মুস্তাফিজের দারুণ বোলিংয়ের পরও শাসরুদ্ধকর হার!

প্রকাশ: ২০১৬-০৫-২১ ০০:৪২:১৫


Mustafizurকরুন নায়ারকে ৫১ রানে জীবন দেওয়ার জন্য অনেক দিন আক্ষেপ করবেন ডেভিড ওয়ার্নার। সানরাইজার্স হায়দ্রাবাদের অধিনায়ক ক্যাচ ফেলেছিলেন। নতুন জীবন পেয়েছিলেন বলেই শেষ দুই বলে দুই বাউন্ডারি মেরে দিল্লি ডেয়ারডেভিলসকে শাসরুদ্ধকর ম্যাচটা জেতাতে পারলেন নায়ার। তাতে ১৩ ম্যাচে ১৪ পয়েন্ট নিয়ে আইপিএলের প্লে অফে খেলার সম্ভাবনাটা বাঁচিয়ে রাখলো দিল্লি। ১৩ ম্যাচে ১৬ পয়েন্ট নিয়ে প্লে অফের দরজাতেই দাঁড়িয়ে থাকলো হায়দ্রাবাদ। ৫৯ বলে ৮৩ রানে অপরাজিত থেকে ম্যাচের নায়ক নায়ার।

শুক্রবারের এই ম্যাচে শেষ ১২ বলে ১৬ রান দরকার দিল্লির। শেষ ওভার করতে মুস্তাফিজুর রহমানের হাতে বল তুলে দিলেন ওয়ার্নার। আগের তিন ওভারে ৮+১+১০=১৯ রান দিয়েছেন মুস্তাফিজ। উইকেট পাননি। এবার বড় পরীক্ষা। সামনে নায়ার। সামনে কার্লোস ব্রাথওয়েট। এই ক্যারিবিয়ান টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের শেষ ওভারে চারটি ছক্কা মেরে বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন করেছিলেন ওয়েস্ট ইন্ডিজকে। প্রথম বলে রান নিতে পারলেন না ব্রাথওয়েট। পরের বলে ব্যাটের বাইরের কানায় লেগে বল উড়ে গেলো থার্ড ম্যানে। বাউন্ডারি হওয়ার কথা। কিন্তু হাওয়ায় ভেসে অবিশ্বাস্য ক্যাচ নিলেন বারিন্দর স্রান। ১০ রানে বিদায় ব্রাথওয়েটের। ১৩ ম্যাচে ১৫ উইকেট হলো মুস্তাফিজের। ছন্দ কেটে গেলো দিল্লির। এই ওভারে মুস্তাফিজ মাত্র ৫ রান দেওয়ায় হায়দ্রাবাদের জয়ের আশাটা থাকলো।

ভুবনেশ্বর কুমার প্রথম চার বলে দিলেন ৫ রান। কিন্তু পঞ্চম বলে বাউন্ডারি মেরে দিলেন নায়ার। পরের বলেও বাউন্ডারি মেরে দিল্লির প্লে অফের খেলার আশা বাঁচিয়ে রাখার সাথে হায়দ্রাবাদকে হতাশায় ঢাকলেন নায়ার। যদিও এখনো পয়েন্ট টেবিলের শীর্ষে মুস্তাফিজরা। ম্যাচের শেষে ওয়ার্নার খেদ নিয়েই বললেন, ফিল্ডিংয়ে ডুবেছেন তারা। দায়ী বললেন নিজেকে। তার কারণেই তো ৮ চার ও ৩ ছক্কায় ৮৩ রানের অসাধারণ ইনিংস খেলে হিরো হতে পারলেন নায়ার! ওয়ার্নারের ৭৩ রানের ওপর দাঁড়িয়ে ৭ উইকেটে ১৫৮ রান করেছিল হায়দ্রাবাদ। শেষ বলে জেতা ম্যাচে দিল্লি ৪ উইকেটে করেছে ১৬১।

এর আগের গল্পটা ওয়ার্নারেরই। অন্য প্রান্তে পড়ছে উইকেট। কেউ বেশিক্ষণ থাকছেন না। কিন্তু এক প্রান্ত ধরে রেখে অবিচল হায়দ্রাবাদের আস্থার প্রতীক ওয়ার্নার। ইনিংস শেষে দেখা যাচ্ছে দিল্লি ডেয়ারডেভিলসের বিপক্ষে হায়দ্রাবাদের ব্যাটসম্যানদের কারো কথাই সেভাবে উল্লেখ করার মতো না। একমাত্র ওয়ার্নার ছাড়া। ৫৬ বলে ৭৩ রানের ইনিংস খেলে দলকে লড়ার মতো একটি সংগ্রহ গড়ার পথ করে দিয়ে গেছেন এই অস্ট্রেলিয়ান। আরো ছয়টি দশ থেকে বিশের মধ্যে রান আছে।

এবারের আইপিএলে বিরাট কোহলির সর্বোচ্চ রানকে কারো হয়তো ধরা সম্ভব না। কিন্তু ওই দলেরই এবি ডি ভিলিয়ার্স ছাড়িয়ে গিয়েছিলেন ওয়ার্নারকেও। তার কাছ থেকে আবারো দ্বিতীয় স্থানটি উদ্ধার করেছেন ওয়ার্নার। রায়পুরে ওয়ার্নারদের ব্যাটিংয়ের শুরুতেই ছন্দ কেটেছে। এক প্রান্ত ধরে কেবল ওয়ার্নার খেলে চললেন। তাতে উদ্বোধনী জুটিতে ৪৬ রান আসলেও শিখর ধাওয়ান ১০ নিয়েই বিদায় হলেন। ইনিংসের ৩ রান আউটের প্রথমটি তার। দুই রান পর দিপক হুডাও (১) রান আউট।

ওয়ার্নার বড় বড় শট খেললেন না। টিকে থাকতে হবে। লড়ে গেলেন। যুবরাজ সিং এলেন। ১০ করে বিদায়। মজেজ হেনরিকেস ১৮ করে আউট। এবারের আসরের সপ্তম ফিফটি তুলতে ৪০ বল খেললেন ওয়ার্নার। দলের ১১৭ রানের সময় ৫ম ব্যাটসম্যান হিসেবে ফিরলেন। ৮টি চার ও একটি ছক্কা তার ইনিংসে। ১৩ ম্যাচে এখন ৬৪০ রান ওয়ার্নারের। এরপর ইউইন মরগ্যান (১৪), নামান ওঝা (অপরাজিত ১৬) ও ভুবনেশ্বর কুমার (১৩) যা করলেন তাতে লড়ার স্কোর পায় হায়দ্রাবাদ। কিন্তু তা যথেষ্ট হয়নি।