ঢিলেঢালা পোশাকের ট্রেন্ড …
প্রকাশ: ২০১৬-০৬-২৭ ১৩:৫০:৪৯
পোশাকে ঢিলেঢালার পর্ব শুরু হয়ে গেছে। লুকে ভিন্নতা আনতে, গরমে স্বস্তির জন্য আঁটোসাঁটো ড্রেসে যে অস্বস্তি, তা থেকে মুক্তি দিতে এখন ধীরে ধীরে ট্রেন্ড সরে যাচ্ছে খানিকটা ঢিলেঢালা আরামদায়ক পোশাকের দিকে।
ওভারসাইজড ফ্যাশন সম্পর্কে অনেকেরই ধারণা, বেঢপ সাইজের পোশাক বড় বলে মানানসই হয় না। কিন্তু এতে যে কাউকে দেখায় আকর্ষণীয়। এখন বড় সাইজের শার্টের পাশাপাশি টিউনিক, স্কার্ট, প্যান্ট, জ্যাকেটও ওভারসাইজড পাওয়া যায়। ডিজাইনাররা আজকাল এ ধরনের আউটফিটে বেশ প্রাধান্য দিচ্ছেন, যেমন দিচ্ছে মসিনো কিংবা গুচির মতো ব্র্যান্ড।
নতুন ট্রেন্ড ও স্টাইল মানিয়ে নিতে একটু সময় লাগে। তবে সমন্বয়টা জরুরি। যেমন টপস ও বটমসের কম্বিনেশন- দুটো মানানসই ও আকর্ষণীয় হওয়া প্রয়োজন। শুধু ওভারসাইজড কোনো ড্রেস পরলেই হলো না, ঠিকভাবে পরা হচ্ছে কি না, সেটাও দেখতে হয়। বিগ সাইজ টপ পরলে স্লিম ফিটেড বটমস পরা চাই, যাতে দুটোর কম্বিনেশন ও কনট্রাস্ট ঠিক থাকে। ঠিক তেমনি ঢিলেঢালা বটমসের সঙ্গে ফিটেড টপস দেখতে স্টাইলিশ। আরও নির্দিষ্টভাবে বললে টপস যদি ওভারসাইজড শার্ট/টি-শার্ট/টিউনিক হয়, তাহলে সঙ্গে স্কিন টাইট ট্রাউজার বা টাইটস মানানসই ও ট্রেন্ডি। অন্যদিকে বটমসে পালাজো বা বিগ সাইজের টাউজার যদি পরা হয়, তাহলে টপসে একটু ফিটেড হওয়া ভালো। কারণ, তাতে সামঞ্জস্যপূর্ণ দেখায়। মেয়েরা ওভারসাইজের মধ্য থেকে খানিকটা শেপ দেখাতে চাইলে অ্যাকসেসরিজ ব্যবহার করতে পারে। যেমন বেল্ট।
তবে মিনিম্যালিস্টিক ফ্যাশনের মন্ত্র লেস ইজ মোর এখানেও প্রযোজ্য। যতটা সম্ভব অ্যাকসেসরিজ কম পরা উচিত। একটি বেল্ট অথবা শোল্ডার ব্যাগই যথেষ্ট। ফুটওয়্যারটিও সিম্পল হওয়া ভালো, হিল বা চকমকে স্টোনের দিকে না যাওয়াই ফ্যাশনসম্মত। নইলে পুরো গেটআপই বেখাপ্পা দেখাবে।
ছেলে ও মেয়ে উভয়ের কাছেই ওভারসাইজড ট্রেন্ড ধীরে ধীরে জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। তবে ছেলেদের ফ্যাশনে বড় সাইজের চল আগে থেকে। হিপহপ বা পাঙ্কদের স্টাইল স্টেটমেন্ট এ রকম। আর লং লুজ টি-শার্টের সঙ্গে ব্যাগি জিনস তো বহু বছর ধরেই ছেলেদের পছন্দের কম্বিনেশন। তবে এখন শীত ও গ্রীষ্ম- দুই সিজনে সোয়েটার, লুজ শার্ট, কমফোর্টেবল পাজামা স্টাইলের প্যান্ট ইত্যাদির মাধ্যমে নতুন স্টাইল করা যাবে। গত উইন্টারে ওভারসাইজড কোট, ব্লেজার ও ওভারকোট বেশ জনপ্রিয় ছিল। লক্ষণীয় যে ছেলেদের শর্টস কিংবা ট্রাউজার এখনো ফিটেড তবে অ্যাকসেসরিজে ক্যাপ, লেদার, বেল্ট, পপ-কালারড ঘড়ি পরলে পুরো লুকের একঘেয়েমি দূর হবে। কারণ, ছেলেদের পোশাকের কালারগুলো একটু নিউট্রাল।
ডিজাইনাররা এই ওভারসাইজড স্টাইলকে আরও কমফোর্টেবল করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। ফ্যাব্রিকের ওজন ও কোয়ালিটির দিকে নজর দেয়া হচ্ছে, যাতে এই পোশাক আরও আকর্ষণীয় দেখায়। মেয়েদের চিক ও ফেমিনিন দেখানোর জন্য কাট ও প্যাটার্ন নিয়ে এক্সপেরিমেন্ট চলছে।
ওভারসাইজড পোশাক মূলত ক্যাজুয়াল লুকের জন্য, তাই ফরমাল অনুষ্ঠানে যতটা সম্ভব না পরাই ভালো। এই ফ্যাশনের সব আউটফিট বিগ সাইজ হবে, এমনটি নয়। টপ অথবা বটমসে ফিটেড আউটফিট থাকা প্রয়োজন। সিমপ্লিসিটি এই স্টাইলের বৈশিষ্ট্য। তাই যতটা সম্ভব মেকআপ ও অ্যাকসেসরিজ কম পরা ভালো। শুধু অ্যাকসেসরিজের মাধ্যমেও এই স্টাইল ফলো করা সম্ভব, সে জন্য বিগ সাইজ অ্যাকসেসরিজ পাওয়া যায়। তবে স্বতঃস্ফূর্ত থাকাটা জরুরি।
অ্যান্টি ফিট, লুজ ফিট বা ওভারসাইজড- যে নামই হোক, দিন দিন সবাই এই স্টাইলের দিকে ঝুঁকছে। স্ট্রিট ফ্যাশন থেকে কতুর, ছুটির দিনের পোশাক থেকে ফরমাল, কিংবা ক্যাজুয়াল ওয়্যার থেকে রেড কার্পেট- সব জায়গায় চোখে পড়বে এই ফ্যাশন। লুকে ভিন্নতা আনতে তো বটেই, গরম থেকে মুক্তি পেতেও এই ট্রেন্ড জমে উঠতে পারে।
ঢিলেঢালা পোশাকের বেশ কিছু সুবিধা রয়েছে। বিশেষ করে গরমে। পোশাক যদি গায়ের সঙ্গে লেগে থাকে, তাহলে ঘাম বেশি হয়। আর গরমও বেশি লাগে। মূলধারার পাশাপাশি ওভারসাইজড ফ্যাশনের ট্রেন্ডও চলছে। তাই গরমে এই স্টাইলের ড্রেস বেশি দেখা যায়। ব্যক্তিগতভাবে আমিও ওভারসাইজড পোশাক পছন্দ করি। বিশ্বখ্যাত ডিজাইনাররা তো তৈরি করছেনই, আবার কিছু দেশের সংস্কৃতিতেও ওভারসাইজড ফ্যাশনের প্রভাব লক্ষ করা যায়। যেমন জাপান। তাদের কিমোনো স্টাইলের পোশাকগুলো কিন্তু এ রকমই।
সানবিডি/ঢাকা/এসএস