তনু হত্যা : দ্বিতীয় ময়নাতদন্ত বোর্ডের প্রধানকে প্রাণনাশের হুমকি

আপডেট: ২০১৬-০৫-২৫ ১০:২১:০১


Tanuকুমিল্লা ভিক্টোরিয়া কলেজের ছাত্রী ও নাট্যকর্মী সোহাগী জাহান তনু হত্যার দ্বিতীয় ময়নাতদন্ত বোর্ডের প্রধান এবং কুমেকের ফরেনসিক বিভাগের প্রধান ডা. কামাদা প্রসাদ সাহাকে (কেপি সাহা) প্রাণনাশের হুমকি দিয়ে চিঠি দেয়া হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।

মঙ্গলবার দুপুর পৌনে ২টার দিকে ডা. কামদা প্রসাদ সাহা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে তার কার্যালয়ে সাংবাদিকদের কাছে এ হুমকীমূলক চিঠির কথা জানান।

চিঠিতে বলা হয়েছে, ‘আপনি তনু হত্যা মামলা নিয়ে ধুম্রজাল সৃষ্টি করছেন, যা আপনার জন্য ভয়াবহ হয়ে দাঁড়াচ্ছে। সহজ মামলাটিকে প্যাঁচিয়ে জটিল করার চেষ্টা করবেন না, আপিন কি চান আপনার পরিবার ও ছেলে মেয়ে ধবংস হয়ে যাক?’

চিঠিতে আরও উল্লেখ করা হয়েছে ‘তনুর মা তার বক্তব্যে বলেছেন সার্জেন্ট জাহিদ ও সিপাহী জাহিদ তনুকে বাসা থেকে ডেকে নিয়ে গেছে। সরকারের আজ্ঞাবহ হয়ে কাজ করবেন না। সেনাবাহিনীর সদস্যদেরকে এই মামলায় জড়ানো হলে হাসিনার সিংহাসন নড়বড়ে হয়ে যাবে, তাই না?

ডা. কেপি সাহা জানান, মঙ্গলবার সকালে তিনি অফিসে আসার পর ডাকযোগে প্রেরিত হাতে লেখা ২ পৃষ্ঠার এ চিঠিটি পান।  হুমকীর বিষয়ে আজ বিকেলের মধ্যেই তিনি জীবনের নিরাপত্তা চেয়ে কোতয়ালী মডেল থানায় জিডি করবেন বলে জানিয়েছেন।

হুমকির প্রতিক্রিয়ায় ডা.কামদা প্রসাদ সাহা জানান, হুমকিতে যে কোনো মানুষই বিচলিত হয়, আমিও তো মানুষ। আমি নিয়মের মধ্যে আছি, তবে আমি ভীত নই।

এদিকে মঙ্গলবার সকালে মেডিকেল বোর্ড ২য় ময়নাতদন্তের বিষয়ে সভা করেছেন বলে জানিয়েছেন ডা.কামদা প্রসাদ সাহা।

তিনি জানান, মেডিকেল কলেজ প্রিন্সিপাল ও আইনজীবীদের সঙ্গে পরামর্শ করে ডিএনএ রিপোর্ট এর জন্য আদালতে আবেদন জানানো হবে। ডিএনএ রিপোর্ট পাওয়া সাপেক্ষে ২য় ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন দেয়া হবে।

মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা সিআইডির পরিদর্শক গাজী মো. ইব্রাহিম বলেন, ডা.কামদা প্রসাদ সাহাকে হুমকি দেয়ার বিষয়ে আমি কিছু জানি না, আমাকে কেউ কিছু জানায়নি।

উল্লেখ্য, গত ২০ মার্চ তনুর মরদেহ কুমিল্লা সেনানিবাসের অভ্যন্তরে তার বাসার পাশে একটি জঙ্গলের ভেতর থেকে উদ্ধার করা হয়। পরদিন কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ফরেনসিক বিভাগের প্রভাষক ডা. শারমিন সুলতানা তনুর প্রথম ময়নাতদন্ত করেন। পরে ডিএনএ আলামত সংগ্রহের জন্য মামলার ২য় তদন্তকারী সংস্থা ডিবির আবেদনের প্রেক্ষিতে গত ৩০ মার্চ কবর থেকে তনুর মরদেহ উত্তোলন করে ৩ সদস্যের মেডিকেল বোর্ড ২য় দফায় ময়নাতদন্ত ও ডিএনএ আলামত সংগ্রহ করে।

পরে ৪ এপ্রিল তনুর প্রথম ময়নতদন্ত রিপোর্ট দেয়া হয়। এতে তনুকে হত্যা কিংবা ধর্ষণের আলামত ছিল না বলে জানানো হয়। এতে চরম সমালোচনার মুখে পড়ে প্রথম ময়নাতদন্ত রিপোর্ট। কিন্তু গত ৫৫ দিনেও নানা অজুহাতে দেয়া হয়নি ২য় ময়নাতদন্ত রিপোর্ট।

এরই মধ্যে গত ১৬ মে রাতে ডিএনএ রিপোর্টে তনুকে ধর্ষণের আলামত পাওয়ার খবর সিআইডি থেকে গণমাধ্যম কর্মীদের জানানো হয়। ওই ডিএনএ রিপোর্ট পেতে তৎপর হয়ে উঠে ফরেনসিক বিভাগ। কিন্তু ডিএনএ রিপোর্ট দিতে সিআইডি আপত্তি জানালে শেষ পর্যন্ত ৩ সদস্যের ময়নাতদন্ত বোর্ডের সভায় ডিএনএ রিপোর্টের জন্য ফরেনসিক বিভাগ আদালতে যাওয়ারই সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলে জানা গেছে।

সানবিডি/ঢাকা/এসএস