মিথ্যা প্রচারণার কারণে পুঁজিবাজারের প্যানিক সৃষ্টি হয়: বিএসইসি চেয়ারম্যান

সানবিডি২৪ প্রতিবেদক প্রকাশ: ২০২৩-১০-০৮ ২১:২৫:৪২


সোশ্যাল মিডিয়ার মিথ্যা প্রচারণার কারণে ভিউ থেকে আয় পাওয়ায় অনেকে পুঁজিবাজার নিয়ে প্যানিক সৃষ্টিকারী সংবাদ প্রচার করছে বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) চেয়ারম্যান অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম।

রোববার (৮ অক্টোবর) ওয়ার্ল্ড ইনভেস্টম্যান্ট উইক-২০২৩ উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি একথা বলেন।

বিএসইসি চেয়ারম্যান বলেন, সোশ্যাল মিডিয়ার মিথ্যা প্রচারণার কারণে ভিউ থেকে অনেকে বিপুল পরিমাণ আয় করে থাকে। এই ভিউকে কেন্দ্র করেই পুঁজিবাজার নিয়ে প্যানিক সৃষ্টিকারী সংবাদ প্রচার করে আসছে অনেকে। পুঁজিবাজারে ইথিকস পিন্সিপাল নিয়ে যারা কাজ করে তাদের সংবাদ খুব বেশি চলে না। আগামী ৭ দিনপর মার্কেটে এটা হয়ে যাবে ওটা হয়ে যাবে এমন সংবাদ প্রচার করা হয়। যার ফলে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে উদ্বেগ কাজ করে। যার কারণে অনেকে ভয়ে শেয়ার সেল করে দেন এতে বাজারে একটা প্যানিক পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়।

তিনি বলেন, বর্তমান কমিশন দায়িত্ব নেওয়ার পর গত তিন বছর একটার পর কভিড-১৯, রাশিয়া-উইক্রেন যুদ্ধ, এখন আবার শুরু হয়েছে ইসরায়েল-ফিলিস্তিন যুদ্ধ, এটা কতদিন চলবে জানি না। এমন একটার পর একটা ঝামেলার মধ্যে দিয়েই আমাদের দিন যাচ্ছে। যারা আনইথিক্যাল নিউজ প্রচার করে তাদের আপনারা পরিহার করুন। এটাকে কিভাবে আপনারা করবেন তাই আপনারাই জানেন।

শিবলী রুবাইয়াত বলেন, বিভিন্ন দেশে রোড শো’র মাধ্যমে বিদেশী বিনিয়োগকারীদের আকর্ষণ করে আসছি। কিন্তু বিদেশীরা মিথ্যা নিউজ প্রকাশের পর বিনিয়োগে আগ্রহ হারিয়ে ফেলছেন। এমন প্যানিক নিউজ করার পেছনে মূল কারণ বড় অঙ্কের পেমেন্ট। যদি এভাবে প্যানিক সৃষ্টিকারী নিউজ বন্ধ না হয় তাহলে ‘ওয়ার্ল্ড ইনভেস্টমেন্টে’র মত এমন আয়োজন করে পুঁজিবাজারের প্রচার ও প্রসারের যে চেষ্টা করা হচ্ছে সেটা কোনো কাজে আসবে না।

বিএসইসি চেয়ারম্যান আরও বলেন, ‘ওয়ার্ল্ডের বেস্ট আর্কিটেক দিয়ে হযরত শাহজালালের তৃতীয় টার্মিনাল তৈরি করা হয়েছে। এতো সুন্দর এয়ারপোর্ট আমি আগে কোথাও দেখিনি। এখন আমাদের দেশ থেকে এত পরিমাণ মানুষ বিদেশ যাচ্ছে যে প্রত্যেকদিন টিকিটের দাম ১০ থেকে ২০ হাজার টাকা বেড়ে যাচ্ছে। তার মানে সিট নাই। এছাড়া ইউরোপের বিভিন্ন বিমান সংস্থার ১৫ থেকে ৩৫টি এয়ারলাইন্স আমাদের এখানে আসতে চাইছে। কারণ এখানে ব্যবসা আছে। তাই তারা ফুয়েল পুড়িয়ে এখানে আসতে চায়।

তিনি আরও বলেন, অনেকেই বলেন আমাদের এখান থেকে গার্মেন্টস চলে যাবে। তবে আগামী ২০ বছরে বাংলাদেশ থেকে গার্মেন্টস যাওয়ার মতো কোনো পরিস্তিতি তৈরি হয়নি। কারণ আমাদের ওভার পপুলেশন ও স্বস্তা শ্রমের জন্য গার্মেন্টস এখন থেকে কোনো যাওয়ার সুযোগ নেই। তবে ভারতে যেতে পারতো তাও সম্ভব নয়; কারণ সেখানে ট্রেড ইউনিয়নের ঝামেলা আছে। পাশাপাশি আমাদের আইটি ইন্ডাস্ট্রিজ রয়েছে পাইপ লাইনে। যার মাধ্যমে আমরা ফোর্থ ইন্ডাস্ট্রিয়াল রেভুলেশনের জন্য প্রস্তুত রয়েছি। আগামীতে এত বিনিয়োগ আমাদের আসছে আমরা তা নিতে পারবো কি না জানিনা।

সম্প্রতি ভারতীয় হাইকমিশনার আগরতলার সঙ্গে বাংলাদেশের বিমান যোগাযোগ শুরু হতে যাচ্ছে বলেও জানান।

তাই দীর্ঘ মেয়াদী বিনিয়োগের জন্য আমাদের ক্যাপিটাল মার্কেট ছাড়া অন্য কোনো দিকে যাবেন না; গেলে ভুল করবে। পুঁজিবাজারে উন্নয়নে ইতোমধ্যে বন্ড কে বাংলাদেশ ব্যাংক এক্সপোজার লিমিটের বাইরে দিয়ে দিয়েছে।

পুঁজিবাজারের নিয়ে প্যানিক যারাই সৃষ্টি করবে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিচ্ছে বিএসইসি। চলতি মাসেও সোশ্যাল মিডিয়ার মিথ্যা প্রচারণা করায় ২-৫ জনকে আইনি প্রক্রিয়া মধ্যে নেওয়া হয়েছে বলেও জানান দেশের পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রণকারী সংস্থার প্রধান।

এএ