বিশ্বের অন্যান্য কমিশনের চেয়ে বিএসইসিতে অবাধ তথ্যের প্রবাহ বেশি: বিএসইসি চেয়ারম্যান
আপডেট: ২০২৪-০২-১৫ ১৭:৩৭:২৫
বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) চেয়ারম্যান অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম বলেছেন, বিশ্বের অন্যান্য দেশের সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনে সাংবাদিকদের প্রবেশাধিকারে নানা বাধার সম্মুখীন হতে হয়। তবে এক্ষেত্রে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনে (বিএসইসি) সাংবাদিকরা অবাধে তথ্য পেয়ে থাকেন।
বৃহস্পতিবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) বিএসইসিতে ক্যাপিটাল মার্কেট জার্নলিস্টস ফোরামের (সিএমজেএফ) নতুন কমিটির অভিষেক এবং বিদায় কমিটির সংবর্ধনার অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, আমরা আপনাদের সবদিক থেকে সহযোগিতা করার চেষ্টা করি। সিএমজেএফের কাজকে কীভাবে আরও উন্নত করা যায় সেগুলোর ব্যাপারে কোনো সহযোগিতার হাত বাড়াতে হলে আমরা তা চেষ্টা করব। আপনারা যত অনুসন্ধানী হবেন এতে আমাদেরই লাভ।
বিএসইসিতে সাংবাদিক প্রবেশাধিকারে বাধার ব্যাপারে প্রশ্নের জবাবে অধ্যাপক শিবলী বলেন, অন্যান্য দেশের সিকিউরিটিজ এক্সচেঞ্জে কেউ ঢুকতে পারে কি না দেখবেন। আমাদের কমিশন আসার পর থেকেই আপনাদের (সাংবাদিক) আমরা চোখ কান নাক হিসেবে আমরা দেখি। আপনাদের বন্ধু ভাবি আমরা। আপনারা যেন ভালো করতে পারেন এগুলো আমরা সব দেখছি। দেশ বিদেশে ঘুরে আপনাদের অভিজ্ঞতা সঞ্চয় করা এগুলো সব আমরা করছি।
বিএসইসি চেয়ারম্যান বলেন, আমরা সিএমএসএফ দিয়ে যেসব অডিট করাচ্ছি এখান থেকে অনেক মজার মজার জিনিস বেরিয়ে আসছে। কোন কোম্পানি গত ৩০/৪০ বছর ধরে ডিভিডেন্ড না দিয়ে কি করেছে এগুলো সব বের করা হচ্ছে৷ আমাদের অডিটররাও অনেক মজা পাচ্ছে। এগুলো নিয়ে কাজ করে অনেক নতুন নতুন শিক্ষণীয় বিষয় বেরিয়ে আসছে।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বিএসইসি কমিশনার ড. শেখ শামসুদ্দিন আহমেদ বলেন, কোনো বিষয়ের উদ্রেক হলে প্রেস রিলিজের মাধ্যমে বিএসইসি জানিয়ে দেয়। তারপর ফেসবুক পেজে আমরা তাৎক্ষণিক সবকিছু জানিয়ে দেই৷ আমরা ডিজিটালাইজেশনে অনেক জোর দিয়েছি।
তিনি বলেন, এছাড়া আমরা আরও অনেক ধরনের কাজ করছি। চেষ্টা করবেন তথ্যগুলো এমনভাবে প্রকাশ করবেন যেন মার্কেটটাকে স্টেবল রাখতে পারে। মার্কেট যেন পজিটিভ রাখে। মার্কেটের ওপর প্রভাব ফেলে এমন কিছু করবেন না। আপনারা সাংবাদিকরা ইতিবাচক সংবাদ পরিবেশন করে আসছেন৷
বিএসইসি নির্বাহী পরিচালক সাইফুর রহমান বলেন, সিএমজেএফের সাথে আমাদের সম্পর্ক অনেক গাঢ় ও বন্ধুত্বপূর্ণ। সিএমজেএফ আজকের আজকে যে অবস্থা এতে বিএসইসির ভূমিকা রয়েছে। আমরা সব সময় সিএমজেএফের প্লাটফর্মের জন্য কাজ করেছি।
তিনি বলেন, আমরা চাই গঠনমূলক সাংবাদিকতা। আমরা এমন কোনক নিউজ করব না যেটাতে পুঁজিবাজারের ক্ষতি হয়। ৭৮ টা কোম্পানি যে জেড ক্যাটাগরিতে চলে যাচ্ছে এটা একটা গুজব। এটা আসলেই যাচ্ছে কি না এটা জেনেশুনে নিউজ করতে হবে। আপনাদের লেখনি যেন বিবেচনা প্রসুত হয় এগুলো খেয়াল রাখতে হবে। একটা নিউজ পেলেই করে দিলাম এতে মার্কেটের ওপর কীভাবে প্রভাব পড়বে এগুলো খেয়াল রাখতে হবে। সমালোচনা অবশ্যই হবে তবে সেটা যেন অবশ্যই গঠনমূলক ও বাস্তবিক হয়। আপনাদের লেখনির ধার অনেক বেশি। সেটা যেন মানুষের কষ্টের কারণ না হয় সে দিকে খেয়াল রাখতে হবে।
সিএমজেএফের বিদায়ী কমিটির সভাপতি জিয়াউর রহমান বলেন, এটি খুবই ভালো লাগার একটি দিন। খুব গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে নির্বাচন হয়েছে। সিএমজেএফে ইন্টারনাল অডিট হয়। এর মাধ্যমে আমরা গুড গভর্নেন্স পালন করে থাকি। সিএমজেএফের কাজ হল কীভাবে সাংবাদিকদের আরও ভালো প্রশিক্ষণ দেয়া যায়৷ সিএমজেএফ নানামুখী প্রশিক্ষণ দিচ্ছে সাংবাদিকদের। তথ্যের অবাধ প্রবাহ কীভাবে বাড়ানো যায় এ বিষয়ে বিএসইসির কাছে আমরা পাশে চাই। আমাদের সদস্যদের যেন বিএসইসিতে এক্সেস আরও ভালো হয় এটাও অনুরোধ করব।
সিএমজেএফের সভাপতি গোলাম সামদানী ভূইয়া বলেন, সঠিক নিউজের জন্য প্রয়োজন সঠিক তথ্য। সাংবাদিকরা বলেছেন আমরা বিএসইসিতে প্রবেশ করতে পারছি না। আমরা সাংবাদিকরা যেন নির্বিঘ্নে বিএসইসি প্রবেশ করতে পারি এই সহযোগীতা চাচ্ছি বিএসইসির কাছে।
তিনি বলেন, সিকিউরিটিজ এক্সচেঞ্জ কমিশনে প্রবেশ করে কেউ যেন তথ্য পেতে বাধায় না পরে এ বিষয়ে আমরা সহযোগিতা চাই। কেউ তথ্য দিতে না চাইলে এটা তার ব্যক্তিগত ব্যাপার। তবে বিএসইসিতে সাংবাদিকদের প্রবেশাধিকার অবাধ করার দাবি জানাই।
এ সময় বিএসইসি চেয়ারম্যান সিএমজেএফের বিদায়ী কমিটির সদস্যদের সংবর্ধনা দেন ও নতুন কমিটির সদস্যদের বরণ করে নেন।
এসকেএস