‘আমাকে নিয়ে আর গুতাগুতি করবেন না’

সানবিডি২৪ প্রকাশ: ২০২৩-০৭-০৬ ১৬:৩৭:৫৯


আফগানিস্তানের বিপক্ষে গতকাল ওয়ানডে ম্যাচটা ছিল তামিম ইকবালের শেষ ম্যাচ, চট্টগ্রামে এক সংবাদ সম্মেলনে তামিম ইকবাল এই ঘোষণা দিয়েছেন। আজ সকালে অনেকটা হুট করেই তামিম ইকবাল একটি সংবাদ সম্মেলনের ডাক দেন। বুধবার উপস্থিত সাংবাদিকরা গোটা সংবাদ সম্মেলনের পরিবেশকে ‘হৃদয় বিদারক’ বলছেন। তামিম ইকবাল এমন এক সময় ক্রিকেটকে বিদায় জানালেন যখন ২০২৩ ক্রিকেট বিশ্বকাপ শুরু হতে আর তিন মাস বাকি।

কী বলেছেন তামিম ইকবাল

তামিম ইকবাল এই সংবাদ সম্মেলনে অনুরোধ করেছেন, “আমার টপিকটা এখানেই শেষ করে দেন, অন্তত আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের ক্ষেত্রে। কেন, কী, কী হতে পারতো, এটা শেষ করেন এখানেই”।

এখন পর্যন্ত তামিম ইকবালের ক্রিকেট জীবনে যারা সঙ্গে ছিলেন, সতীর্থ ছিলেন সবাইকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন তিনি।

“যার কাছে আমি ছোটবেলা থেকে অনুশীলন করেছি তাকে ধন্যবাদ জানাই, আমি যাদের সাথে প্রিমিয়ার লিগ, জাতীয় দল, জাতীয় লিগে যাদের সাথে ক্রিকেট খেলেছি তাদের সবাইকে ধন্যবাদ জানাই”।

“ক্রিকেট বোর্ডকে ধন্যবাদ জানাই, তারা আমাকে জাতীয় দলের প্রতিনিধিত্ব করার সুযোগ দিয়েছে, অধিনায়কত্ব করার সুযোগ দিয়েছে”।

তামিম ইকবাল বিদায় জানানোর সময় নিজের পারফরম্যান্স নিয়ে বলেন, “হয়তো আমি ততটা ভালো নেই, অথবা ভালো, আমি জানিনা কিন্তু আমি আমার শতভাগ চেষ্টা করেছি যখনই মাঠে ছিলাম”।

তিনি যোগ করেন, “আমি আশা করি আপনারা এই পরিস্থিতিকে সম্মান জানাবেন। আন্তর্জাতিক ক্রিকেট ছাড়াটা সহজ না আশা করি আপনারা বুঝবেন।”

কেন বিদায় নিয়েছেন তা জানা যায়নি

বিদায় ঘোষণার পরে তিনি লম্বা সময় কেঁদেছেন। তামিক ইকবাল কোনও সংবাদ সম্মেলনে এমন আবেগের বহিঃপ্রকাশ ঘটাতে দেখা যায়নি।

এই সংবাদ সম্মেলনে তামিম ইকবাল বলেন, “আমাকে নিয়ে আর বেশি গুতাগুতি করবেন না, সামনে যারা ক্রিকেটার আসবেন তাদের ক্রিকেট ভালো খেলুক খারাপ খেলুক শুধু ক্রিকেট নিয়েই থাকবেন”

তামিম ইকবাল এর আগে ২০২১ সালের টি টোয়েন্টি বিশ্বকাপের আগে টি টোয়েন্টি ক্রিকেট থেকে বিশ্রাম নিয়েছিলেন, এরপরের বছর তিনি আন্তর্জাতিক টি টোয়েন্টি থেকে বিদায় নেন।

এবারেও বিশ্বকাপের ৩-৪ মাস আগে ওয়ানডে দল থেকে তথা আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকেই বিদায় নেন।

বিদায় জানানোর সময় তামিম ইকবাল বলেন, “আমি আমার বাবার স্বপ্নপূরণ করতেই ক্রিকেট খেলেছি”।

এই হঠাৎ অবসরের কোনও কারণ তিনি বলেননি।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত সাংবাদিক একুশ তপাদর বলেন, “তামিম ইকবালের আত্মবিশ্বাস তলানিতে চলে যাচ্ছিল, তার পারফরম্যান্স নিয়ে প্রশ্ন উঠেছিল। সেই সঙ্গে বিসিবি প্রধান তাকে নিয়ে করা মন্তব্যের পর আবহটা বদলে যায়। এসব মিলিয়েই তিনি এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।”

তবে তামিম ইকবাল আফগানিস্তানের বিপক্ষে সিরিজ শুরুর আগেও বিশ্বকাপে লক্ষ্যের কথা বলেছিলেন।

অর্থাৎ এই দুই দিনের মধ্যেই এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।

মূলত প্রথম ওয়ানডে ম্যাচের আগে সংবাদ সম্মেলনে তামিম ইকবাল বলেছিলেন, তিনি মাঠে নেমে বুঝতে পারবেন তিনি ফিট কি না।

গণমাধ্যমে খবর এসেছে তার এই কথায় চন্ডিকা হাথুরুসিংহে ক্ষুব্ধ হয়েছিলেন।

পুরো ফিট না হয়ে তামিম ইকবালের খেলার কথা শোনার পর বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড প্রেসিডেন্ট নাজমুল হাসান পাপনও নেতিবাচকভাবে নিয়েছিলেন।

আফগানিস্তানের বিপক্ষে প্রথম ও তামিম শেষ ওয়ানডেতে তিনি ২১ বলে ১৩ রান তোলেন।

তামিম ইকবাল অনেকদিন ধরেই পিঠের চোটে ভুগছিলেন, চলতি বছরও বেশ কটি সিরিজ ও ম্যাচ মিস করেছেন তিনি।

তামিম ২০০৭ সালে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে আসেন, তিনি এখন বাংলাদেশের হয়ে সবচেয়ে বেশি রানের মালিক।

বাংলাদেশের হয়ে সবচেয়ে বেশি ওয়ানডে সেঞ্চুরিও তামিম ইকবালের।

তামিম অধিনায়ক হিসেবে ৩৭টি ওয়ানডে ম্যাচ খেলেছেন, যার মধ্যে ২১টিতে জয় পেয়েছে বাংলাদেশ।

তামিম ইকবাল বাংলাদেশের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ টেস্ট রান সংগ্রাহক হিসেবে বিদায় নিয়েছেন।

তিনি প্রায় ৩৯ গড়ে ৭০টি টেস্ট ম্যাচ খেলেছেন, সেঞ্চুরি করেছেন ১০টি।

সূত্র: বিবিসি

এএ