ব্যাংকের অনিয়ম-দুর্নী‌তি-অর্থ পাচারে ‘দুষ্টুচক্র’ জড়িত

সানবিডি২৪ প্রতিবেদক প্রকাশ: ২০২৩-১২-২৬ ১৭:৩১:৩৪


ব্যাং‌কিং সে‌ক্টরের অব্যবস্থাপনা, অনিয়ম-দুর্নী‌তি, অর্থ পাচার সবকিছুই ‘দুষ্টুচক্র’ সৃ‌ষ্টি করছে বলে মন্তব্য করেছেন, বেসরকা‌রি সংস্থা- সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) সম্মানীয় ফেলো অধ্যাপক ড. মোস্তাফিজুর রহমান।

মঙ্গলবার (২৬ ডিসেম্বর) রাজধানীর পল্টনে ইকোনমিক রিপোর্টার্স ফোরাম (ইআরএফ) আয়োজিত দেশের সমসাময়িক অর্থনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে মতবিনিময়কা‌লে এ মন্তব্য করেন। ইআরএফ সভাপতি মোহাম্মদ রেফায়েত উল্লাহ মীরধার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানের সঞ্চালনা করেন সাধারণ সম্পাদক আবুল কাশেম।

অধ্যাপক ড. মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ব্যাংক খাতে অব্যবস্থাপনা অনিয়ম চলছে, খেলাপি ঋণ বাড়ছে, কিছু ব্যাংক বিপর্যয়ের মধ্যেও পড়েছে। এখন আর্থিকভাবে দুর্বল ব্যাংকগুলোকে একীভূত বা মার্জার করার বিষয় আগেই অনেকবার বলা হয়েছে। এজন্য আইনি দুর্বলতা ও নিয়মনীতিগুলো ঠিক করতে হবে। কারণ ব্যাংক খাত হচ্ছে অর্থনীতির প্রাণ। এ খাতের সমস্যা পুরো অর্থনীতির উপরে পড়ে।

তিনি বলেন, ঋণ খেলাপির বিপরীতে একটি বড় অংকের অর্থ ব্যাংকের প্রভিশনিং করতে হচ্ছে। এর মানে টাকাটা অর্থনীতিতে অংশগ্রহণ করতে পারছে না, ব্যাংকে পড়ে থাকছে। এতে করে একদিকে ব্যাংকের ঋণ দেওয়ার ক্ষমতা কমে যাচ্ছে। অন্যদিকে আয় কমে যাচ্ছে অর্থাৎ ১০০ টাকার আমানতের বিপরীতে সুদ দিচ্ছি কিন্তু ব্যাংক ঋণ দিতে পারছে ৮০ টাকা। তার মানে ঋণের সুদহার বাড়াতে হচ্ছে। এটা আবার বিনিয়োগে প্রভাব ফেলছে।

ব্যাং‌কিং সে‌ক্টরের এ অবস্থা একটি ‘দুষ্টুচক্র’ সৃ‌ষ্টি কর‌ছে জানিয়ে মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, এ খাতের অব্যবস্থাপনা, অনিয়ম, দুর্নী‌তি ও অর্থ পাচার সবকিছুই এক জায়গায় নিয়ে এসেছে। এটা নিয়ন্ত্রণের মূল দায়িত্ব কেন্দ্রীয় ব্যাংকের। তাদেরকে স্বাধীনভাবে কাজ করতে দিতে হবে। এখানে হস্তক্ষেপ করা যাবে না। আগামীতে এ খাতের শৃঙ্খলা ফেরাতে এ উদ্যোগ নিতে হবে।

যুক্তরাষ্ট্রের স্যাংশনের বিষয় সিপিডি ফেলো তিনি বলেন, আমেরিকা তাদের নিজেদের সুবিধার জন্য বা‌ণিজ্য নিষেধাজ্ঞা (স্যাংশন) দেয়। আবার প্রয়োজনে ভেনিজুয়েলার মত দেশের সঙ্গে চু‌ক্তি করে। তাই তারা স্যাংশন দিবে কি দিবে না সে দিকে নজর না দিয়ে যেন স্যাংশন দেওয়ার সুযোগ না পায় এ বিষয়ে জোর দিতে হবে। আমাদের শ্র‌মিকদের মজুরি ও অধিকার নি‌শ্চিত করতে হবে।

সরকার নানা সুযোগ-সু‌বিধা দিয়ে তৈরি পোশাক শিল্পকে এ পর্যায়ে এনেছে। পোশাকের বিশ্বের বাজার ৭০০ বি‌লিয়ন ডলার। আমাদের রপ্তানির সম্ভাবনা রয়েছে। এত বড় খাত অন্য একটাও নেই। রপ্তানি বহুমুখীকরণ করতে হবে, নতুন বাজারে যেতে হবে। তবে এ খাত বাদ দিয়ে নয়। কারণ এখনও এ বাজারের অনেক বড় অংশ দখল করার সুযোগ রয়েছে। এজন্য আমাদের আরও আধুনিকায়ন করতে হবে। এছাড়া আমাদের চামড়া খাত ও ফার্মাসিউটিক্যালের রপ্তানি জোর দিতে হবে। বিশ্বে ফার্মাসিউটিক্যালে অনেক বড় বাজার আছে বলেও জানান সিপিডির এ সম্মানীয় ফেলো।

এএ