ধানের দুই নতুন জাতের অনুমোদন
আপডেট: ২০২৪-০১-১০ ১৬:১৫:১৫
জাতীয় বীজ বোর্ড বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট (ব্রি) উদ্ভাবিত নতুন দুই জাতের উচ্চ ফলনশীল ধানের অনুমোদন দিয়েছে। এগুলো হলো প্রিমিয়াম কোয়ালিটি ও উচ্চ প্রোটিন সমৃদ্ধ নতুন ধানের জাত ব্রি ধান১০৭ ও জিরা টাইপ জাত ব্রি ধান১০৮। আজ মঙ্গলবার (৯ জানুয়ারি) অনুষ্ঠিত জাতীয় বীজ বোর্ডের ১১১তম সভায় ধানের এসব জাত অনুমোদন করা হয়। এর ফলে ব্রি উদ্ভাবিত সর্বমোট ধানের জাতের সংখ্যা দাঁড়ালো ১১৫টি।
জাতীয় বীজ বোর্ডের ১১১তম সভায় সভাপতিত্ব করেন কৃষি মন্ত্রণালয়ের সচিব ওয়াহিদা আক্তার। এতে ব্রির মহাপরিচালক ড. মো. শাহজাহান কবীরসহ সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ও বিভাগের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। নতুন উদ্ভাবিত জাত ব্রি ধান১০৭, প্রিমিয়াম কোয়ালিটি সম্পন্ন উফশী বালাম জাতের বোরো ধান। এ জাতটি বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট (ব্রি) কর্তৃক ২০১৫ সালে কৃষকের মাঠ থেকে সংগ্রহ করে বিশুদ্ধ লাইন বাছাইকরণ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে নির্বাচিত করা হয়। ব্রি গাজীপুরের গবেষণা মাঠে নির্বাচিত কৌলিক সারিটি ৩ বছর সফল ফলন পরীক্ষণের পর ২০১৯ সালে ব্রির আঞ্চলিক কার্যালয়গুলোর গবেষণা মাঠে ও ২০২০ সালে বাংলাদেশের বিভিন্ন কৃষি অঞ্চলে কৃষকের মাঠে পরীক্ষা নিরীক্ষা করা হয়।
২০২২ সালে বীজ প্রত্যয়ন এজেন্সি কর্তৃক স্থাপিত প্রস্তাবিত জাতের ফলন পরীক্ষায় (পিডিটি) সন্তোষজনক হওয়ায় জাতীয় বীজ বোর্ডের মাঠ মূল্যায়ন দলের সুপারিশের ভিত্তিতে জাতটি ছাড়ার বিষয়ে আবেদন করা হয়। জাতীয় বীজ বোর্ডের সভায় সারাদেশে চাষের জন্য একটি প্রিমিয়াম কোয়ালিটির উচ্চ ফলনশীল বালাম জাতের বোরো ধান হিসেবে লতা বালামকে ব্রি ধান১০৭ হিসেবে অনুমোদন দিয়েছে।
ব্রি ধান ১০৭ এর পূর্ণ বয়স্ক গাছের গড় উচ্চতা ১০৩ সেন্টিমিটার। ব্রি ধান১০৭ এর গড় জীবনকাল ১৪৩ দিন, যা ব্রি ধান৫০ এর সমান। এর ডিগ পাতা প্রশস্ত, খাড়া ও লম্বা এবং পাতার রং সবুজ। প্রতি হেক্টরে গড় ফলন ৮ দশমিক ১৯ টন। তবে এটি অনুকূল পরিবেশে উপযুক্ত পরিচর্যা পেলে হেক্টর প্রতি ৯ দশমিক ৫৭ টন পর্যন্ত ফলন দিতে সক্ষম। পিভিটি পরীক্ষায় দশটি অঞ্চলে ব্রি ধান১০৭ এর ফলন ব্রি ধান৫০ এর চেয়ে প্রায় ১৭ দশমিক ৬৭ শতাংশ বেশি পাওয়া যায়। এ ধানের গুণগতমান ভালো অর্থাৎ চালের আকৃতি অতি লম্বা চিকন (৭.৬ মিলিমিটার)।
এ ধানের চালে অ্যামাইলোজ এবং প্রোটিনের পরিমাণ যথাক্রমে ২৯ দশমিক ১ এবং ১০ দশমিক শূন্য ২ শতাংশ এবং ভাত ঝরঝরে। ব্রি ধান১০৭ এর এক হাজারটি পুষ্ট ধানের ওজন ২৬ দশমিক ১ গ্রাম। এ ধানের দানার রং খড়ের মতো এবং চাল অতি চিকন ও সাদা। উচ্চ ফলনশীল, অতি চিকন চাল ও ভাত ঝরঝরে হওয়ায় বাংলাদেশের মানুষ এ জাত চাষাবাদে ব্যাপক আগ্রহী হবে বলে আশা করা হচ্ছে।
এনজে