২৫ শতাংশ বাড়তে পারে এলএনজির বৈশ্বিক বাণিজ্য
সানবিডি২৪ প্রকাশ: ২০২৩-১২-১৪ ০৯:৪১:৫৫
তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাসের (এলএনজি) বৈশ্বিক বাণিজ্য গত বছর রেকর্ড স্পর্শ করেছিল। আগামী পাঁচ বছরের মধ্যে জ্বালানিটির বাণিজ্য আরো ২৫ শতাংশ বাড়ার সম্ভাবনা রয়েছে। পরিমানের দিক থেকে জ্বালানিটির বার্ষিক বাণিজ্যের পরিমাণ দাঁড়াতে পারে প্রায় ৫০ কোটি টনে। ইন্টারন্যাশনাল এনার্জি ফোরামের (আইইএফ) সাম্প্রতিক এক প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে।
‘ফ্রেজাইল ইকুইলিব্রিয়াম: এলএনজি ট্রেড ডায়নামিকস অ্যান্ড মার্কেট রিস্কস’ শীর্ষক ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, বৈশ্বিক এলএনজি আমদানিতে জাপানকে ছাড়িয়ে শীর্ষস্থানে উঠে এসেছে চীন। অন্যদিকে চলতি বছর যুক্তরাষ্ট্র বিশ্বের শীর্ষ এলএনজি রফতানিকারক দেশে পরিণত হয়েছে।
এ বিষয়ে আইইএফের সেক্রেটারি জেনারেল জোসেফ ম্যাকমোনিগল বলেন, ‘অতীতের যেকোনো সময়ের তুলনায় বর্তমানে এলএনজির চাহিদা বেশি। প্রতি বছরই চাহিদা অব্যাহত বাড়ছে। এটি একদিকে যেমন অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিতে চালিকাশক্তি হিসেবে কাজ করছে, বিশ্বজুড়ে তেমনি জ্বালানি সুরক্ষাও জোরদার করছে।’
জোসেফ ম্যাকমোনিগল বলেন, পাইপলাইন ছাড়াই এলএনজি খুব সহজে পরিবহন করা যায়, যা এটিকে অনেক বেশি সহজলভ্য করে তুলেছে। এ কারণেই মূলত ইউরোপ বড় ধরনের জ্বালানি সংকট উতরে যেতে সক্ষম হয়েছে। এছাড়া এশিয়ার দেশগুলোর জন্য এটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি জ্বালানি, যা লাখো মানুষকে জ্বালানি দারিদ্র্য থেকে মুক্তি দিয়েছে।
শিপব্রেকার প্রতিষ্ঠান বাঞ্চেরো কস্তা সম্প্রতি এক প্রতিবেদনে জানায়, চলতি বছরের প্রথম আট মাসে এলএনজির বৈশ্বিক রফতানি ১ দশমিক ৭ শতাংশ বেড়েছে। রফতানির পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ২৭ কোটি ১৮ লাখ টনে।
এলএনজি সবচেয়ে শীতল প্রাকৃতিক গ্যাস, যেটি বিশেষ ধরনের ট্যাংকারে জাহাজীকরণ করা হয়। বিশ্বজুড়ে সরবরাহকৃত গ্যাসের ১৫ শতাংশই এলএনজি। পাইপলাইন গ্যাসের তুলনায় এলএনজি পরিবহন অনেক বেশি সহজ। প্রাকৃতিক গ্যাসকে এলএনজিতে রূপান্তর করে অনেক দূর পর্যন্ত পরিবহন করা যায়। এটি অত্যন্ত স্বল্প সময়ের মধ্যে সরবরাহযোগ্য, পাইপলাইনের মাধ্যমে যা সম্ভব নয়। এলএনজির আরেকটি বড় সুবিধা এটি মুক্তবাজারে সহজেই বিপণন করা যায়। এসব সুবিধার কারণেই মূলত পাইপলাইন গ্যাসের বিপরীতে এলএনজির চাহিদা বাড়ছে।
আইইএফের প্রতিবেদনে বলা হয়, এলএনজির বৈশ্বিক বাণিজ্য ও বিনিয়োগ প্রবাহে বড় পরিবর্তন এসেছে। এক্ষেত্রে প্রধান প্রভাবকের ভূমিকা পালন করেছে ভূরাজনৈতিক প্রেক্ষাপট। বিশেষ করে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ শুরুর পর গত বছর জ্বালানি পণ্যের বাজার নতুন মোড় নেয়।
ইউরোপীয় ইউনিয়নে (ইইউ) জ্বালানি পণ্য আমদানির সবচেয়ে বড় উৎস রাশিয়া। কিন্তু ইউক্রেনে হামলার প্রতিক্রিয়ায় দেশটির ওপর থেকে আমদানিনির্ভরতা কমিয়ে আনার সিদ্ধান্ত নেয় ইইউ। দেয়া হয় একের পর এক নিষেধাজ্ঞাও। জবাবে রাশিয়াও শত্রুভাবাপন্ন দেশে জ্বালানি সরবরাহ বন্ধ করে দেয়ার হুমকি দেয়। এমন পরিস্থিতিতে রাশিয়ার গ্যাস উত্তোলনেও নেতিবাচক প্রভাব পড়ে। গত দুই বছরে দেশটিতে গ্যাস উত্তোলন ২১ শতাংশ কমেছে। চলতি বছরের এখন পর্যন্ত দেশটি ১৪ বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন গ্যাস উত্তোলন করেছে।
এনজে