ক্ষোভ মোবাইলে প্রকাশ করলে হবে না, রাজপথে আসতে হবে: ফখরুল

সানবিডি২৪ প্রতিবেদক প্রকাশ: ২০২৩-১০-১২ ২১:০৭:৪৮


দেশের বিরাজমান পরিস্থিতিতে তরুণদের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর তাঁদের উদ্দেশে বলেন, ‘অনেকে বলেন এখন তরুণদের ক্ষোভটা মোবাইল সেটে। স্ট্যাটাস দিলেই ক্ষোভ শেষ। ক্ষোভ মোবাইল সেটে দিলে শেষ হবে না, ক্ষোভ রাজপথে আসতে হবে। রাজপথে এসে তাঁদের পরাজিত করতে হবে, রুখে দাঁড়াতে হবে।’

তরুণদের উদ্দেশে তিনি আরও বলেন, ‘আপনাদের মধ্যে সেই বিদ্রোহ কোথায়? আপনাদের মধ্যে সেই আঁচ তৈরি করতে হবে। আজকে আমাদের মধ্যে আশার সঞ্চার হয়েছে। আপনাদের সঙ্গে নিয়ে এবার আমরা এই যুদ্ধ জয় করতে পারব। শুধু স্লোগান দিলে হবে না, ঝাঁপিয়ে পড়তে হবে। আমরা একটা বড় যুদ্ধে নেমেছি। একটা ফ্যাসিবাদী শক্তির বিরুদ্ধে, যাদের ধাক্কা দিয়ে সরিয়ে দেওয়ার যুদ্ধে নেমেছি।’

বৃহস্পতিবার (১২ অক্টোবর) বিকেলে রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে এক ছাত্র কনভেনশনে তিনি এ কথা বলেন। সরকার পতনের এক দফা দাবিতে ফ্যাসিবাদবিরোধী ছাত্র ঐক্য এই কনভেনশনের আয়োজন করে। সেখানে আগামী ১৫ অক্টোবর সংবাদ সম্মেলন করে কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে বলে ফ্যাসিবাদবিরোধী ছাত্র ঐক্যের পক্ষ থেকে জানানো হয়।

সরকারের যাওয়ার সময় হয়ে গেছে, অযথা ঘোরাঘুরি করে কোনো লাভ নেই মন্তব্য করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘এখনো বলছি, সময় আছে দুর্গাপূজার মধ্যে যে ছুটিটা থাকবে, এর মধ্যে সিদ্ধান্ত নিয়ে আপনারা দ্রুত একটা নির্বাচন, একটা নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন দিয়ে দেন, ল্যাঠা চুকে যাবে।’

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাম্প্রতিক সফর প্রসঙ্গে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘আমেরিকা গেলেন, এখন আবার ব্রাসেলসে যাচ্ছেন। চতুর্দিকে ঘোরাঘুরি শুরু করেছেন, যদি কোনো রকমে সামাল দেওয়া যায়, এই চেষ্টা করছেন। আর ঘোরাঘুরি করে কোনো লাভ নেই। খুব পরিষ্কার করে বলতে চাই—এই দেশের সব মানুষ এখন অতিষ্ঠ হয়ে গেছে। তাঁরা বাঁচতে চায় আপনাদের হাত থেকে।’

এ সময় প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘এত যদি আপনি জনপ্রিয় হন, তাহলে ভোট দিতে অসুবিধা কোথায়? এত কিছু বানিয়েছেন। পদ্মা সেতু বানিয়েছেন, টানেল বানিয়েছেন, উড়াল সেতু, এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে বানিয়েছেন। লোকেতো আপনাকেই ভোট দেবে। তাহলে দেন না একটা নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচনের ব্যবস্থা করেন। সেটা আপনি করবেন না। কারণ আপনি জানেন, নিরপেক্ষ নির্বাচন হলে আপনাদের অস্তিত্বও থাকবে না।’

বিএনপির প্রচারবিষয়ক সম্পাদক শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানিকে গ্রেপ্তারের প্রসঙ্গ টেনে ফখরুল বলেন, ‘যার কপালে এখনো স্বৈরাচারের গুলির দাগ রয়েছে, তাঁকে অন্যায়ভাবে, বেআইনিভাবে এবং অযাচিতভাবে আক্রমণ করা হয়েছে। এর ক্ষোভ জানানোর ভাষা আমার জানা নেই। কোন অবস্থায় গেলে এ্যানির মতো একজন সাহসী ছেলে আদালতে দাঁড়িয়ে বলে—চোর-ডাকাতকেও এভাবে মারে না, আমাকে তাঁরা যেভাবে মেরেছে। এখান থেকে একটা বার্তা পাবেন। সেই বার্তা হচ্ছে—মুখে কুলুপ এঁটে বসে থাকবেন না, হাত গুটিয়ে বসে থাকবেন না। নিজেরা যদি বাঁচতে চান, দেশকে যদি বাঁচাতে চান, তাহলে জেগে উঠতে হবে। রাজপথে লড়াই-সংগ্রাম করে তাদের (সরকার) পরাজিত করতে হবে। অন্যথায় তারা আপনাদের মাথার ওপর চেপে বসবে। আজকে এ্যানিকে যেভাবে মেরেছে, কালকে সবাইকে এভাবে মারবে।’

ছাত্রদলের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি রাশেদ ইকবাল খানের সভাপতিত্বে কনভেনশনে নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক, গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকি, গণ অধিকার পরিষদের (একাংশ) সভাপতি নুরুল হক নুর, ভাসানী পরিষদের আহ্বায়ক শেখ রফিকুল ইসলাম বাবলুসহ আরও অনেকে বক্তব্য রাখেন।

এএ