যামল কান্তি ভক্তকে জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য এ কে এম সেলিম ওসমান আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের উপস্থিতিতে কান ধরে ওঠ-বস করান। এর আগে ওই শিক্ষককে মারধরও করা হয়।
https://youtu.be/ITAwXr5vr1c