ইআরএফের বাজেট আলোনায় অর্থনীতিবিদরা
ঋণ খেলাপিরা এখন কেন্দ্রীয় ব্যাংকের উপর নজরদারী করে
সানবিডি২৪ প্রকাশ: ২০২৪-০৬-১৩ ২২:২৭:২৬
বাজেট সরকার দিলেও এটা সরকারের জন্য নয়। বাজেট হল ব্যবসা ও মানুষের জন্য। কিন্তু এই বাজেটে সরকারের জন্য অনেক থাকলেও সাধারণ মানুষের জন্য কোনো সুখবর নেই। আর বাজেটে যেসব লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে সেগুলো অর্জন করা সম্ভব না। বাজেট ঘাটতি পূরণে সরকার ব্যাংক থেকে ঋণ নিবে। ব্যাংক খাতেও বর্তমানে তারল্য সংকট চলছে। বাজেটে ব্যাংক খাত সংস্কারের কিছুই নাই। আর ঋণ খেলাপিরাই এখন ব্যাংকের বিভিন্ন বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়। তারা ব্যাংকের উপর নজরদারী করে এবং বিভিন্ন বিষয় কেন্দ্রীয় ব্যাংকের উপর চাপিয়ে দিচ্ছে। বৃহস্পতিবার ইকোনমিক রিপোর্টার্স ফোরামের (ইআরএফ) উদ্যোগে আয়োজিত ২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেট আলোচনায় বিশিষ্টজনেরা এসব কথা বলেছেন।
ইআরএফ সভাপতি মোহাম্মদ রেফায়েত উল্লাহ মীরধার সভাপতিত্বে আলোচনায় প্রধান অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ড. সালেহ উদ্দিন আহমেদ। সভায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন সিপিডির নির্বাহী পরিচালক ড. ফাহমিদা খাতুন। অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন বিআইডিএসের গবেষণা পরিচালক ড. মনজুর হোসেন, বাংলাদেশ টেক্সটাইল মিলস অ্যাসোসিয়েশনের (বিটিএমএ) সভাপত মোহাম্মদ আলী খোকন ও ইস্ট ওয়েস্ট ইউনিভার্সিটির প্রফেসর এনামুল হক। সভাটি পরিচালনা করেন ইআরএফের নির্বাহী সদস্য সাইফুল ইসলাম।
সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেন, বাজেটের আকার কতটুকু ছোট বা বড় সেটা বড় বিষয় নয়। আগামী বছর আমরা কী কী অগ্রাধিকার দিব সেটা নির্ধারণ করতে হবে। আর বাজেট সরকার দিলেও এটা কিন্তু সরকারের জন্য নয়। বাজেট হল ব্যবসা ও সাধারণ মানুষের জন্য। আগামী বছরের জন্য প্রস্তাবিত বাজেটে ব্যবসা ও মানুষের জন্য কতটুকু আছে আমি জানি না, তবে সরকারের জন্য এই বাজেটে অনেক কিছু আছে।
তিনি বলেন, এটা গতানুগতিক বাজেট। বাজেটে সুখী-সমৃদ্ধির স্লোগান আছে। কর্মসংস্থান নেই, আয়ের উৎস নেই, ব্যবসা-বাণিজ্য প্রসার লাভ করছে না। তাহলে সুখী কারা? বাজেটে গরীবদের সুখি হওয়ার মতো কিছু নেই। বড় বড় কুমড়া কারা খাচ্ছে? মানুষ ভাতের সাথে কাচা কলার ঝুল খাচ্ছে। এটাই হল সুখ। পঞ্চাশ বছর হল আমরা পতাকা, ভুখন্ড, জাতীয় সংগীত পেলেও ভেতরের পিলার নড়েবড়ে। আমাদের পিলার হল বাজার ও স্টক মার্কেট।
তিনি বলেন, এখানে কয়েকটি বিষয় খুবই গুরুত্বপূর্ণ। প্রথমত, ব্যয় যুক্তিসংগত করতে হবে। বাজেটের আকার ছোট হয়েছে ব্যয় কিন্তু কমেনি। বাজেটের অনেক বরাদ্দ আছে যেটা কোনো কাজে লাগবে না। হাসপাতাল করলে মেশিনপাতি থাকবে না, ডাক্তার থাকবে না। ব্রিজ করবে কিন্তু সেখানে রাস্তা নাই। কালভার্ট করবে কিন্ত রাস্তা নাই। স্কুল করবে ছাত্র থাকবে না। এসব প্রকল্প অহেতুক। এসব প্রকল্পই কালো টাকা সৃষ্টি করে। নতুন করে কিছু করার দরকার নাই। যেগুলো আছে সেগুলো সুসংহত করুন। তারপর এনবিআরের সংস্কার দরকার। এখানে জনবল না থাকলে জনবল দিতে হবে। এটা কঠিন কিছু না। এরপর জীবিকা ও ব্যবসা। এই বাজেটে এগুলোরও প্রত্যাশিত কিছু নাই। এছাড়া সংস্কার করতে হবে বাজার ব্যবস্থা ও ব্যাংক। আর ব্যবসা-বাণিজ্যির সুষ্ঠু পরিবেশের জন্য দেশে সামগ্রীক স্থিতিশীলতা থাকা দরকার।
সাবেক গভর্নর বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংকের যথেষ্ট ক্ষমতা আছে। সব কিছু যে তাদের উপর চেপে বসে আছে এমন না। তারা চাইলে কিছু করতে পারে।
তিনি বলেন, উন্নত দেশ, আমরা কতটুক উন্নত, ১২৫ টি দেশের মধ্যে ১০৫। পাকিস্তানও আমাদের চেয়ে ইন্টারনেটে এগিয়ে। ইন্টারনেট, মোবাইল টেলিফোন সবজায়গায় ট্যাক্স। স্পিড নেই, ব্যান্ডউইথ নেই। কিসের উন্নত-স্মার্ট বাংলাদেশ। বাজেটে কিছু প্রায়োরিটি সেট করা দরকার ছিল। মূল্যস্ফিতি, রিজার্ভ এবং…..। এই ৩টি বিষয়ে লক্ষ্য দেয়া দরকার ছিল।
সালেহউদ্দিন বলেন, সরকার ব্যাংক থেকে ১ লাখ ৩৭ হাজার কোটি টাকা লোন নিবে। এটা হলে বেসরকারি খাত ব্যবসা করতে পারবে না। পরে দেখা যাবে গুলশানের রেস্টুরেন্টগুলোতে ভির বাড়বে। ট্যাক্স আসবে কোন জায়গা থেকে? সামর্থ্যবানদের থেকে ট্যাক্স নেন। অর্থাৎ প্রত্যক্ষ কর বাড়ান। ভ্যাট বাড়ালে সবার উপর এর প্রভাব পড়ে।
সভায় সিপিডির নির্বাহী পরিচালক ড. ফাহমিদা খাতুন বলেন, গত দুই বছরে দেশের সামষ্টিক অর্থনীতি ভেঙে পড়েছে। এমন অবস্থায় আগামী অর্থ বছরের জন্য জাতীয় সংসদে উপস্থাপন করা হয়েছে। দেশে এখন ৯ শতাংশের বেশি মূল্যস্ফীতি চলমান। আর আগামী বাজেটে মূল্যস্ফীতি ধরা হয়েছে ৬ দশদিক ৫ শতাংশ। যেটা অর্জন সম্ভব নয়। কারণ এক বছর ধরে মূল্যস্ফীতি ৯ শতাংশের উপরে। আর দুই বছর ধরেই মূল্যস্ফীতি উর্ধমুখি। তারপর রয়েছে বাজার ব্যবস্থাপনা ও সিন্ডিকেট। এছাড়া ডলারের বিনিময় হার বাড়ার কারণে আমাদের আমদানি ব্যয়ও বেড়ে যাবে। এই পরিস্থিতিতে মূল্যস্ফীতি কমানোর লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করা সম্ভব নয়।
তিনি বলেন, আগামী অর্থবছরে রপ্তানি প্রবৃদ্ধি ধরা হয়েছে ৮ শতাংশ। এই বছরেও ৮ শতাংশ ছিল। এছাড়া, চলতি বছরের জুলাই-মে পর্যন্ত ১১ মাসে রপ্তানির খাতের প্রবৃদ্ধি হয়েছে মাত্র ২ শতাংশ। এক বছরে এটার লক্ষ্যমাত্রাও অর্জন সম্ভব না। একইভাবে আগামী অর্থবছরে আমদানির প্রবৃদ্ধি ধরা হয়েছে ১০ শতাংশ। কিন্তু গত বছরের জুলাই থেকে চলতি বছরের মে পর্যন্ত যেটা ১৫ দশমিক ৪ শতাংশ নেতিবাচক প্রবৃদ্ধি। এটাও ১০ শতাংশ প্রবৃদ্ধিতে পৌঁছানো সম্ভব নয়।
সিপিডির নির্বাহী পরিচালক আরও বলেন, আগামী বছরে রিজার্ভ ৩২ বিলিয়নে নেয়ার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। বর্তমানে যেটা (গ্রস) ২৪ দশমিক ২ বিলিয়নে আছে। এটাও কীভাবে আসবে? কারণ রপ্তানি নেতিবাচক দিকে যাচ্ছে। আর রেমিট্যান্সও খুব ভাল না। নিচের দিকে যাচ্ছে। তারপর ডলারের বিনিময় হার যেটা গত ৫ জুনের হিসাবে ১১৭ দশমিক ৯ টাকা। সেটাকে আগামী বছরে ১১৪ টাকা করার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। এটা হলে রিজার্ভ কীভাবে বাড়বে? দেখা যাচ্ছে প্রতিটি জায়গায় কোনো সাজোজ্য নাই। এই রকম একটা অবস্থা।
তিনি বলেন, আমাদের আর্থিক খাতের আরেকটা দুর্বল দিক হচ্ছে ঋণ নির্ভরতা। দিন দিন আমাদের দায় দেনা বাড়ছে। ২০২৫ সালে আমাদের ঋণ দাঁড়াবে ৩৮ দশমিক ৬ শতাংশে। এই বছরে ৩৭ দশমিক ৭ শতাংশ এটাও বাড়তে থাকবে। আর ঋণ শুধু বৈদেশিক ঋণ নয়, অভ্যন্তরীণ ঋণও আছে।
তিনি বলেন, বাজেট ঘাটতি পূরণে সরকার ব্যাংক থেকে ঋণ নিবে। সরকারের ব্যাংক নির্ভরতার কারণে ব্যক্তি খাত চাপে পড়বে। আর ইতিমধ্যেই আমরা দেখছি যে ব্যাংকিং খাতে তারল্যের সংকট রয়েছে। তারল্য সংকট থাকলে প্রতিযোগিতা করে সুদের হার নির্ধারণ করার সুযোগ থাকে না। সংকোচনমূলক মুদ্রানীতির কারণে সুদের হার বেড়ে গেছে। এতে ব্যক্তি খাতের উদ্যোক্তারা কিন্তু চাপে পড়েছে। আর বিদেশ থেকে যে সাহায্যের কথা বলা হচ্ছে-প্রজেক্টগুলো বাস্তবায়ন না হলে কিন্তু বিদেশ থেকেও টাকা আসবে না। প্রকল্প বাস্তবায়নের উপরও কিন্তু বিদেশি অর্থ ছাড়ের বিষয়টি নির্ভর করে।
ড. ফাহমিদা বলেন, বাজেটের আকার ছোট করা হয়েছে। কিন্তু এখানে উন্নয়ন ব্যয়টা আরও কাটছাট করার সুযোগ ছিল। আর দুইটি খাত যথা জনসেবা ও সুদহার বাজেটের বড় অংশ নিয়ে যাচ্ছে। দুইটি খাতই কিন্তু অনুৎপাদনশীল খাত। এখানে যে কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে বা অর্থনীতিতে চাঞ্চচল্য সৃষ্ট হবে সেটা কিন্তু না।
তিনি বলেন, দেশে অনেক দুর্বল প্রতিষ্ঠান আছে। এই বাজেটে প্রাতিষ্ঠানিক সংস্কারের কোনো উদ্যোগ নাই। যেমন আমাদের ব্যাংকিং খাতে একটা দৈন্য দশা ও রাজস্ব আহরণে একটা দুর্বলতা ও আমাদের প্রকল্প বাস্তবায়নে দুর্বলতা আছে। কিন্তু এই বাজেটে এগুলো সংস্কারের জন্য কিছুই দেখলাম না।
ব্যাংকিং খাত নিয়ে তিনি বলেন, বাজেটে তিন পৃষ্ঠায় ব্যাংকিং খাত নিয়ে বলা হয়েছে কিন্তু এটার সংস্কার নিয়ে কিছুই বলা হয়নি। যদি একটি খাতকে ধরতে হয় তাহলে সেটা হচ্ছে ব্যাংকিং খাত। যেটা খাদের কিনারায় এসে দাঁড়িয়েছে। খেলাপি ঋণ নিয়ে তারা এখন গর্ব করে। ঋণ ফেরত দিবে না, কর দিয়ে কালো টাকা সাদা করবে-এটা একটা নীতি নৈতিকতাহীন কালচারে পরিণত হয়েছে। যারা ঋণ খেলাপি তারাই ব্যাংকের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়। তারাই কেন্দ্রীয় ব্যাংকের উপর নজরদারী করে এবং বিভিন্ন বিষয় চাপিয়ে দিচ্ছে।
সিপিডির নির্বাহী পরিচালক আরও বলেন, প্রজেক্ট যখন টাইম ওভাররান হয়ে যায় তখন কস্ট ওভাররান হয়। এই বাজাটে সেগুলো কমে এসেছে। ২০২৫ সালে ৬টি মেগা প্রকল্প বাস্তবায়ন করার কথা। কিন্তু এগুলোর বর্তমান যে বাস্তবায়ন হার তাতে এই বছরে সেটা সম্ভব না। করমুক্ত আয়সীমা মূল্যস্ফীতির বিষয়টি মাথায় রেখে বাড়ানো দরকার ছিল। কর সর্বোচ্চ ৩০ শতাংশ। এই ব্যবস্থাপনা দিয়ে সীমিত আয়ের মানুষের সমস্যা লাঘব হবে না। কালো টাকা ১৫ শতাংশ কর দিয়ে সাদা করার সুযোগ দেয়া হয়েছে এবং এ বিষয়ে কোন প্রশ্ন করা যাবে না। এটা দিয়ে সৎ কর দাতাকে নিরুৎসাহিত করা হচ্ছে। তারাও মনে করবে, কিছুদিন অপেক্ষা করলে সেও ১৫ শতাংশ কর দিতে পারবে।
সভায় বিটিএমইএ’র সভাপতি মোহাম্মদ আলী খোকন বলেন, আমরা যতই বাজেট আলোচনা করি সেটা এনবিআরের দরজা ক্রস করে ভেতরে প্রবেশ করবে না। এনবিআর যেটা বলে সেটাই হয়। এনবিআর যা আয় করে সেটা পরিচালন ব্যয়েই চলে যায়।
তিনি বলেন, ব্যাংক আপনার কাছ থেকে টাকা নিয়ে সরকারের বন্ড কিনে। একটি ব্যাংকের ৬০ শতাংশ টাকা ৬ জন ব্যাক্তির কাছে আবদ্ধ আর অথচ ৪০ শতাংশ সব জনগণের। সেই ব্যাংকের এমডির ৫ বার পুন:নিয়োগ হয় কিভাবে?
সভায় ইস্ট ওয়েস্ট ইউনিভার্সিটির শিক্ষক প্রফেসর ড. এ কে এম এনামুল হক বলেন, আমরা বাজেট থেকে বিশাল কিছু আশা করতে পারি না। বাজেটে ইনস্টেবিলিটি, চ্যালেঞ্জগুলো এড্রেস করা দরকার ছিল। বাজেটের ১৫ শতাংশ সেলারিতে চলে যায়। সরকারের আয়ে স্মার্টনেস আসা দরকার ছিল।
মধ্যম আয়ের দেশ মানে সার্ভিস সেক্টর ইকনোমি। মধ্যম আয়ের দেশের আরেকটি বিষয় আরবান সার্ভিসেস। বিদ্যুৎ খাতে প্রচুর খরচ বেড়েছে। বিদ্যুৎ ও গ্যাস খাতকে ৩য় চোখ দিয়ে দেখা প্রয়োজন আছে। এগুলো ভর্তুকি কি দরকার কিনা? আমাদের কোনো শিল্পমন্ত্রী নেই। দেশের শিল্পের দেখাশোনা করার জন্য কোনো মন্ত্রণালয় নেই। একজন শিল্পমন্ত্রী আছেন তিনি সরকারি শিল্পকারখানা দেখেন। বাণিজ্য মন্ত্রণালয় আছে, সেখানকার মন্ত্রী বেসরকারি ব্যবসা-বাণিজ্য দেখেন। দেশের শিল্প দেখবে এমন মন্ত্রণালয় দেশে নেই।
তিনি বলেন, যত ধনী লোক আছে সবাই বিদেশে চলে যেতে চায়। শিক্ষার্থীরা দেশের বাইরে যাওয়ার স্বপ্ন দেখে। বাংলাদেশে ব্যবসা করে বিদেশে গিয়ে সেরা ধনী লোক হয়ে বসে আছে। তার মানে হলো, তারাও দেশে থাকতে চাইছে না। এটা রোধ করতে হলে অর্থনীতিকে রিফর্ম করতে হবে। অর্থনীতিকে রিফর্ম না করলে অর্থনীতি মুখ থুবড়ে পড়বে।
তিনি বলেন, বৈদেশিক বিনিয়োগের কথা বলা হচ্ছে। কিন্তু বিনিয়োগ আকর্ষণ করার জন্য এখন বৈদেশিক মুদ্রার সঞ্চায়ন নিশ্চিত করতে হবে। বিনিয়োগকারীরা মুনাফা যদি বিদেশে না নিয়ে যেতে পারে তাহলে তারা বিনিয়োগ করবে না।
ব্যাংক এখন কাজ করছে না উল্লেখ করে তিনি বলেন, ব্যাংক এখন কয়েকজন মানুষের হাতের মুঠোয়। ব্যাংক খেলাপি নামের যে শব্দগুলো শুনছেন এগুলো গৎবাঁধা শব্দ। এগুলোর কোনো পরিবর্তন হবে না, যতক্ষণ না ব্যাংকিং খ্যাত রিফর্ম না হয়। ব্যাংক থেকে টাকা নেওয়া হয় ব্যবসা করার জন্য। এখন যেটা হচ্ছে, ব্যাংক থেকে টাকা নিয়ে ব্যাংক কিনে ফেলছে। এই অবস্থায় বিনিয়োগ আশা করা যায় না। নতুন অর্থমন্ত্রী হয়েছেন, আশা করেছিলাম এই বিষয়গুলো সম্পর্কে দিক-নির্দেশনা থাকবে। কিন্তু সেটা পাওয়া যায়নি।
সভায় জ্বালানি বিশেষজ্ঞ মঞ্জুরুল ইসলাম বলেন, সংকোচনমূলক মুদ্রানীতি গ্রহণ করা হয়েছে কিন্তু ফল পেতে দেরি হবে। কারণ আমাদের আর্থিক খাত ততটা শক্তিশালী নয়। এই নীতিতে অন্তত ৬ মাস চালিয়ে যেতে হবে। সংকোচনমূলক মুদ্রা নীতি ও ঘাটতি কমাতে ভর্তুকি কমিয়ে আনা এটা কখন করতে হবে সেটাও একটা বিষয়। প্রতিমাসে জ্বালানি দাম বাড়ানোর মেসেজ যখন জনগণের কাছে যায় তখন মুল্যস্ফীতিতেও এর একটা প্রভাব পড়ে। শুধু দাম বাড়িয়ে এনার্জি ভর্তুকি কমিয়ে আনা সম্ভব না। এক্সচেঞ্জ রেট না বাড়ালে রিজার্ভ বাড়ানো সম্ভব হবে না।
তিনি বলেন, ব্যাংক ধার নিয়ে কতটা সম্ভব? ব্যাংক খাতের সুশাসন না আসলে ব্যাংক খাত থেকে বড় কিছু আশা করা যাবে না। এই ব্যাংকিং সেক্টর দিয়ে আমরা কি মধ্যম আয়ের দেশে যেতে পারবো? ব্যাংক কমিশন দরকার। এই বছরটা প্রবৃদ্ধির বছর নয়, স্থিতিশীলতার বছর।